সিবিএন ডেস্ক:
সারাদেশে ধর্ষণ প্রতিরোধে একটি কমিশন গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আগামী ৩০ দিনের মধ্যে আইন মন্ত্রণালয়ের অধীনে এই রিট মামলার সংশ্লিষ্ট বিবাদীদের প্রতিনিধি, সুপরিচিত মানবাধিকার সংগঠনের কর্মী, বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের কর্মীদের একজন করে প্রতিনিধি, আইনজীবী, বিচারক, সমাজের সচেতন নাগরিক, সমাজের বিশিষ্ট জন, ভিকটিমের স্বাস্থ্য পরীক্ষাকরণ চিকিৎসক ও চাইলে ভিকটিমকে যুক্ত করে ওই কমিশন গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

একইসঙ্গে ওই কমিটিকে পরবর্তী ছয় মাসের মধ্যে ধর্ষণ প্রতিরোধে করণীয় সম্পর্কে একটি সুপারিশমালা তৈরি করে আদালতে প্রতিবেদন আকারে জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

জনস্বার্থে দায়ের করা এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে রবিবার (১৯ জানুয়ারি) বিচারপতি এফআরএম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কেএম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এসব আদেশ দেন।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার রাবিয়া ভূঁইয়া। অন্যদিকে, রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার এবিএম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।

অন্তর্বর্তীকালীন আদেশের পাশাপাশি ১৬ বছরের নিচে কেউ ভিকটিম হলে সেক্ষেত্রে ধর্ষকের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড প্রণয়ন করায় সরকারের নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি ধর্ষণের ঘটনায় কারও মৃত্যু ঘটলে সেক্ষেত্রে আইনে মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি যাবজ্জীবনের সাজার যে বিধান রয়েছে, সেই যাবজ্জীবন সাজা উঠিয়ে দিতে সরকারের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ হবে না, রুলে তাও জানতে চেয়েছেন আদালত।

এছাড়া,ধর্ষণের শিকার ভিকটিমদের জন্য সাক্ষী সুরক্ষা আইন কেন প্রণয়ন করা হবে না, ধর্ষকদের ডিএনএ সংরক্ষণের জন্য কেন ডিএনএ ডাটাবেজ করা হবে না, প্রতিটি জেলায় ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারের মাধ্যমে ভিকটিমদের সুরক্ষায় কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, ভিকটিমদের ছবি গণমাধ্যমে প্রচারের ক্ষেত্রে কেন সতর্কতা অবলম্বন করা হবে না, সব ধরনের ধর্ষণের অপরাধের জন্য কেন পৃথক একটি আদালত গঠন করা হবে না এবং সেই আদালতে দ্রুত মামলা নিষ্পত্তি করার ক্ষেত্রে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না— তাও জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। আইন মন্ত্রণালয়সহ মামলার সংশ্লিষ্ট বিবাদীদের এসব রুলের জবাব দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এর আগে গত সপ্তাহে ধর্ষণের জন্য পৃথক পৃথক নির্দেশনা চেয়ে এই রিট দায়ের করা হয়। রিটকারীর পক্ষে ব্যারিস্টার রাবিয়া ভূঁইয়া হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ রিট দায়ের করেন।