হাফেজ মুহাম্মদ কাশেম, টেকনাফ :
টেকনাফে প্রকাশ্য দিবালোকে ছুরিকাঘাতে নিহত ৮ম শ্রেনীর ছাত্র জসীম উদ্দিন খুনির আটক করে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন, প্রতিবাদ সভা, খতমে কুরআন ও দুয়া অনুষ্টিত হয়েছে। টেকনাফ উপজেলায় হোয়াইক্যং আলহাজ্ব আলী-আছিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের আয়োজনে বৃহস্পতিবার ১৬ জানুয়ারি সকাল ১০টায় স্কুল প্রাঙ্গনে এ কর্মসুচী পালিত হয়। এতে বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও স্থানীয় সর্বসাধারণ অংশগ্রহণ করেন। শুরুতে পবিত্র কোরআন পাঠ করেন ১০ম শ্রেনীর ছাত্র মোঃ জুনায়েদ।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক আলহাজ্ব মোস্তফা কামাল চৌধুরী মুসার সভাপতিত্বে অনুষ্টিত প্রতিবাদ সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হোয়াইক্যং মডেল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ আলহাজ¦ মাওঃ নুর আহমদ আনোয়ারী। বিশেষ অথিতি ছিলেন নয়াবাজার উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বাবু রুপন কান্তি বড়–য়া, হ্নীলা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুস সালাম, কানজরপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম, নাইক্ষ্যংখালি নি¤œ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ হোসেন, ১নং ওর্য়াডের ইউপি সদস্য হাজী জালাল আহমদ, ২নং ওর্য়াডের সাবেক ইউপি সদস্য কবির আহমদ চৌধুরী, আওয়ামীলীগ নেতা আলমগীর চৌধুরী। সভায় বক্তাগণ অবিলম্বে ছাত্র খুনীদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবি জানান। অনুষ্টান সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন শিক্ষক আশিষ কুমার বেদাজ্ঞ।
ছুরিকাঘাতে নিহত জসীম উদ্দিনের পিতা দিনমজুর সৈয়দ মিয়া কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, ‘তুচ্ছ ব্যাপারে বিনা কারণে জসীম উদ্দিনকে যারা প্রকাশ্য ছুরিকাঘাত করে হত্যা করেছে এই হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতদের আটক করে কঠিন শাস্তির দাবি করছি’।
উল্লেখ্য, খেলার মাঠে শিশুদের মারধর করার প্রতিবাদ করায় ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত স্কুল ছাত্র জসীম উদ্দিন (১৫) গত ১১ জানুয়ারী দিবাগত গভীর রাতে মারা যান। টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়নের মনিরঘোনা গ্রামে ঘটেছিল ন্যাক্কারজনক এ ঘটনা। ছুরিকাঘাতে নিহত জসীম উদ্দিন (১৫) হোয়াইক্যং আলহাজ¦ আলী-আছিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণীর ছাত্র এবং হোয়াইক্যং মনিরঘোনা গ্রামের বাসিন্দা দিনমজুর সৈয়দ মিয়া প্রকাশ ছাইন্দার পুত্র। ১০ জানুয়ারী বিকালে হোয়াইক্যং আমতলী ঘোনার বক্তার আহমদের পুত্র খাইরুল বশর (১৭) খেলার মাঠে খেলার সময় কয়েকজন শিশুকে মারধর করে। যা নিয়ে এলাকায় হৈ-চৈ সৃষ্টি হয়। পরদিন ১১ জানুয়ারী বিকালে একই সময়ে মনিরঘোনার দিন মজুর ছৈয়দ আহমদ প্রকাশ চাইন্দার স্কুল পড়–য়া ছেলে জসিম উদ্দিন খাইরুল বশরকে সামনে পেয়ে শিশুদের এভাবে মারধর করা ঠিক হয়নি বলে প্রতিবাদ করে। তখন খাইরুল বশর ক্ষুদ্ধ হয়ে ‘তোকেও মারলে কি হবে’ বলে উপর্যপরি ছুরিকাঘাত করলে সে রক্তাক্ত ও মুমুর্ষ হয়ে পড়ে যায়। ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত জসিম উদ্দিনকে তাঁর মা দেলোয়ারা বেগম স্থানীয় লোকজনসহ ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্রগ্রাম হাসপাতালে নেওয়ার পথে গভীর রাতে জসীম উদ্দিন মারা যান।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।