এ বছর জেএসসি থেকেই

কালেরকন্ঠ :

পাবলিক পরীক্ষার ফলাফল জিপিএ ৫-এর পরিবর্তে জিপিএ ৪-এ প্রকাশ করতে গ্রেডিং বিন্যাস চূড়ান্ত করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, ঢাকা। ওই চূড়ান্ত প্রস্তাব সম্প্রতি তারা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছে। এখন শিক্ষা মন্ত্রণালয় তা গেজেট আকারে প্রকাশ করবে বলে জানা গেছে।

মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) এবং ২০২১ সাল থেকে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার ফল জিপিএ ৫-এর পরিবর্তে জিপিএ ৪-এ প্রকাশ করতে চায় সরকার। এ লক্ষ্যে গত বছরের মাঝামাঝি থেকে কাজ শুরু করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। আন্তর্জাতিক শিক্ষা ব্যবস্থার সঙ্গে মিল রেখে জিপিএ ৪-এর গ্রেডিং বিন্যাস চূড়ান্ত করতে দায়িত্ব দেওয়া হয় ঢাকা শিক্ষা বোর্ডকে।

চূড়ান্ত গ্রেডবিন্যাসে দেখা যায়, ৯০ থেকে ১০০ নম্বর প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের লেটার গ্রেড ‘এ প্লাস’ ও গ্রেড পয়েন্ট হবে ৪, যা সর্বোচ্চ ফল। এরপর ৮০ থেকে ৮৯ নম্বর প্রাপ্তদের লেটার গ্রেড ‘এ’ ও গ্রেড পয়েন্ট ৩.৫, ৭০ থেকে ৭৯ নম্বর প্রাপ্তদের লেটার গ্রেড ‘বি প্লাস’ ও গ্রেড পয়েন্ট ৩, ৬০ থেকে ৬৯ নম্বর প্রাপ্তদের লেটার গ্রেড ‘বি’ ও গ্রেড পয়েন্ট ২.৫, ৫০ থেকে ৫৯ নম্বর প্রাপ্তদের লেটার গ্রেড ‘সি প্লাস’ ও গ্রেড পয়েন্ট ২, ৪০ থেকে ৪৯ প্রাপ্তদের লেটার গ্রেড ‘সি’ ও গ্রেড পয়েন্ট ১.৫, ৩৩ থেকে ৩৯ প্রাপ্তদের লেটার গ্রেড ‘ডি’ ও গ্রেড পয়েন্ট হবে ১ এবং শূন্য থেকে ৩২ প্রাপ্তদের লেটার গ্রেড ‘এফ’ ও গ্রেড পয়েন্ট হবে শূন্য।

জানা যায়, ঢাকা শিক্ষা বোর্ড প্রথমে তিনটি ভিন্ন গ্রেডবিন্যাস তৈরি করেছিল। এরপর গত বছরের ৮ সেপ্টেম্বর ও ৬ ডিসেম্বর দুটি ভিন্ন কর্মশালার আয়োজন করে। এতে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনিও উপস্থিত ছিলেন। নানা গবেষণা ও বিচার-বিশ্লেষণ করে একটি গ্রেডবিন্যাস চূড়ান্ত করা হয়।

আন্ত শিক্ষা বোর্ডের সভাপতি ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মু. জিয়াউল হক কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমরা চূড়ান্ত প্রস্তাব শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। আশা করছি, শিগগিরই তা গেজেট আকারে প্রকাশ করা হবে। যেহেতু আগামী জেএসসি থেকেই এই গ্রেড কার্যকর হওয়ার কথা, তাই গেজেট হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা তা প্রচার করে শিক্ষার্থীদের জানিয়ে দেব।’

বর্তমানে দেশে পাবলিক পরীক্ষায় জিপিএ ৫-এ ফলাফল প্রকাশ করা হয়। কিন্তু পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ফলাফল প্রকাশ করা হয় সিজিপিএ ৪-এর মধ্যে। আর বিশ্বের অন্যান্য দেশে সব ধরনের ফলাফলই প্রকাশ করা হয় জিপিএ ৪-এ। ফলে এসএসসি আর এইচএসসির ফলাফলের সঙ্গে উচ্চতর শিক্ষার ফলাফলের সমন্বয় করতে গিয়ে দেশের চাকরিদাতারাই সমস্যায় পড়েন। আবার বিদেশে পড়ালেখা করতে গিয়েও সমস্যায় পড়েন বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা। তাই সব দিক বিবেচনা করে সব ধরনের ফলাফল জিপিএ ৪-এ প্রকাশ করার সিদ্ধান্ত নেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয় গ্রেডিং চূড়ান্ত করলে প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায়ও একই গ্রেডিংয়ে ফলাফল প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।

বাংলাদেশে পাবলিক পরীক্ষায় গ্রেড পদ্ধতি চালু হয় ২০০১ সালে। সেখানে ৮০ থেকে ১০০ নম্বর প্রাপ্তদের লেটার গ্রেড ‘এ প্লাস’ ও গ্রেড পয়েন্ট ৫। এটাই সর্বোচ্চ গ্রেড। এরপর ৭০ থেকে ৭৯ নম্বর প্রাপ্তদের লেটার গ্রেড ‘এ’ ও গ্রেড পয়েন্ট ৪, ৬০ থেকে ৬৯ নম্বর প্রাপ্তদের লেটার গ্রেড ‘এ মাইনাস’ ও গ্রেড পয়েন্ট ৩.৫০, ৫০ থেকে ৫৯ নম্বর প্রাপ্তদের লেটার গ্রেড ‘বি’ ও গ্রেড পয়েন্ট ৩, ৪০ থেকে ৪৯ নম্বর প্রাপ্তদের লেটার গ্রেড ‘সি’ ও গ্রেড পয়েন্ট ২, ৩৩ থেকে ৩৯ নম্বর প্রাপ্তদের লেটার গ্রেড ‘ডি’ ও গ্রেড পয়েন্ট ১ এবং শূন্য থেকে ৩২ পাওয়া শিক্ষার্থীদের লেটার গ্রেড ‘এফ’ ও গ্রেড পয়েন্ট হবে শূন্য।