ডেস্ক নিউজ:
আমরা অতি শীঘ্র ২০২০-এ পদার্পণ করতে যাচ্ছি। আমাদের জীবন থেকে বিদায় নিচ্ছে আরও একটি বছর। নতুন বছরকে নতুন চেতনায় গ্রহণ করতে হবে আমাদের। করতে হবে মুহাসাবা ও আত্মসমালোচনা। এক বছরে কি পেলাম, কি অর্জন করলাম আর কি হারালাম! অথচ এই সময়টাতে আমাদের মধ্যে আত্মসমালোচনা দেখাই যায় না। দেখা যায় আত্মবিস্মৃতির প্রকট দৃষ্টান্ত।
নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে দেশের শহর-নগরগুলোতে জমে উঠেছে উদ্দাম নাচ-গানের আসর। উন্মাদনায় মেতেছে একশ্রেণির মানুষ। এই উন্মাদনা এতটাই বাঁধভাঙ্গা যে, তা কোনভাবেই ঠেকানো যায় না। থার্টি ফার্স্ট নাইট-এর সঙ্গে যুক্ত হয় ইহুদিদের বড় দিন-সহ আরও বেশ কিছু কালচার। এসব প্রত্যেকটা কালচারই জাতির জন্য এক মাহাঘাত এবং চরিত্র বিধ্বংসী। আবার একদল মানুষ মিষ্টি মিষ্টি কথা বলে মুসলিম সন্তানদের এগুলোতে ঢুকিয়ে দেয়। তাদের উপস্থাপনে মনে হয় এই উন্মাদনা অপরিহার্য একটি বিষয়।

এই উচ্ছৃঙ্খল পশ্চিমা কালচার বিগত দেড় দশক ধরে বাংলাদেশে চর্চিত হচ্ছে। দেশের ঈমানদার নাগরিকদের জন্য এর চেয়ে লজ্জার বিষয় আর কী হতে পারে? এটা শুধু লজ্জারই না বরং পরিতাপের বিষয়ও। আমরা কি কখনও তরুণদের এ থেকে বের করে আনার চেষ্টা করেছি। ভেবেছি তাদের ব্যাপারে। তাদের না বুঝিয়ে নিজের গুঁটিয়ে রেখেছি। এ কারণেই পরিস্থিতি আজ ভয়াবহ রুপ ধারণ করেছে।

আফসোস এবং খুব কষ্টের বিষয়, মুসিলম সন্তানরা মুহাসাবা ও আত্মসমালোচনা দূরে রেখে এ রাতে আল্লাহর নাফরমানীর সয়লাবে ভেসে যায়। ছেলেমেয়ের অবাধ মেলামেশা প্রকট রূপ ধারণ করে। যৌন উল্লাস করে বেড়ায়। তরুণ-তরুণীরা জোড়ায় জোড়ায় ঘুরে বেড়ায়, রেস্তোরাঁ, পার্ক-উদ্যান, নাইট ক্লাব ইত্যাদিতে। থার্টি ফার্স্ট নাইট ঘিরে প্রতি বছর ঘটে প্রচুর অপ্রীতিকর ঘটনাও।

নাইট ক্লাব ও ‘অভিজাত’ হোটেলগুলোতে বসে মদের আসর। তরুণ-তরুণীদের প্রলুব্ধ করার জন্য থাকে নানা রকম অশুভ আয়োজন। নারী ও মদে পঙ্কিল হয়ে ওঠে বছরের প্রথম দিনরাত্রিগুলো। এসব নারী, মদ আর নষ্টামিতে নিজেদের ভাসিয়ে না দিয়ে মুসলিম সমাজে বছরের নতুন দিন শুরু হওয়ার কথা ছিল দু রাকাত নামাজ দিয়ে। কিন্তু সেটা বাদ দিয়ে আমরা নাফারমানি ও পাপাচারের মধ্য দিয়ে নতুন বছরের সূচনা করি। যে বছরের শুরু হয় নারী মদ দিয়ে তা জাতির জীবনে কতটুকু সুফলতা বয়ে আনবে?

এই নোংরা কালচারটি আমদানী করেছেন আমাদের দেশেরই কিছু বুদ্ধিজীবী। এরা একটি শালীন সমাজের বুনিয়াদ গড়ার পরিবর্তে দেশটাকে অশ্লীলতার ভাগাড়ে পরিনত করতেই উৎসাহী। এরা একদিকে পহেলা বৈশাখের মাহাত্ম্য প্রচার করে বেড়ান আর অন্যদিকে ‘থার্টি ফার্স্ট নাইট’ উদযাপনের উস্কানী দিয়ে দেন। আশ্চর্যের বিষয় এই যে, এক দিকে মদ জোয়ার আসর খুলে দিয়ে যুবশ্রেণীকে তারাই বিভিন্ন রকম সুন্দর সুন্দর স্লোগান দিতে শিখিয়ে দেন, উপদেশ দেন ‘মাদক, সন্ত্রাস ও নারী নির্যাতনকে না বলুন’।

একজন সাধারণ রুচিশীল মানুষ কখনোই থার্টি ফার্স্ট নাইটের এই নোংরামি সমর্থন করতে পারেন না। তরুণদের ঠেলে দিতে পারেন না ধ্বংসের দিকে। এই ধরনের পাপাচার বন্ধ ও পতিহত করতে সচেষ্ট হওয়া প্রত্যেক সচেতন নাগরিকের অবশ্যকর্তব্য। একটি মুসলিম দেশের অভিভাবক হিসেবে দেশের সরকারের কর্তব্য এই ধরনের চরিত্রবিধ্বংসী বিজাতীয় উৎসব কঠোরহস্তে দমন করা। অশুভ নোংরা কাজ নয়, আমাদের নতুন বছর শুরু হোক দু’রাকাত নামাজ দিয়ে। আল্লাহ আমাদের সবাইকে বিজাতীয় মহামারি থেকে বাঁচিয়ে রাখুন। আমীন।