ফাইল ছবি

কক্সবাজারে পরীক্ষার্থী ২৮২১৫

মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী :

মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হচ্ছে কাল সোমবার ৩ ফেব্রুয়ারী থেকে। এ বছর এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড এবং মাদরাসা ও কারিগরি বোর্ডের আওতায় এই পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে ২০ লাখ ৪৭ হাজার ৭৭৯ জন শিক্ষার্থী।

পরীক্ষা প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে। বিকেলে পরীক্ষা হবে দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। এদিকে বিদেশের আটটি পরীক্ষা কেন্দ্রে পরীক্ষা দেবে ৩৪২ জন।

চলতি বছর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও পরীক্ষা কেন্দ্র বৃদ্ধি পেলেও বাড়েনি শিক্ষার্থীর সংখ্যা। গতবারের চেয়ে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা কমেছে ৮৭ হাজার ৫৫৪ জন। এবার ২৮ হাজার ৮৮৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা তিন হাজার ৫১২টি কেন্দ্রে পরীক্ষা দেবে।

নয়টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের আওতায় এবারের এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেবে ১৬ লাখ ৩৫ হাজার ২৪০ জন। যার মধ্যে ছাত্রী আট লাখ ৪৩ হাজার ৩২২ জন। ছাত্রের তুলনায় ৫১ হাজার ৪০৪ জন ছাত্রী বেশি।

মাদরাসা বোর্ডের দাখিল পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে দুই লাখ ৮১ হাজার ২৫৪ জন। ছাত্রী অংশ নিচ্ছে এক লাখ ৪৭ হাজার ১১৬ জন। ছাত্রের তুলনায় ১২ হাজার ৯৭৮ জন বেশি। কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের এসএসসি ভোকেশনাল পরীক্ষায় এক লাখ ৩১ হাজার ২৮৫ জন শিক্ষার্থী অংশ নিচ্ছে।

এবার কক্সবাজারে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ২৮২১৫ জন। জেলার মোট ৪৬ টি পরীক্ষা কেন্দ্রে এসব পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষায় অংশ নেবেন। কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের শিক্ষা শাখা সুত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

জেলার মোট ৪৬ টি পরীক্ষা কেন্দ্রের মধ্যে এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্র ২৭ টি, দাখিল পরীক্ষা কেন্দ্র ১৩ টি এবং এসএসসি (কারিগরি/ভেকেশনাল) পরীক্ষা কেন্দ্র ৬ টি। তারমধ্যে, এসএসসি পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ২০৬৮৩ জন। দাখিল পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৬৫৪৮ জন। এসএসসি (কারিগরি/ভেকেশনাল) পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৯৮৪ জন।

পরীক্ষা কেন্দ্র ভিত্তিক এসএসসি পরীক্ষার্থীর সংখ্যা হলো-কক্সবাজার সদর উপজেলার (১) সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ে ৬১৪ জন, (২) ঈদগাহ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে ৬২৫ জন, (৩) কক্সবাজার সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ৮৯৯ জন, (৪) জাহানারা ইসলাম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, ঈদগাহতে ৬০১ জন, (৫) কক্সবাজার মডেল হাইস্কুলে ৯৪৫ জন, (৬) খুরুস্কুল উচ্চ বিদ্যালয়ে ৭৪৮ জন।
রামু উপজেলার (৭) রামু সরকারি খিজারী মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ে ৭৩৩ জন, (৮) রামু বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ৫৮৮ জন।
চকরিয়া উপজেলার (৯) চকরিয়া সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ে ১৩৮৩ জন, (১০) চকরিয়া সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ১৩৬৮ জন, (১১) ইলিশিয়া জমিলা বেগম উচ্চ বিদ্যালয়ে ৪৭০ জন, (১২) চকরিয়া কোরক বিদ্যাপীঠে ২২৫৬ জন। যে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা জেলার সর্বোচ্চ।
কুতুবদিয়া উপজেলার

(১৩) কুতুবদিয়া সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ৪১৬ জন, (১৪) ধুরুং আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে ৪৯৪ জন, (১৫) কুতুবদিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় ৫৪৭ জন।

মহেশখালী উপজেলার (১৬) মহেশখালী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ৬৩৩ জন, (১৭) কালামারছড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে ৮৩৮ জন, মাতারবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ে ৪৯৪ জন, (১৮) মাতারবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ে ৪৯৪ জন, (১৯) বড় মহেশখালী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ৩০৭ জন।

উখিয়া উপজেলার (২০) উখিয়া সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় ৯৬৯ জন, (২১) উখিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ১০৪০ জন, (২২) পালং আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে ৮২৩ জন।
টেকনাফ উপজেলার (২৩) টেকনাফ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে ৪২২ জন, (২৪) আলী আছিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে ৪৭৪ জন, (২৫) এজাহার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ৫৬৪ জন।
পেকুয়া উপজেলার (২৬) পেকুয়া জিএমসি ইনস্টিটিউশনে ৫৪৮ জন, (২৭) পেকুয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ৮৮৪ জন। জেলার মোট ২৭ টি এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্রে মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ২০৬৮৩ জন।

জেলার দাখিল পরীক্ষার্থীর সংখ্যা কক্সবাজার সদর উপজেলার (১) ইসলামিয়া মহিলা কামিল মাদ্রাসায় ৪৮১ জন, (২) কক্সবাজার আদর্শ মহিলা কামিল মাদ্রাসায় ৫৩২ জন, (৩) ঈদগাহ আলমাসিয়া মাদ্রাসায় ৬১৮ জন। রামু উপজেলার (৪) মেরুংলয়া রহমানিয়া ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসায় ৩৮২ জন, (৫) গর্জনিয়া ফয়জুল উলুম মাদ্রাসায় ১৫১ জন। চকরিয়া উপজেলার (৬) আনোয়ারুল উলুম ফাজিল মাদ্রাসায় ১০২৮ জন, (৭) চকরিয়া আমজাদিয়া রফিকুল উলুম ৪৫০ জন।
মহেশখালী উপজেলার (৮) পুটিবিলা ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসায় ৫৩৫ জন, (৯) কালারমার ছরা মঈনুল ইসলাম আলিম মাদ্রাসায় ৩৯৩ জন। পেকুয়া উপজেলার একমাত্র কেন্দ্র (১০) পেকুয়া আনোয়ারুল উলুম আলিম মাদ্রাসায় ৪৬১ জন।
কুতুবদিয়া উপজেলার একমাত্র কেন্দ্র (১১) কুতুবদিয়া বড়ঘোপ ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসায় ৩৮৯ জন। টেকনাফ উপজেলার একমাত্র কেন্দ্র (১২) রঙ্গিখালী দারুল উলুম ফাজিল মাদ্রাসায় ৬১৬ জন। উখিয়া উপজেলার একমাত্র কেন্দ্র (১৩) রাজাপালং এম.ইউ ফাজিল মাদ্রাসায় ৫১২ জন।
জেলার মোট ১৩ টি পরীক্ষা কেন্দ্রে মোট দাখিল পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৬৫৪৮ জন।

জেলায় ৬ টি এসএসসি (কারিগরি/ভেকেশনাল) ৯৮৪ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে কক্সবাজার সদর উপজেলার (১) কক্সবাজার টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজে ২৫০ জন। রামু উপজেলার (২) রামু বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ২৩০ জন, (৩) রামু টেক্সটাইল ইনস্টিটিউটে ১৮০ জন।
মহেশখালী উপজেলার (৪) মহেশখালী আইল্যান্ড হাইস্কুলে ৮১ জন।
চকরিয়া উপজেলার (৫) কিশলয় উচ্চ বিদ্যালয় ১৮৫ জন। উখিয়া উপজেলার (৬) নুরুল ইসলাম টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজে সর্বনিম্ন পরীক্ষার্থী ৫৮ জন।

পিএসসি, জেএসসি, জেডিসি পরীক্ষা সমুহ অধিদপ্তর ও বোর্ডের অধীনে হলেও সেসব পরীক্ষার সনদের একাডেমিক কোন মূল্যায়ন থাকায় দেশের শিক্ষা ক্ষেত্রে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার গুরুত্বই এখনো সবচেয়ে বেশী।

এদিকে, এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা সমুহ গ্রহণের প্রস্তুতির বিষয়ে জানতে চাইলে কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) সিবিএন-কে বলেন, ইনশাআল্লাহ সব ধরনের প্রস্তুতি ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থীরা ২০ মিনিট বেশি সময় পাবেন বলেও জানান অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মোঃ আল আমিন পারভেজ। কক্সবাজারের সকল পরীক্ষা কেন্দ্রে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা সমুহ সর্বোচ্চ নিরাপত্তা, সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে গ্রহনের জন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পরীক্ষা কেন্দ্রর ২০০ গজের মধ্যে পরীক্ষা শুরুর ১ ঘন্টা আগে ও শেষ হওয়ার ১ ঘন্টা পর পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারী থাকবে বলে সিবিএন-কে জানিয়েছেন তিনি। প্রতিটি পরীক্ষা কেন্দ্রে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন। উপজেলা সমুহের পরীক্ষা কেন্দ্রে ইউএনও এবং সহকারী কমিশনার (ভূমি) নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের দায়িত্ব পালন করবেন। প্রশ্নপত্র ফাঁসের গুজব ছড়ানোর বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। পরীক্ষা কেন্দ্রের সচিব সহ সংশ্লিষ্ট সকল দায়িত্বশীলদের উদ্দেশ্যে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) বলেন, দায়িত্ব পালনে কারো কোন অবহেলা ও গাফিলতি সহ্য করা হবেনা। এছাড়া উপজেলা পর্যায়েও ইউএনও-দের সভাপতিত্বে এসএসসি পরীক্ষার প্রস্তুতি সভা ইতিমধ্যে অনুষ্ঠিত হয়েছে।

জেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ ছালেহ উদ্দিন চৌধুরী বলেন প্রশ্নফাঁস রোধে এবার সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। পর্যাপ্ত হাতে সময় নিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রেের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিতে অভিবাবক ও পরীক্ষার্থীদের তিনি অনুরোধ করেছেন। নির্ধারিত সময়ের ৩০ মিনিট আগে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা কেন্দ্রে যেতে হবে বলে তিনি সিবিএন-কে জানান। অযথা অভিবাবকদের পরীক্ষা কেন্দ্রের আশেপাশে ভীড় না করারা জন্য তিনি অভিবাবক ও সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন। তিনি নিজে, জেলা প্রশাসক মোঃ কামাল হোসেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মোঃ আল আমিন পারভেজ সহ উর্ধ্বতন কর্মকতারা সোমবার ৩ ফেব্রুয়ারী পরীক্ষা কেন্দ্র পরিদর্শন করবেন বলে সিবিএন-কে জানিয়েছেন। তিনি প্রশ্ন ফাঁসের কোন গুজবের পেছনে না দোড়ানোর জন্য অভিবাবকদের প্রতি অনুরোধ জানান।