শাহীন মাহমুদ রাসেল:

অবশেষে কক্সবাজারে সবজির বাজারে শীতের পরশ লেগেছে। পৌষের শেষের দিকে এসে স্বস্তি ফিরেছে শীতকালীন সবজিতে। বাজার জুড়ে এখন কেবলই রঙিন সবজির সমারোহ। দেখলেই চোখ জুড়িয়ে যায়, দামও সস্তা।

মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে সবজির সরবরাহ বেড়েছে দ্বিগুণ, কমেছে দাম। ১শ’ টাকার সবজিতেই এখন ক্রেতার বাজারের ব্যাগ উপচে পড়েছে। গত শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) বিকেলে রামুর কলঘর বাজার ঘুরে পাওয়া গেছে এ চিত্র।

সরেজমিনে দেখা গেছে, শীতকালীন সবজিতে বাজার ভরপুর হয়ে উঠেছে। প্রতিটি সবজির দামই কেজিপ্রতি ৫ টাকা থেকে ১০ টাকা কমেছে। তাই লাগামহীন দামের জন্য যারা এতোদিন শীতের সবজির স্বাদ নিতে পারছিলেন না, তারাও এখন ব্যাগ ভরে সবজি কিনতে পারছেন। এর মধ্যে রয়েছে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত ছাড়া বাইরে থেকে আসা শাক-সবজিও।

সবজি বিক্রেতা মোতাহের ও মনজুর আলম পাশাপাশি চালুনিতে বেগুন সাজিয়ে রেখেছেন। দেখতে প্রায় একই রকম হলেও দুই টুকরির বেগুনের দামের পার্থক্য বেশ বড়। একটি বল বেগুনের দাম প্রতি কেজি ৪০ টাকা। এটি ‘দেশি’ বেগুন নামে পরিচিত। আর পাশের টুকরির বেগুন প্রতি কেজি ৩০-৩৫ টাকা। স্বাদের ভিন্নতা ‘চালানি’ বেগুন ও ‘লোকাল’ বেগুনের দামেও বড় পার্থক্য গড়ে দিয়েছে।

রামু উপজেলার লোকাল সবজির জন্য বেশ জনপ্রিয় কলঘর ও রামু বাজার কাঁচা বাজার। প্রতিদিন ভোর বেলা এখানে স্থানীয় বিক্রেতারা সুস্বাদু নানা জাতের সবজি নিয়ে আসেন। দাম একটু বেশি হলেও ক্রেতাও প্রচুর।

গত শুক্রবার বিকেলে বাজারে গিয়ে দেখা যায়, সারি সারি শীতের সবজি। লাউ, মুলা, শসা, গাজর, বেগুন, কপি, লালশাক ও লাউপাতাসহ নানা জাতের টাটকা শাক বাজারে উঠেছে। বাজারে ক্রেতার উপচেপড়া ভিড়। স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত প্রতিটি সবজির দামই বেশ চড়া। আকারভেদে প্রতিটি লাউ ২০-৬০ টাকা, মুলা প্রতি কেজি ২৫ টাকা, সিম প্রতি কেজি ৫০, প্রতি ফুল কফি ৩০ টাকা, দেশি লেবু ৭ টাকা পিস, শসা ৩০-৪০ টাকা, বেগুন ৩০-৫০ টাকা, বরবটি ৪০-৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

ক্রেতা হাবিব উল্লাহ বলেন, লোকাল সবজির মজাই আলাদা। এর স্বাদ-গন্ধ মন কেড়ে নেয়। যদিও দামটা একটু বেশি। কেবল বেগুনই নয়, কলঘর বাজারে এখন শীতকালীন মুলা, লাউ, শিম, টমেটো, বরবটি, বাঁধাকপি, ফুলকপি সবই লোকাল এবং চালানি দুটোই আছে। তবে লোকাল সবজির দর ও কদর দুটোই বেশি। কলঘর কাঁচা বাজার করতে আসা আমিন নামের এক ব্যক্তি বলেন, একদিন পর পরই এখানে এসে নানা জাতের টাটকা সবজি কিনি। দাম একটু বেশি হলেও স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত সবজিতে স্বাদ-গন্ধটা একটু টের পাওয়া যায়।

তিনি বলেন, বর্তমানে সবজি খেতে মাত্রাতিরিক্ত সার, কীটনাশক ব্যবহার করায় এবং উচ্চ ফলনশীল জাতের বীজের কারণে সবজির সেই আদি স্বাদ যেন হারিয়ে যাচ্ছে। তাই এ ব্যাপারে কৃষি বিভাগকে আরো উদ্যোগী হতে হবে।

উপজেলার কলঘর কাঁচা বাজার, রামু বাজার, সদরের খরুলিয়া বাজার, বাংলাবাজার, লিংকরোড় বাজারসহ বিভিন্ন বাজারে এলাকার বিভিন্ন অস্থায়ী সবজি বাজারে এখন স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত সবজির বাজার জমজমাট। সবজি বিক্রেতারা জানান, স্থানীয় সবজির চাহিদা তৈরি হওয়ায় রামু-সদর ও আশপাশের উপজেলাগুলোতে গত কয়েক বছরে সবজি উৎপাদনও কয়েক গুণ বেড়েছে। লাভজনক হওয়ায় অনেকেই সবজি চাষে মন দিয়েছেন।