নিজস্ব প্রতিবেদক:

মহেশখালী উপজেলার হোয়ানক ইউনিয়নের পূর্ব হরিয়াছড়া গ্রামে বিপুল মানুষের বসবাস রয়েছে। বহুবছর ধরে সেখানে জনবসতি চলে আসছে। কিন্তু শিক্ষাসহ সামগ্রিকভাবে আধুনিক এই জীবনধারায় গ্রামটি এখনো অন্ধকারে রয়ে গেছে। এতে গ্রামটি অনুন্নতই রয়ে গেছে। তার একমাত্র কারণ ওই বিশাল এলাকাটিতে বহু বছর ধরে রয়েছে শিক্ষাবঞ্চিত। ওই এলাকায় কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান না থাকায় এই প্রতিবন্ধকতা! তবে এবার এই অন্ধকার যুগ থেকে আলোর জগতে যাত্রা করেছে পূর্বহরিয়ারছড়াবাসী। কারণ সেখানে বেসরকারি একটি প্রাথমিক বিদ্যায় গড়ে উঠেছে। স্থানীয় কয়েকজন জনহিতৈষী মানুষ এই বিদ্যালয়টি গড়ে তুলেছেন।

জানা গেছে, ২০০৭ সালে স্থানীয় কয়েকজন সমাজসেবীর প্রচেষ্টায় বেসরকারি উদ্যোগে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠান করা হলেও তা যথাযথভাবে পরিচালনা করা সম্ভব হচ্ছে না। কারণ ওই বিদ্যালয়ের বিপুল শিক্ষার্থী রয়েছে। তাদের পাঠদানের ভবনসহ কোনো ধরণের সরঞ্জাম নেই পর্যাপ্ত। এমনকি বইয়ের সংকট রয়েছে। তাই বিদ্যালয়টি সরকারি সহযোগিতার আওতায় আনা এখন সময়ের দাবি। তবে না আসা পর্যন্ত বিদ্যালয়টিকে পৃষ্টপোষকতায় জনপ্রতিনিধি, বিত্তবানসহ সর্বস্তরের মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে- এমনটি বলছেন সচেততন লোকজন।

এই বিদ্যালয়ের শিক্ষক মোহাম্মদ রাসেল জানান, বিদ্যালয়ে বর্তমানে তিন শতাধিক ছাত্রছাত্রী রয়েছে। কিন্তু বসার জন্য পর্যাপ্ত কক্ষ ও বেঞ্চ নেই। নেই প্রয়োজনীয় সংখ্যক শিক্ষক। যে ঘরটি রয়েছে তারও জরাজীর্ণ। পর্যাপ্ত চেয়ার-টেবিল না থাকায় মাটিতে বসেই পাঠদান করানো হচ্ছে। শুধুমাত্র ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা বেঞ্চে বসার সুযোগ পায়। বাকীরা সবাই মাটিতে ত্রিপল বিছিয়ে পাঠদান দেয়া হচ্ছে।

বিভিন্ন সময় ফেসবুকে বিদ্যালয়টি এই জীর্ণদশার চিত্র উঠে এসেছে। তা দেখে কিছু শিক্ষাপ্রেমী মানুষ সহযোগিতার হাত বাড়াচ্ছে। তার অংশ হিসেবে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বইসহ শিক্ষা সামগ্রী উপহার দিয়েছেন কয়েকজন ব্যক্তি।

বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি নূরুল আবছার বলেন, ‘এই আধুনিক যুগে বিপুল মানুষ শিক্ষা বঞ্চিত থাকায় বহু কষ্টে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেছি। সরকারি সহযোগিতা ছাড়া আমাদের পক্ষে এতোগুলো শিক্ষার্থীর ভার নেয়া সম্ভব না। আমরা এমপি ও উপজেলা চেয়ারম্যানের কাছে সহযোগিতার জন্য আবেদন দিয়েছি। তারা সরঞ্জাম দেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমরা বিদ্যালয়টি সরকারি করণের জন্য প্রশাসনের কাছে আহ্বান জানাচ্ছি। যতক্ষণ তা হবে না ততক্ষণ পর্যন্ত বিদ্যালয়টি সুষ্ঠুভাবে চালিয়ে নেয়ার জন্য সর্বসাধারাণের সহযোগিতা কামনা করছি।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মহেশখালী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবু নোমান মোহাম্মদ আবদুল্লাহ বলেন,‘বেসরকারি হওয়ায় ওই বিদ্যালয়ের জন্য আমাদের করার আপাতত করার কিছু। তবে উপজেলা পরিষদ ও উপজেলা প্রশাসন থেকে বরাদ্দ পাওয়ার সুযোগ রয়েছে। তাদের কাছে আবেদন করলে সহযোগিতা পাওয়া যাবে।’