মোহা. আবু সায়েম, কক্সবাজার :
মাদক, সন্ত্রাস ,জলদস্যুমুক্ত মডেল কুতুবদিয়া রুপান্তরে কাজ  করছেন কুতুবদিয়া থানার ওসি দিদারুল ফেরদাউস। গত আড়াই বছরে তিনি কুতুবদিয়াকে করেছেন  বাসযোগ্য চমৎকার দ্বীপ। পর্যটন নগরী হিসেবে স্বীকৃতি পেতে দ্বীপ উপজেলা কুতুবদিয়াকে পর্যটকদের হাতছানি দিতে উপজেলা প্রশাসন ও কুতুবদিয়া থানা পুলিশের সার্বিক তত্ত্বাবধানে সৌন্দর্য বর্ধন , বেড়ীবাঁধ নির্মাণ এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা যাতে গতিশীল হয় ১০০ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ চলমান রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিগত ৫০ বছরের রেকর্ডকে ভেঙ্গে দিয়ে জলদস্যুতাকে করেছেন প্রায় শূন্য।

প্রাপ্ত তথ্য মতে , দ্বীপ উপজেলা কুতুবদিয়া জলদস্যু এবং ডাকাতদের মারাত্মক বিচরণ ছিলো। বীরদর্পে ডাকাতরা তাদের কর্মকান্ড পরিচালনা করতো। দ্বীপের মানুষ ছিলো খুবই অসহায়। প্রতিটি নৌকা সাগরে মাছ ধরতে গেলে জলদস্যুদের কবলে পড়তে হত। জলদস্যুদের দিতে হত চাঁদা। চাঁদা না দিলে জলদস্যুরা মাঝিমাল্লাদের উপর নির্যাতন চালাতো, অপহরণ করে নিয়ে যেতো তাদের। এমন পরিস্থিতিতে জেলেরা সাগরে মাছ ধরতে যেতে পারতো না।

কুতুবদিয়ায় চৌকস পুলিশ কর্মকর্তা দিদারুল ফেরদাউস যোগদানের পরে দ্বীপ উপজেলার মানুষের জন্য তিনি ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের নির্দেশে পুলিশিং কার্যাবলী বাস্তবায়নে কাজ করছেন একাগ্রচিত্তে। জলদস্যুদের ডেরায় তিনি অপারেশন পরিচালনা করে শতাধিক ডাকাতকে তিনি আইনের আওতায় আনতে সক্ষম হন। সুপরিকল্পনা , সৃজনশীল চিন্তা চেতনা এবং বৈচিত্রায়ন গুণাবলির বাস্তবিক প্রয়োগে আজ দ্বীপের মানুষ জলদস্যুমুক্ত এবং সুন্দর বাসযোগ্য মডেল থানা পেয়ে স্বস্তির নি:শ্বাস ফেলছেন।

কুতুবদিয়া থানায় কর্মরত দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা বলেন, বিগত আড়াই বছর আগে জলদস্যুদের অভায়রণ্য ছিলো দ্বীপ উপজেলা কুতুবদিয়া। কিন্তু ওসি স্যার যোগদানের পর যুগোপুযোগী সিদ্ধান্ত এবং বিশেষ পুলিশিং কার্যাবলি পরিচালনা করে আজ তিনি জলদস্যু দমনে সফল হয়েছেন। বঙ্গোপসাগর হয়েছে জেলেদের জন্য অধিকতর নিরাপদ এবং জীবন নির্বাহের আশ্রয়স্থল।

তিনি আরো জানান, এক সময় কুতুবদিয়া মাদকের আখড়া ছিলো। বিশেষ করে সদর বড়ঘোপ, উত্তর মগডেইল ,চাঁনমিয়া পাড়া , ঝাউতলা , বিদ্যুৎ মার্কেট, দক্ষিণ ধুরুণ ইউনিয়নে মাদকের বিস্তার ছিলো । এমনকি ঐসব এলাকায় বাংলা মদ তৈরীর কারখানা ছিলো ।বাংলা মদগুলো বিক্রি করা হতো, বড়ঘোপ বাজার , ধুরুণ বাজার সহ বিভিন্ন পাড়া মহল্লার ছোট ছোট দোকানগুলোতে এবং বিভিন্ন পয়ন্টে। বাংলা মদের পাশাপাশি গাজাঁ এবং মরণ নেশা ইয়াবার ও প্রসার লাভ করেছিলো। এসব কারণে দ্বীপ উপজেলার মানুষ যুব সমাজ নিয়ে আতঙ্কিত ছিলো। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ছিলো নড়বড়ে। এলাকায় চুরি ছিনতাই রাহাজানি ছিলো ভয়াবহ। এমন পরিস্থতিতে দ্বীপের মানুষের জন্য আশার জলন্ত প্রদ্বীপ নিয়ে যোগদান করে বিশেষ কৌশল প্রয়োগ করে রাত দিন কাজ করে দ্বীপের মানুষের মুখে হাসি ফুটিয়েছেন ওসি দিদারুল ফেরদাউস। দ্বীপ উপজেলা কুতুবদিয়া রুপান্তরিত হলো বাসযোগ্য চমৎকার অধিকতর নিরাপদ ভূমি। তড়িৎ সিদ্ধান্ত এবং মরণমুখী অপারেশন পরিচালনা করে আজ কুুতুবদিয়ার মানুষ শান্তিতে ঘুমাচ্ছেন।

কুতুবদিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের নেতা হাজী বেলালুল ইসলাম বলেন, মাদক র্নিমূলের দ্বরাপ্রান্তে কুতুবদিয়া থানা। পাশাপাশি বর্তমান ওসির দূরদর্শীতায় শিক্ষা , সংস্কৃতি এবং ক্রীড়াক্ষেত্রে অভাবনীয় পরিবর্তন সাধিত হয়েছে এবং তরান্তিত হয়েছে শিক্ষা সংস্কৃতি এবং ক্রীড়ার অভবানীয় সাফল্য। এমনকি ওসির চৌকস পুলিশিং কার্যবালির বাস্তবায়নে দ্বীপের মানুষ শান্তিতে আছেন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বেশ চমৎকার। জলদস্যুদের বিচরণ শূণ্যতে রুপান্তরিত হয়েছে এবং জেলে ও মাঝিরা রয়েছে অধিকতর নিরাপত্তার বেষ্টনিতে আবদ্ধ।

থানা সূত্রে জানায়, এ পর্যন্ত ৮৭ টি মাদক মামলায় ২৯৮ জনকে অভিযুক্ত করা হয়।১৯ হাজার ৯৯৭ পিচ ইয়াবা , ১২৮ লিটার মদ প্রায় ৬ কেজি গাজাঁ উদ্ধার করা হয়।

কুতুবদিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দিদারুল ফেরদাউস জানান, বর্তমান কক্সবাজার জেলার পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন , অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) ইকবাল হোসাইন এবং সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার রতন দাশ গুপ্ত (কুতুবদিয়া- মহেশখালী) স্যারদের নির্দেশে কুতুবদিয়া উপজেলাকে মাদক,সন্ত্রাস এবং জলদস্যুমুক্ত করতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিকে স্বাভাবিকসহ মডেল কুতুবদিয়া রুপান্তরে যুগোপুযোগী সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। কুতুবদিয়া থানা পুলিশ তার টিমদের সাথে নিয়ে মাদক নির্মুলে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছেন । মুজিববর্ষের অঙ্গিকার , পুলিশ হবে জনতার এ প্রাতিপাদ্য বিষয়কে সামনে রেখে জনকল্যাণে কুতুবদিয়া থানা পুলিশ সেবা প্রদানে বদ্ধপরিকর। বলতে গলে কুতুবদিয়া থানা পুলিশ জনকল্যাণে কাজ করে সততা ও ন্যায় নীতিকথায় অবিচল আছেন।

তিনি আরো জানান,গত ২৩ নভেম্বর মহেশখালীতে যে ৯৬ জন জলদস্যু আত্মসমর্পণ করেছেন তাদের মধ্যে ১৩ জন ছিলো দ্বীপ উপজেলা কুতুবদিয়ার । বিগত সাড়ে ৩বছরে শতাধিক জলদস্যুকে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। ইনশাআল্লাহ নিশ্চয়তা দিতে পারি, দ্বীপ উপজেলা কুতুবদিয়া মডেল কুতুবদিয়া থানা হিসেবে রুপান্তরিত হয়েছে। ভবিষ্যতে মাদক এবং জলদস্যু যাতে উত্থান ঘটতে না পারে এবং এদের তৎপরতা যাতে বৃদ্ধি না পায় সে লক্ষ্যে পুলিশিং কার্যক্রমকে বেগবান করে আইনশৃঙ্খলা পরিবেশকে স্বাভাবিক রাখাসহ যাবতীয় জনকল্যাণমুখী কাজ বাস্তবায়ন করে মুজিব বর্ষের অঙ্গিকার পুলিশ হবে জনতার এ প্রাতিপাদ্য উদ্দেশ্যকে সেবার মাধ্যমে পরিপূর্ণতা দিয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনার সোনার বাংলাদেশ রুপান্তরে অংশীদার হতে পারবো ।