ফাইল ছবি 

মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী :

ঘুষের টাকা সহ র‍্যাব কর্তৃক ধৃত কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের ভূমি হুকুম দখল শাখার সার্ভেয়ার ওয়াসিম যে অপরাধ করেছে, তা সার্ভেয়ার ওয়াসিমের ব্যক্তিগত দায় ও অপরাধ। কক্সবাজার জেলা প্রশাসন একটি প্রতিষ্ঠান। তার এ অপরাধের জন্য প্রতিষ্ঠান কোনভাবেই দায় নেবেনা।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের ভূমি হুকুম দখল শাখার সার্ভেয়ার ওয়াসিমকে ঘুষের টাকা সহ র‍্যাব কর্তৃক ধৃত হওয়ার চাঞ্চল্যকর ঘটনার পর এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের কর্ণধার জেলা প্রশাসক মোঃ কামাল হোসেন সিবিএন-কে একথা বলেন। তিনি আরো বলেন, সর্বোচ্চ সর্তকতা, জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা রক্ষা করে ভূমি হুকুম দখল বিষয়ক ক্ষতিপূরণের চেক গুলো আনুষ্ঠানিক ভাবে চেক গ্রহীতার নিজের হাতেই প্রদান করা হয়। চেক বিতরণের সময় চেক গ্রহীতার কাছ থেকে প্রকাশ্যে জানতে চাওয়া হয়, প্রশাসনের যে কোন পর্যায়ে কারো সাথে কোন অনৈতিক লেনদেন করেছেন কিনা। এ পর্যায়ে চেক গ্রহীতার কোন অভিযোগ না থাকলে জেলা প্রশাসনের আর করার কিছু থাকেনা। এ অবস্থায় ক্ষতিপূরণের চেক গ্রহীতা স্বেচ্ছায় কারো সাথে কোন অনৈতিক লেনদেন করলে, সেটা চেক গ্রহীতা নিজের দায় দায়িত্বেই করেছে। জেলা প্রশাসনের কোন কর্মকর্তা-কর্মচারীর সাথে এ জাতীয় অনৈতিক লেনদেনের কোন সম্পর্ক নেই। বরং আইন অনুযায়ী ঘুষ দাতাও ঘুষ গ্রহীতার মতো অপরাধী।

জেলা প্রশাসক মোঃ কামাল হোসেন সিবিএন-কে আরো বলেন, আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর দায়িত্বশীলেরা ঘুষের টাকা সহ র‍্যাব কর্তৃক ধৃত কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের ভূমি হুকুম দখল শাখার সার্ভেয়ার ওয়াসিম, বাসা থেকে টাকা উদ্ধারকৃত সার্ভেয়ার ফেরদৌস ও সার্ভেয়ার ফরিদের বিষয়ে আন অফিসিয়ালি কক্সবাজার জেলা প্রশাসন থেকে জানতে চেয়েছিলো। তিনি দৃঢ়তার সাথে বলেন, অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনী প্রক্রিয়ায় ব্যবস্থা নিতে সুস্পষ্টভাবে তাদের বলে দেওয়া হয়েছে। মামলা হলে এবং লিখিত অভিযোগ পাওয়ার সাথে সাথেই আইন অনুযায়ী তাদের চাকুরী থেকে সাময়িক ভাবে বরখাস্ত, অন্যান্য আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে। কক্সবাজার জেলা প্রশাসন এ বিষয়ে বিন্দু পরিমানও শৈথিল্য প্রদর্শন করবে না।

প্রসংগত, ঘুষের টাকা সহ র‍্যাব-১৫ কর্তৃক কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের ভূমি হুকুম দখল শাখার সার্ভেয়ার ওয়াসিমকে শহরের বাহারছরা বাসা থেকে ৬ লাখ নগদ টাকা সহ ধৃত, একই শাখার সার্ভেয়ার ফেরদৌসের তারাবনিয়ার ছরা বাসা থেকে ২৭ লাখ ঘুষের অর্থ ও সার্ভেয়ার ফরিদের বাহারছরার বাসা থেকে ৬০ লাখ ৮০ হাজার ঘুষের টাকা উদ্ধার করা হয়। বুধবার ১৯ ফেব্রুয়ারী বিকেলে র‍্যাব-১৫ এর অধিনায়ক মেজর মেহেদী হাসানের নেতৃত্বে পৃথক ৩ টি অভিযানে প্রায় ৯৪ লক্ষ ঘুষের টাকা উদ্ধার ও সার্ভেয়ার ফেরদৌসকে হাতেনাতে আটক করা হয়। এ বিষয়ে জব্দ তালিকা তৈরী করে সার্ভেয়ার ফেরদৌসকে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় সোপর্দ করার প্রস্তুতি চলছে বলে র‍্যাব-১৫ এর একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা সিবিএন-কে জানিয়েছেন। বাসা থেকে ঘুষের টাকা উদ্ধারের পর সার্ভেয়ার ফেরদৌস ও সার্ভেয়ার ফরিদ পলাতক রয়েছে বলে সিবিএন-কে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী নিশ্চিত করেছেন।