মোঃ নিজাম উদ্দিন, চকরিয়া: 

আর্থিক অনটন ও অভিভাবকের চাপে বিয়ের আসনে বসতে বাধ্য হচ্ছিল সদ্য ৫ম শ্রেণী পাশ মেধাবী ছাত্রী তাহমিনা (১৫)। লামা উপজেলার ঝরে পড়া এ শিক্ষার্থীর বাল্য বিবাহ বন্ধ করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নূর-এ-জান্নাত রুমি ও থানার অফিসার্স ইনচার্জ অপ্পেলা রাজু নাহা’র তৎপরতায়।

লামা থানার ডিএসবি কর্মকর্তা (এএসআই) আলমগীর বাদশা গত ১৩ জানুয়ারী ঘটনাটির সরজমিনে পরিদর্শনে যান। তিনি দেখতে পান- দিনমজুর বাবার কন্যা তাহমিনা ৬ বোনের মধ্যে সবার বড়। অভাবের তাড়নায় বিয়ে দিতে বাধ্য হচ্ছে অভিভাবকরা। কথা বলে জানতে পারেন- পড়ালেখার প্রতি প্রচন্ড আগ্রহ তাহামিনার। বড় হয়ে সে একজন আদর্শ শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন ছিল। কিন্তু জীবনের অভাব নামের কালীমা মুছে দিচ্ছিল ওই স্বপ্ন। ঠিক সেই মুহুর্তে ডিএসবি আলমগীরের মনে পড়ে গেল তার অতীত। অন্তর কেঁদে চোখে ভেসে উঠলো তার ছাত্রজীবনের দুঃখ-কষ্টের সকল স্মৃতি।

পরদিন তাহমিনা ও তার বাবাকে সাথে নিয়ে প্রাইমারী স্কুল থেকে ছাড়পত্র নিয়ে ভর্তি করে দিলেন হাইস্কুলে। বাজার থেকে কিনে দিলেন ৬ষ্ঠ শ্রেণীর সকল বই, স্কুল ব্যাগ, খাতা-কলম, স্কুলড্রেস সহ পড়ালেখার সকল সরঞ্জামাদি।
ডিএসবি আলমগীরের মানবিক এসব কর্মকাণ্ড মানুষের কাছে প্রকাশ হলে আলোড়ন সৃষ্টি হয় সর্বত্রে। সম্প্রতি আলোচনায় টপ অপ দ্যা লামা হয়ে উঠেন মানবতার ফেরিওয়ালা আলমগীর।

জানতে চাইলে লামা থানার ডিএসবি কর্মকর্তা আলমগীর বাদশা বলেন, কে কি বললো না বললো আমি এসব দেখিনা। এগুলো ক্ষুদ্র দায়িত্ব পালন করছি মাত্র। কারণ আমি নিজে মানুষ হয়েছি অত্যন্ত কষ্ট করে। ছাত্রজীবনের অনেক বেদনাদায়ক স্মৃতি আমাকে এখনো কাঁদায়। তাই, কারো লেখাপড়া বন্ধ হউক আমি চাই না। আমার মতো সীমাহীন কষ্ট করে কেউ লেখাপড়া করছে দেখলে আমি সহ্য করতে পারি না।