মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী :

অবশেষে অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে চূড়ান্ত নিয়োগের ২ মাসের মাথায় কক্সবাজার জেলা সহ সারাদেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১৮১৪৭ সহকারী শিক্ষকের পদায়ন হচ্ছে। আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি সহকারী শিক্ষকদের এই পদায়ন আদেশ জারি করা হবে।

বুধবার ১৩ ফেব্রুয়ারী প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিদ্যালয়-২ শাখার উপসচিব জাহানারা রহমান স্বাক্ষরিত ৫১ নম্বর স্মারকে জারীকৃত এক অফিস আদেশে বিষয়টি জানানো হয়েছে।

এর আগে গত ১৩ জানুয়ারি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে এক অফিস আদেশে ১৬ ফেব্রুয়ারি নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকগণকে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে যোগদান, ১৭ হতে ১৯ ফেব্রুয়ারি ওরিয়েন্টশেন কোর্স, ১৯ ফেব্রুয়ারি পদায়ন আদেশ জারির কথা বলা হয়েছিল।

এর আগে ১৬ ফেব্রুয়ারি চুড়ান্ত নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকগণকে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে যোগদান করতে হবে।

এদিকে আগামী ১৭-১৯ ফেব্রুয়ারি নিয়োগকৃত এসব সহকারী শিক্ষকদের ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রাম অনুষ্ঠিত হবে। জেলা পর্যায়ে আয়োজিত এসব প্রোগ্রামে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব/ উপসচিব/যুগ্ন সচিব পর্যায়ের ১৮ জন কর্মকর্তা ‘ওয়ান ডে ওয়ান ওয়ার্ড, এসডিজি-৪’ অর্জনে প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়নে করণীয় বিষয়ে এসব শিক্ষকদের নির্দেশনা প্রদান করা হবে। কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম জেলায় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিদ্যালয়-২ শাখার উপসচিব জাহানারা রহমানকে ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রামের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

প্রসঙ্গত, কক্সবাজার জোলায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার চূড়ান্ত ফলাফলে উত্তীর্ণদের নিয়োগ ৬ মাসের জন্য স্থগিত করেছিলেন হাইকোর্ট। কক্সবাজারের মহেশখালীর উপজেলার বাসিন্দা জুবলি ইয়াসমিন শান্তাসহ ৩ জন সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার পরীক্ষার্থী কোটা অনুসরণ না করার অভিযোগ এনে করা এ রিট আবেদনের শুনানি শেষে গত ২৬ জানুয়ারি বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি মো. মাহমুদ হাসান তালুকদারের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দিয়েছিলেন। পরে রীটের বিষয়ের রাষ্ট্রপক্ষের জবাবের পর হাইকোর্টের এই স্থগিতাদেশ বাতিল করে আদেশ দেন সুপ্রিম কোর্টের আপীল বিভাগ। ফলে সারাদেশের মতো কক্সবাজারেও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগের আইনী জটিলতা নিরসন হয়।

প্রসঙ্গতঃ ২০১৯ সালের ৩০ জুলাই সহকারী শিক্ষক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। পরে ওই বছরের ১ থেকে ৩০ আগস্ট পর্যন্ত সারাদেশ থেকে ২৪ লাখ পাঁচজন প্রার্থী আবেদন করেন। প্রথম ধাপে ২৪ মে, দ্বিতীয় ধাপে ৩১ মে, তৃতীয় ধাপে ২১ জুন এবং চতুর্থ ধাপে ২৮ জুন লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।

সেপ্টেম্বরে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ লিখিত পরীক্ষায় ৫৫ হাজার ২৯৫ জন পাস করেন। গত ৬ অক্টোবর থেকে নিয়োগ পরীক্ষার মৌখিক পরীক্ষা শুরু হয়। মাসব্যাপী সারাদেশের সব জেলায় মৌখিক পরীক্ষা আয়োজন করা হয়। এ পরীক্ষায় ৬১ জেলায় ১৮ হাজার ১৪৭ জন চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত হন।