কক্সবাজার পৌরসভার ৯ নং ওয়ার্ডস্থ পূর্ব ঘোনার পাড়ার এক পরিবার হয়রানি থেকে বাঁচার আকুতি জানিয়েছে। স্থানীয় কিছু দুষ্ট চক্রের হাত থেকে নিয়মিত হয়রানির শিকার হচ্ছে পরিবারটি। নিয়মিত হয়রানির শিকার হয়ে পরিবারটি এখন এক প্রকার অসহায় হয়ে পড়েছে। তিলকে তাল বানিয়ে পরিবারের প্রতিটি সদস্যকে অপমানও করে যাচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে। হয়রানির শিকার পরিবারটি কোথাও আশ্রয়ও পাচ্ছে না বলে দাবি। মৃত সোনা মিয়ার স্ত্রী লায়লা বেগম (৭০) এই হয়রানি থেকে বাঁচতে প্রধানমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কাছে আকুল আবেদন জানান সংবাদপত্রের মাধ্যমে। লায়লা বেগমের ছেলে মমতাজ আহমদ (৪৬), রাজা মিয়া ওরফে রাজু (৪৪) ও মেয়ে ধলা বুড়ি (৩০) অহেতুক হয়রানির শিকার হয়ে অতিষ্ট হয়ে পড়েছে।
লায়লা বেগমের দাবি, তার বড় ছেলে মমতাজ শহরের বাহারছড়া বাজারে ছাগলের মাংস বিক্রি করে প্রতিদিন। অপর ছেলে রাজা মিয়া বড় বাজারে গরুর মাংস বিক্রি করে। শহরের সবাই মাংস ব্যবসায়ী বলে তাদের চিনে। রয়েছে ব্যবসায়ী জগতে সুনামও। মেয়ে ধলা বুড়ি একজন গৃহিনী। অনেক কষ্ট করে মেয়ের সংসার চলে। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে এলাকার কিছু দুষ্ট লোক বিভিন্নভাবে হয়রানি করেই যাচ্ছে। ফেসবুকেও তাদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে উল্টাপাল্টা লেখালেখি করে থাকে। এতে বিভ্রান্ত হয় পুলিশসহ প্রশাসনের লোকজন।
৭০ বছরের লায়লার দাবি, গত দুই বছর আগে তার ছেলে মমতাজ ছাগল কিনতে চট্টগ্রাম যান। ওই সময় মমতাজের পাশের একযাত্রীর কাছ থেকে ইয়াবা উদ্ধার করে পুলিশ। ওই ঘটনায় সন্দেহজনকভাবে মমতাজকে আসামী করা হয়। পরে মমতাজ মামলাটির জামিন নিয়ে নিয়মিত ছাগলের ব্যবসা করেই যাচ্ছে। কিন্তুু এলাকার কিছু লোক তিলকে তাল বানিয়ে হয়রানি করে যাচ্ছে। এই হয়রানির অংশ হিসেবে গত বুধবার রাতে তার বাড়িতে পুলিশও পাঠিয়েছে তারা। ঘুম থেকে তুলে তার ছেলেকে ধরে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। ছেলেকে দেখতে আমি মা থানায় গেলে আমাকেও আটক করে রাখা হয়। পরে আবার আমাকে ছেড়ে দেয়। কিন্তু হয়রানির অংশ হিসেবে দুষ্ট লোকরা ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছে মা-ছেলে ইয়াবাসহ আটক। এটি প্রশাসন ও এলাকাবাসীকে বিভ্রান্ত করে হয়রানির অংশ মাত্র। কেউ কি থানায় ছেলেকে দেখতে গেলে ইয়াবা নিয়ে যায় নাকি একটা আমার প্রশ্ন?
লায়লা বলেন, আমার ছেলে রাজুর বিরুদ্ধে একটি ষড়যন্ত্রমূলক হত্যা মামলা ছিল বহুবছর আগে। এটিও খালাস হয়ে গেছে। কিন্তু হয়রানি বন্ধ হচ্ছে না। বারবার বিভিন্নভাবে একাধিক কৌশলে হয়রানি করেই যাচ্ছে। লায়লার দাবি- একটি ইস্যুকে কেন্দ্র করে আমার পরিবারের পিছনে নিয়েছে কয়েকজন লোক। ইস্যুটি হলো- স্থানীয় কাউন্সিলর ভোটকে কেন্দ্র করে। আমরা নির্বাচিত কাউন্সিলরকে ভোট দেওয়ার কারণে এক পরাজিত কাউন্সিলর প্রার্থীর লোকজন এই হয়রানি করেই যাচ্ছে। পৌরসভা নির্বাচনের পর থেকেই আমাদের পুরো পরিবারকে হয়রানি করেই যাচ্ছে। তখন থেকেই হয়রানি শুরু হয়েছে। এর আগে নয়। হয়রানির বিষয়টি সবাই জানে। কিন্তু অনেকেই নতুনভাবে হয়রানি ও মান সম্মানের ভয়ে এগিয়ে আসছে না। যদি এগিয়ে আসা তাহলে তারাও আমাদের মতো হয়রানির শিকার হতে পারে বলে ভয় করছে। সংবাদপত্রের মাধ্যমে বিষয়টি আমি পুলিশসহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসন ও এলাকাবাসিকে অবগত করেছি অনেক দু:খ নিয়ে। আমার পরিবারটি শান্তিতে বাঁচতে চায়। দিনে এনে দিনে চলার সংসার আমাদের। একজনের কিছু হলে তার বউ বাচ্চা কষ্টে পড়ে যায়। এমন হয়রানি ও ষড়যন্ত্র থেকে মুক্তি চায় আমরা। সবার মতো বাঁচতে চায় আমরা। একজন কাউন্সিলরকে ভোট দেয়নি বলে কি আজ আমাদের হয়রানির শিকার হতে হবে ? কেন আমরা বারবার হয়রানির শিকার হচ্ছি বিষয়টি সুষ্ঠ তদন্ত করার দাবিও জানাচ্ছি সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে।
এবিষয়ে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ কাউকে এমন সাজানো অপপ্রচার নিয়ে বিভ্রান্ত না হওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি।

আকুতি আবেদনে
লায়লা বেগম (৭০)
স্বামী-মৃত সোনা মিয়া। কক্সবাজার পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ড ঘোনার পাড়া।