মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী :
কক্সবাজারের পুলিশ সুপার এ.বি.এম মাসুদ হোসেন বিপিএম (বার) দ্বিতীয়বারের মতো পাওয়া দুর্লভ ও মর্যাদাপূর্ণ বিপিএম (সেবা) পদক কক্সবাজার জেলা পুলিশের সকল সদস্য ও কক্সবাজার জেলাবাসীর প্রতি উৎসর্গ করছেন। কক্সবাজারের পুলিশ সুপার এ.বি.এম মাসুদ হোসেন বিপিএম (বার) জাতীয় পুলিশ সপ্তাহের প্রথম দিনে গত ৫ জানুয়ারি দেশের একমাত্র পুলিশ সুপার হিসাবে বিপিএম (সেবা) পদক লাভ এবং গত ৭ জানুয়ারি দেশের সর্ব্বোচ্চ মাদক দ্রব্য ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারকারী জেলা হিসাবে আইজিপি ক্রেস্ট, সনদ ও সম্মাননা গ্রহন করে ঢাকা থেকে কক্সবাজার পৌঁছালে তাঁকে দেয়া উঞ্চ সংবর্ধনার জবাবে এ উৎসর্গের কথা বলেন।
শুক্রবার ১০ জানুয়ারি সকালে কক্সবাজার জেলা পুলিশের উদ্যোগে কক্সবাজার বিমানবন্দরে এ সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। সংবর্ধনার প্রতিক্রিয়ায় পুলিশ সুপার এ.বি.এম মাসুদ হোসেন বিপিএম (বার) মহান আল্লাহতায়লার কাছে অশেষ শোকরিয়া জ্ঞাপন করে বলেন-এই রাষ্ট্রীয় পুরস্কার অর্জন শুধুমাত্র তাঁর একার কৃতিত্ব নয়, তাঁর মতে-এই কৃতিত্ব কক্সবাজার জেলা পুলিশের সকল সদস্য ও পুরো জেলাবাসীর। কারণ, জেলা পুলিশের সকল সদস্য ও কক্সবাজারের নাগরিকবৃন্দ জেলার আইনশৃঙ্খলা সুরক্ষায় ও পুলিশ বাহিনীর সার্বিক কাজকর্মে আন্তরিক সহযোগিতা নাকরলে এ বিরল অর্জন হয়ত কখনো সম্ভব হতোনা। তাঁকে দ্বিতীয়বারের মতো এ বিপিএম (সেবা) পদক প্রদান করায় কক্সবাজার জেলা পুলিশের অসীম ত্যাগ, সাহস ও ঝুঁকিপূর্ণ কর্মের যথার্থ মূল্যায়ন করা হয়েছে তিনি উল্লেখ করেন। এতে কক্সবাজার জেলা পুলিশের সকল সদস্যের কাজের গতি, সাহস ও উৎসাহ আরো বাড়বে বলে এসপি এ.বি.এম মাসুদ হোসেন বিপিএম (বার) এসময় দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, যতদিন কক্সবাজার আছি, এর মধ্যে সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় কক্সবাজার জেলা পুলিশকে দেশের একটি আদর্শ রোল মডেল টিম হিসাবে গড়ে তুলতে চাই। সর্ব্বোচ শক্তি দিয়ে মাদক, জঙ্গী, সন্ত্রাস দমন আরো গতিশীলতা আনতে চাই।
এসপি এ.বি.এম মাসুদ হোসেন বিপিএম (বার) আরো বলেন, এ বিশাল প্রাপ্তি তাঁর ও তাঁর বাহিনীর পেশাগত দায়িত্ব, কর্তব্য আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। দেশ ও মানুষের কাছে কক্সবাজার জেলা পুলিশ ঋনী হয়েছে। আবারো বিপিএম (সেবা) পদক পাওয়ায় কক্সবাজার জেলা পুলিশ ও জেলাবাসীর মর্যাদা আরো বৃদ্ধি হয়েছে, জেল পুলিশের ভাবমূর্তি আরো উজ্জ্বল হয়েছে, পুলিশের প্রতি গণমানুষের আস্থা ও বিশ্বাস বেড়েছে। তিনি বলেন-পর পর ২ বছর সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পদক পাওয়া নিঃসন্দেহে গৌরবের বিষয় ও জেলা পুলিশের জন্য প্রশংসনীয় একটি রেকর্ড। যা জেলা পুলিশের ইতিহাসকে সমৃদ্ধ ও উর্বর করেছে। তিনি বলেন-কৃতকর্মের মূল্যায়ন হওয়ায় কর্মস্থলে সাহসিকতা ও অদম্য মনোবল নিয়ে কাজ করতে আরো স্পৃহা ও উদ্যোম বেড়ে যাবে। এ প্রাপ্তি পুলিশকে আরো জনবান্ধব ও সেবামুখী করে তুলবে। দাপ্তরিক কাজের গতি ও সেবার মান তুলনামূলক বৃদ্ধি পাবে। তিনি আরো বলেন-এ পুরস্কার আমার জীনের একটা মাইলফলক। ঝুঁকি ও ত্যাগের স্বীকৃতি পেলাম এবং অপরাধ দমনে অদম্য মনোভাবের সৃষ্টি হয়েছে।
বিমানবন্দরে সংবর্ধনা প্রদানকালে কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মোহাম্মদ ইকবাল হোসাইন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) রেজওয়ান আহমেদ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ইন সার্ভিস) মশিউর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোঃ আদিবুল ইসলাম, সহকারী পুলিশ সুপার (ডিএসবি) শহীদুল ইসলাম, সহকারী পুলিশ সুপার (ট্রাফিক বিভাগ) বাবুল চন্দ্র বণিক, বিভিন্ন থানার অফিসার্স ইনচার্জগণ সহ কক্সবাজার জেলা পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকতা ও সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এসময় এসপি এ.বি.এম মাসুদ হোসেন বিপিএম (বার) তাঁর কর্মজীবনের আরো সাফল্যের জন্য সবার কাছে দোয়া, আশির্বাদ ও সহযোগিতা চেয়েছেন। এই অপরিসীম অর্জনে কক্সবাজার জেলা পুলিশের সকল সদস্য অধম্য আত্মবিশ্বাস, প্রেরণা ও প্রত্যয়ে সমৃদ্ধ হয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
পুলিশ সুপার এ.বি.এম মাসুদ হোসেন বিপিএম (বার) তাঁকে এই গৌরবময় সম্মাননা প্রদানের জন্য মনোনীত করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন এমপি, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দিন, ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বিপিএম (বার), বাংলাদেশ পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি (এডমিন এন্ড অপারেসন্স) ড. মঈনুর রহমান চৌধুরী (বিপিএম-বার) চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুক (বিপিএম বার-পিপিএম), পুলিশ সদর দপ্তরের সকল উর্ধ্বতন কর্মকর্তা সহ সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানান।
বিমানবন্দর থেকে পুলিশ সুপার এ.বি.এম মাসুদ হোসেন বিপিএম (বার) তাঁর কার্যালয়ের কনফারেন্স রুমে গিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁকে সংবর্ধনা জানানোর জন্য তৈরিকৃত ইংরেজিতে “BPM” লেখা একটি বিশাল আকৃতির কেক কাটেন। পরে তিনি কক্সবাজার প্রেসক্লাবে জাতীয় পত্রিকা দৈনিক কালেরকন্ঠে দশম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর অনুষ্ঠানে এবং বেলা আড়াইটার দিকে সমুদ্র সৈকতের লাবনী পয়েন্টে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকীর ক্ষণগননা অনুষ্ঠানে যোগ দেন।