বিদেশ ডেস্ক:
ইরানের দক্ষিণাঞ্চলীয় আহওয়াজ শহরে দেশটির প্রভাবশালী কুদস ফোর্সের কমান্ডার কাসেম সোলাইমানির শোক মিছিলে অংশ নিয়েছেন বিপুল সংখ্যক মানুষ। রবিবার ভোরে ইরানের দক্ষিণাঞ্চলীয় আহওয়াজ বিমানবন্দরে তার মরদেহ পৌঁছায়। এ সময় দেশটির শীর্ষস্থানীয় সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা সেখানে উপস্থিত ছিলেন। পরে সোলাইমানির শোক মিছিলে মানুষের ঢল নামে। পুরো শহরই যেন জনসমুদ্রে পরিণত হয়। আহওয়াজ শহরে তার জানাজায় অংশ নেন লাখো মানুষ। আগামী কয়েক দিন ইরানের বিভিন্ন শহরে কাসেমির জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। ৭ জানুয়ারি তাকে নিজ শহর কেরমানে দাফন করা হবে।
আহওয়াজ থেকে তার মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় ইরানের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় মাশহাদ নগরীতে। সেখানে তার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে সমবেত হয়েছেন লাখো মানুষ।
এর আগে শনিবার ইরাকের কাজেমাইন, বাগদাদ, কারবালা ও নাজাফ শহরে কাসেম সোলাইমানি এবং তার সঙ্গে নিহত অন্যদের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। শিয়া সংখ্যাগরিষ্ঠ ইরাকের লাখো মানুষে এসব জানাজায় অংশ নেন।
বাগদাদে শোক মিছিলে অংশ নেওয়া জনতা ইরাক ও দেশটির ইরানপন্থী শিয়া মিলিশিয়া বাহিনীর পতাকা বহন করে। ‘আমেরিকা নিপাত যাক’ স্লোগানে বাগদাদের রাজপথ প্রকম্পিত করে তোলেন তারা। বিক্ষোভরত অনেকের হাতে ছিল সোলাইমানি ও ইরানের ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির ছবি।
ইরাকে কাসেম সোলাইমানির শোক মিছিলের কয়েক ঘণ্টা পরে বেশ কয়েকটি বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে বাগদাদ। বাগদাদের সুরক্ষিত গ্রিন জোনে মার্কিন দূতাবাসের কাছেই বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া গেছে।
বাগদাদের উত্তরে বালাদ বিমানবন্দর সংলগ্ন অঞ্চলেও গুলির শব্দ পাওয়া গেছে। অঞ্চলটি ইরাকে মোতায়েন মার্কিন বাহিনীর সদস্যদের আবাসিক এলাকা হিসেবে পরিচিত। তবে নিরাপত্তা সূত্র জানিয়েছে, ওই ঘটনায় কোনও হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
ইরানের নেতারা কাসেম সোলাইমানির হত্যার প্রতিশোধ নেওয়ার অঙ্গীকার করেছেন। এরপরই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, তেহরান যদি আমেরিকার নাগরিক কিংবা মার্কিন সম্পদের ওপর হামলা চালায়, তাহলে তার জবাবে ইরানের ৫২টি লক্ষ্যবস্তুতে পাল্টা হামলা চালানো হবে। যুক্তরাষ্ট্র ইরানের ৫২টি স্থাপনাকে টার্গেট করছে এবং ‘খুব দ্রুত ও কঠোরভাবে’ হামলা চালানো হবে। ইরান ও তার সংস্কৃতির জন্য এসব স্থাপনা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।