আলমগীর মানিক,রাঙামাটি :
আদালতের এজলাস সম্মুখেই মামলার বাদিনী ও স্বাক্ষীকে হত্যার হুমকি প্রদান করায় রাঙামাটি শহরের বহুল আলোচিত প্রাথমিক শিক্ষক ফারুক আহাম্মেদ তালুকদার বিপুকে দুইদিনের জন্য হাজতবাসে পাঠিয়েছে সিজিএম আদালত। বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) রাঙামাটির চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এএনএম মোরশেদ খানের আদালত এ আদেশ প্রদান করেন। আদেশের প্রাক্কালেই আদালতের নির্দেশে বিপুকে আটক করে কোর্ট পুলিশের সদস্যরা। বিপু রাঙামাটি শহরের পুরানবস্তি এলাকার মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান এবং বাঘাইছড়ি সাজেকের ছয়নালছড়া সরকারি প্রাাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক।
আদালতের বেঞ্চ সহকারী মনজুরুল ইসলাম জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার হত্যাচেষ্টা ও লুটপাটের একটি মামলায় চার্জ গঠনের তারিখ থাকায় আসামি হিসেবে ফারুক আহাম্মেদ তালুকদার বিপু আদালতে আসে। এসময় উক্ত মামলার বাদি ও স্বাক্ষী উভয়েও আদালতে উপস্থিত ছিলো। আদালতে ভেতরে এজলাস থেকে বেরিয়ে ওই মামলার বাদী সাজিয়া বেগমের সামনে তার স্বামী ও স্বাক্ষী ইমদাদুল ইসলামকে অপহরণ ও গলাকেটে হত্যার হুমকি দেয় ফারুক আহাম্মেদ তালুকদার বিপু। ঘটনার আকস্মিকতায় আতঙ্কগ্রস্থ বাদিনী সাজিয়া বেগম তাৎক্ষনিকভাবে বিষয়টি আদালতকে অবহিত করেন। আদালত বিষয়টি আমলে নিয়ে সাথে সাথেই কোর্ট পুলিশ সদস্যদের পাঠিয়ে বিপুকে ধরে এনে কাঠগড়ায় তোলেন। এসময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত স্বাক্ষীদের তথ্য এবং এই হুমকি প্রদানের বিষয়টি আদালতের সামনে স্বীকার করে বিপু। এসময় বিপুকে তার অপরাধের জন্য ৪৮ ঘণ্টার বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করে আসামীকে জেল হাজতে প্রেরণের আদেশ দেন আদালত।
প্রসঙ্গত: গত ২৭ ও ৯ মার্চ দুই দফায় সাজিয়া বেগম ও তার স্বামী এমাদুল ইসলামকে মারধর করে ফারুক আহাম্মেদ তালুকদার বিপু ও তার সহযোগিরা। উক্ত হামলায় ঠিকাদার দম্পতিকে মেরে রক্তাক্ত ও শ্লীলতাহানী করার অভিযোগে ‘হত্যাচেষ্টা ও লুটপাটের’ মামলায় বিপুকে গ্রেফতার করে রাঙামাটির কোতয়ালী থানা পুলিশ। বিপু জেলে বসেই সহযোগিদের দিয়ে ওই দম্পতিকে ‘মামলা তুলে না নিলে বিদ্যালয় থেকে তাদের সন্তানকে অপহরণ’ করার হুমকি দেন। এনিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন এই দম্পতি। এই মামলায় পরবর্তীতে আদালতের মাধ্যমে জামিনে মুক্ত হয় বিপু। সংশ্লিষ্ট্য সূত্রে জানাগেছে, বিপুকে ইতিমধ্যেই মামলাজনিত কারনে সাময়িক বহিস্কার করেছে রাঙামাটি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস কর্তৃপক্ষ। তার বিরুদ্ধে অন্তত অর্ধশত অভিযোগ থাকার পাশাপাশি বেশ কয়েকটি মামলাও চলমান রয়েছে কোতয়ালী থানায়।