হারুনর রশিদ, মহেশখালী:
কক্সবাজারসহ দেশের উপকূলীয় এলাকায় মাঠ পর্যায়ে উৎপাদিত লবণের দাম নেই, দেশে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট কঠোর ভাবে লবণের দাম নিয়ন্ত্রণ করে নানা প্রক্রিয়ায় বিদেশ থেকে অবৈধ ভাবে লবণ আমদানি করায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এ অবস্থায় চরম সংকটে পড়েছে দেশীয় লবণ শিল্প। এমন পটভূমিতে দ্রুত লবণের মূল্য বৃদ্ধি করে এ শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখার তাগিদ দিয়েছেন -বাংলাদেশ লবণচাষি বাঁচাও পরিষদ। বৃহস্পতিবার দেশের সবচেয়ে বেশী লবণ উৎপাদনকারী এলাকা মহেশখালীতে এ সংগঠনের উদ্যোগে মানববন্ধন সমাবেশ করেছেন। বেলা সাড়ে ১১টায় উপজেলা সদরের বটতলা চত্ত্বরে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন উত্তোর এ সমাবেশ থেকে বক্তারা সরকারের কাছে দ্রুত লবণের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করার দাবি জানান। ন্যায্যমূল্য না পেয়ে দেশে উৎপাদিত লবণের এ ‘সংকটময় পরিস্থিতি’র বিষয়ে সরকারের ঊর্ধ্বতন মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তারা।
বাংলাদেশ লবণচাষি বাঁচাও পরিষদ এর আহ্বায়ক আলহাজ্ব সাজেদুল করিম এর সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব এহছানুল করিমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত এ সমাবেশে বক্তরা তথ্য দেন -চলতি মৌসুমে ১ একর জমিতে লবণ চাষ করতে খরচ পড়ে প্রায় ২লক্ষ টাকা। মাঠ পর্যায়ে উৎপাদিত লবণের মন প্রতি (৪০ কেজি) মূল্য ১৫০ থেকে ১৮০টাকা। অথচ প্রতি মন লবণ উৎপাদন করতে খরচ পড়ে এর চেয়ে বহু বেশী। এ অবস্থায় খুবই করুণ দিন কাটাচ্ছে এলাকার লবণ চাষিরা। লবণের ন্যায্য মূল্য না পেয়ে লবণ চাষের প্রতি আগ্রহ হারাচ্ছে চাষীরা। এই অবস্থার চলতে থাকলে দেশীয় এ শিল্পী ধ্বংস হয়ে যাবে। অনাহারে অর্ধাহারে মানবেতর জীবনযাপন করবে এ পেশার লোকজন।
তারা সরকারের কাছে দাবি জানান -এলসির মাধ্যমে লবণ আমদানি সম্পূর্ণ রূপে নিষিদ্ধ করতে হবে, লবণ চোরাচালান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে কঠোর ভাবে দমন, মাঠ পর্যায়ে লবণের মূল্য কেজি প্রতি ১১ থেকে ১২ টাকায় করা, কক্সবাজারে লবণের স্থায়ী বোর্ড গঠন করা, লবণ ঋণের সহায়তা ও ইতোমধ্যে দেওয়া ঋণ মওকুপ, প্রযুক্তি নির্ভর লবণ উৎপাদনের প্রশিক্ষণ প্রদান, উৎপাদিত লবণ সংরক্ষণ, সরবরাহ, বাজারজাত করণের কার্যকর কৌশল নির্ধারণ করা ও বিসিক এর মাধ্যমে অন্ততঃ ২ লক্ষ মে. টন লবণ আপদকালীন সময়ের জন্য মওজুদ রাখার ব্যবস্থা করার দাবি জানানো হয়।
উল্লেখ্য যে মহেশখালীসহ কক্সবাজারের ৭ উপজেলা চকরিয়া, পেকুয়া, টেকনাফ, কক্সবাজার সদর, রামু, কুতুবদিয়াসহ চট্টগ্রামের বাঁশখালীর প্রায় ৫৫ হাজার লবণ চাষিসহ এ শিল্পের সাথে দেশের প্রায় ৫ লাখ মানুষ জড়িত। বহু মানুষের একমাত্র আয়ের উৎস লবণ চাষ। তাই লবণ চাষি ও মালিকদের ন্যায্য মূল্য প্রদানের মাধ্যমে বাঁচিয়ে রাখতে তারা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
উপজেলার নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক বরাবর সংগঠনের আহবায়ক আলহাজ্ব সাজেদুল করিম ও সদস্য সচিব এহছানুল করিম সাক্ষরিত স্মারকলিপি প্রদান করেছেন।