কক্সবাজার শহরের বিপর্যস্ত প্রধান সড়ক নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন কক্সবাজারবাসী। গতকাল সোমবার বিকাল ৪ টায় কক্সবাজার প্রেস ক্লাব মাঠে আয়োজিত এক নাগরিক সভায় ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়। শুধু প্রধান সড়ক নয়, শহরের বিভিন্ন উপ সড়কসহ পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার পাশাপাশি তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা।

কক্সবাজার প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আবু তাহেরের সভাপতিত্বে ও যমুনা টিভি কক্সবাজার জেলা প্রতিনিধি ইমরুল কায়েস এর সঞ্চালনায় “নাগরিক সভা” অনুষ্ঠিত হয়।

এতে উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান লেফটেন্যান্ট কর্নেল অবসরপ্রাপ্ত ফুরকান আহমেদ ও কক্সবাজার পৌর মেয়র মজিবুর রহমান।

উপস্থিত অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, কক্সবাজার জেলা কমিউনিটি পুলিশিং ও সিনিয়র সাংবাদিক তোফায়েল আহমেদ, সিনিয়র সাংবাদিক ফজলুল কাদের চৌধুরী, জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক এডভোকেট রনজিৎ দাশ, সাংস্কৃতিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট তাপস রক্ষিত, অ্যাডভোকেট আয়াছুর রহমান, কক্সবাজার চেম্বার সভাপতি আবু মোর্শেদ চৌধুরী, সিনিয়র সাংবাদিক আবদুল কুদ্দুস রানা, দৈনিক কক্সবাজার এর পরিচালনা সম্পাদক মুজিবুল ইসলাম, সাংবাদিক ইউনিয়ন কক্সবাজার এর সভাপতি মমতাজ উদ্দিন বাহারী, সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাসানুর রশীদ, জেলা আওয়ামীলীগ নেতা রাশেদুল ইসলাম, জেলা যুবলীগের সভাপতি সোহেল আহমেদ বাহাদুর, সাধারণ সম্পাদক শহিদুল হক সোহেল, জেলা জাতীয় পার্টির নেতা রুহুল আমিন সিকদার, জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক অনুপ বড়ুয়া অপু, সকালের কক্সবাজার এর সম্পাদক ফরহাদ ইকবালসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ বক্তব্য রাখেন।

নাগরিক সভায় কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফোরকান আহমেদ বলেন, কক্সবাজার নিয়ে নানান পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে কৌউক। ইতিমধ্যে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। অত্যাধুনিক মানের করে কাজ করতে প্রধান সড়কটি উন্নয়নের জন্য উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণে দেয়া হয়েছে। একনেকে প্রকল্প পাস হয়েছে, কাজ শুরুর অপেক্ষায় রয়েছে। কিন্তু তার আগে জরুরী ভিত্তিতে এই সড়ক সংস্কার করা হবে। জনগণের দুর্দশা কমাতে এই সংস্কার কাজ অব্যাহত থাকবে। যতবার খানাখন্দ হবে ততবার সংস্কার করা হবে, দয়া করে আপনারা আমার সাথে থাকবেন।

পৌর মেয়র মজিবুর রহমান বলেন, আমি জনগণের জন্যই আমার জীবনটা ত্যাগ করে আসছি। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত নিরলসভাবে পৌরবাসীর জন্য কাজ করছি। ইতিমধ্যে পৌরসভার বেশ কিছু উন্নয়ন প্রকল্প শীঘ্রই কাজ শুরু হবে।

তিনি আরো বলেন, আমি নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে একটি পৌরসভার টাকাও নষ্ট করিনি । আমার ব্যক্তিগত টাকা খরচ করে পৌরসভার কাজ করি, জনগণের সেবা করি। এটি আমার মা-বাবার নির্দেশ ছিল আমার প্রতি। আমি সে মোতাবেক কাজ করছি, আপনারা নিরাশ হবেন না । সবার পরামর্শ মতোই কাজ করে আপনাদের দেয়া আমার প্রতিশ্রুতি আমি বাস্তবায়ন করে দেখাবো ইনশাল্লাহ।

এদিকে সাংবাদিক ইমরুল কায়েস এর নেতৃত্বে নাগরিক সভা আয়োজনের সাথে সাথেই কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ দ্রুততার সাথে রাস্তা সংস্কারের কাজ শুরু করে দিয়েছে।

শহরের বাস টার্মিনাল থেকে হলিডে মোড় পর্যন্ত বিভিন্ন পয়েন্টে কাজ করছে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে নাগরিক সভা অনুষ্ঠান এর মাধ্যমে কাজ করতে বাধ্য হন উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ।

প্রসঙ্গত, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের পরে বিভিন্ন এনজিওতে চাকরি নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে যে অবহেলা সৃষ্টি হয়েছিল, যোগ্যতা থাকা সত্বেও স্থানীয়দের চাকরি না দিয়ে, বহিরাগতদের চাকরিতে অগ্রাধিকার দিয়েছিল রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কর্মরত এনজিওগুলো। স্থানীয়দের চাকরিতে অগ্রাধিকার দিবার দাবিতে সোচ্চার হয়ে রাজপথে আন্দোলন করে দাবি আদায়ের সর্বোচ্চ ভূমিকা রেখেছিলেন সাংবাদিক ইমরুল কায়েস।

সেই আন্দোলনে সফলতার পাশাপাশি কক্সবাজার শহরের অসহায় মানুষের পাশে থেকে সড়ক বিনির্মান ও সংস্কার আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়ে সাধারণ মানুষের মনে ভালোবাসার এক নিবিড় বন্ধন সৃষ্টি করেছেন তিনি। তার সাহসিকতা ও বলিষ্ঠ প্রতিবাদের মাধ্যমে রাস্তায় চলাচলের দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পেতে যাচ্ছে শহরবাসী।

এদিকে, কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ দ্রুততার সাথে কাজ করে যাচ্ছে। শহরের বাস টার্মিনাল, সাবমেরিন ক্যাবল, আলির জাহাল, রুমালিয়ার ছড়া, কালুর দোকান, বার্মিজ মার্কেট, বাজার ঘাটা, লালদীঘির পাড় সহ প্রতিটি পয়েন্টে যেখানে খানাখন্দক রয়েছে, ক্রমান্বয়ে দ্রুততার সাথে কাজ করে সংস্কার করে দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ।