ডেস্ক নিউজ:

নয়া নাগরিকত্ব আইন ইস্যুতে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেছেন, এনপিআর নিয়ে কেন্দ্রের ডাকা বৈঠকে আমাদের রাজ্য যাবে না। পারলে ওরা সরকার ভেঙে দেখাক। নাগরিকত্ব আইন নিয়ে সংঘাতে বুধবার এভাবেই

বুধবার কলকাতার ধর্মতলায় দলের ছাত্র সংগঠনের অবস্থান মঞ্চে এ কথা বলেন তিনি।

নাগরিকত্বের প্রশ্নে কেন্দ্রের সঙ্গে সংঘাতের সুর আরও চড়িয়ে মমতা বলেন, এনপিআর নিয়ে ১৭ তারিখ কেন্দ্রীয় সরকার বৈঠক ডেকেছে। আমরা ওই বৈঠকে যাবো না। যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় দিল্লিতে তুমিও নির্বাচিত সরকার, এখানে আমিও নির্বাচিত।

তারপরই এ ব্যাপারে নিজের অনড় মনোভাব বুঝিয়ে তিনি বলেন, এ রাজ্যে বিজেপির একজন মুখপাত্র ( রাজ্যপাল) আছেন। এই সিদ্ধান্তের জন্য পারলে তিনি আমাদের সরকার ভেঙে দিন। ক্ষমতা থাকলে ভেঙে দেখান।

রেজিস্ট্রার জেনারেল অ্যান্ড সেন্সাস কমিশনার অফ ইন্ডিয়ার (আরজিসিসিআই) ডাকে ১৭ জানুয়ারি দিল্লিতে ওই বৈঠকে সব রাজ্যের মুখ্যসচিবকে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। সেখানে সেন্সাস নিয়েও আলোচনা হওয়ার সম্ভাবনা। কিন্তু বিষয়টি যেহেতু এনপিআর-এর সঙ্গে একই বন্ধনীতে রাখা হয়েছে তাই মুখ্যমন্ত্রী এ ব্যাপারে কঠোর মনোভাব নিয়েছেন। নবান্নের সিদ্ধান্ত রাজ্য বৈঠকে যাবে না।

কেন্দ্রীয় সরকারের দাবি, অধিকাংশ রাজ্যের মুখ্যসচিব ওই বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন। তবে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যসচিব ওই বৈঠকে উপস্থিত থাকতে পারবেন না বলে ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছেন।

দিল্লিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্রে দাবি করা হয়েছে, রাজ্যগুলি লিখিতভাবে কোনও আপত্তি আরজিসিসিআই-কে জানায়নি।

এক স্বরাষ্ট্র কর্মকর্তার মতে, পশ্চিমবঙ্গ সরকার স্থানীয় পর্যায়ে ওই সংক্রান্ত প্রশিক্ষণের কাজ বন্ধ রেখেছে বলে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। এ নিয়ে কেন্দ্রকে সরকারিভাবে কিছু জানানো হয়নি। কেরালা সরকার তাদের আপত্তির বিষয়টি সে রাজ্যের আরজিসিসিআই দপ্তরে জানিয়েছিল। যার মাধ্যমে সেটি আরজিসিসিআই-র সদর দপ্তরে পৌঁছায়।

মমতা বলেন, সেন্সাসের কথা ভেবে আমরা এনপিআর-এর কাজ করছিলাম। কিন্তু পরে দেখলাম, বাবা-মার নাম, তাঁদের জন্মস্থান, তার প্রমাণ, জন্মের সার্টিফিকেট চাওয়া হচ্ছে এনআরসির জন্য। তা-ই তা আমরা করছি না।

তাঁর আশঙ্কা, এনআরসি চালু করার উদ্দেশ্যেই এনপিআর-এ এই সব তথ্য চাওয়া হচ্ছে।

এক্ষেত্রে রাজ্যের আপত্তির পক্ষে তাঁর যুক্তি, কেন্দ্র জিএসটি বিল পাশ করার পরে সব রাজ্যের বিধানসভায় তা পাশ করানো হয়েছিল। এক্ষেত্রেই বা সেটা হবে না কেন?

কয়েক বছর আগে আধার কার্ডের বিধি বদলে সেখানে বাবা বা অভিভাবকের নাম লেখার বাধ্যতা তুলে দেওয়া হয়েছিল। যদিও পুরনো আধার কার্ড এর ফলে বাতিল হয়নি। তবে এই নিয়ম বদলের পেছনেও কেন্দ্রের ‘অন্য উদ্দেশ্য’ আছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।

নিজের আধার কার্ড দেখিয়ে সমাবেশে তিনি বলেন, প্রতিদিন একটা করে কার্ড করতে হবে? পুরোটাই জালিয়াতি, প্রতারণা।