বার্তা পরিবেশক:

 

কক্সবাজার শহরের কলাতলীর হোটেল পিংক-শোর থেকে ইয়াবা ও অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনাকে পরিকল্পিত বলে সন্দেহ পুলিশের। পুলিশের ধারণা, পরিকল্পিতভাবে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে কতিপয় ব্যক্তি জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এ ফোন করে পুলিশকে মিসগাইড করেছে। এঘটনায় জরুরি সেবা ৯৯৯ এর অপব্যবহার এবং ঘটনা পরিকল্পিত কিনা খতিয়ে দেখতে তদন্তে নেমেছে পুলিশ।

রোববার রাতে মুঠোফোনে বিষয়টি জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মোহাম্মদ ইকবাল হোসাইন।

কক্সবাজার সদর মডেল থানা সূত্রে জানা গেছে, জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে কল পেয়ে সদর থানা থেকে দেয়া ম্যাসেজে কলাতলীর সুগন্ধা পয়েন্টের দক্ষিণপাশের পিংক-শোর নামক হোটেলের ব্যবস্থাপক আশরাফের অফিস কক্ষে অভিযান চালিয়ে একটি কাটা বন্দুক, দুটি কিরিচ ও প্রায় ২০০ ইয়াবা জব্দ করে উপপরিদর্শক তৈয়মুর।

ঘটনার পর সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহজাহান কবির জানিয়েছিলেন, মালিকানার বিরোধ থাকায় হোটেলটির জমির মালিক নাছির উদ্দিন মহসীন প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে এসব অস্ত্র ও মাদক কৌশলে রেখেছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ঘটনায় কাউকে আটক করা হয়নি। এ ব্যাপারে অধিকতর তদন্ত চলছে।

জানা গেছে, গত দুই বছর আগে আলির জাহাল এলাকার নাসির উদ্দিন মোহাম্মদ মহসীনের কাছ থেকে ১০ বছরের চুক্তিকে পিংক-শোর হোটেলটি নেয় টেকপাড়া এলাকার মো. রফিকুল ইসলাম। প্রায় আড়াই কোটি টাকার চুক্তি অনুযায়ী রফিকুল ইসলাম হোটেলটির ডেভলপার ও বিজনেস অপারেটর। কিন্তু চুক্তির মেয়াদ মাত্র দুই বছর না পেরোতেই লোপ বেড়ে যায় জমির মালিক নাসির উদ্দিন মোহাম্মদ মহসীনের।

বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে হোটেল পিংক-শোরের ডেভলপার ও বিজনেস অপারেটর মো. রফিকুল ইসলাম জানান, আইনগতভাবে চুক্তিভঙ্গের সুযোগ না থাকায় নানা ষড়যন্ত্র শুরু করেন নাসির উদ্দিন মোহাম্মদ মহসীন। এরই অংশ হিসেবে হোটেলের ব্যবস্থাপক আশরাফের অফিস কক্ষে সু-পরিকল্পিতভাবে গোপনে ইয়াবা ও অস্ত্র রেখে আমাদেরকে ফাঁসানোর চেষ্টা করে। তিনি পুলিশ প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, থানার ওসি সাহেব পরিকল্পিত ঘটনা বুঝতে পেরে আমাদেরকে তাৎক্ষণিক কোন ধরণের হয়রানি করেননি। একজন মানুষ কত নিকৃষ্ট হলে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ ’কে অপব্যবহার করে।

তিনি আরও বলেন, আমরা তাৎক্ষণিক টের পেয়েছিলাম মাদক ও অস্ত্র মজুদের ঘটনা সম্পূর্ণ সাজানো। কারণ মাদক ও ইয়াবা উদ্ধারের সময়ে কৌশলে নাসির উদ্দিন মো. মহসীন গং হোটেল দখলে নেওয়ার চেষ্টা করে। পরে পুলিশের কঠোর ভূমিকার কারণে অবৈধভাবে হোটেল দখলে ব্যর্থ হয়।

৯৯৯ এর অপব্যবহার এবং ইয়াবা ও অস্ত্র মজুদের ঘটনায় নাসির উদ্দিন গং এর সম্পৃক্ততা থাকার অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য নেওয়ার জন্য তাঁর (নাসির উদ্দিন মো. মহসীন) মুঠোফোনে একাধিককার যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু তিনি ফোনে সাড়া দেননি।

এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মোহাম্মদ ইকবাল হোসাইন বলেন, আমাদের ধারণা প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে পরিকল্পিতভাবে এঘটনা ঘটানো হয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে। যদি জনৈক ব্যক্তি প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে পরিকল্পিতভাবে ইয়াবা ও অস্ত্র মজুদ রাখে এবং ৯৯৯ এর অপব্যবহার করার প্রমাণ মিলে তাহলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তিনি বলেন, ৯৯৯ সেবা চালু করা হয়েছে জরুরি মুহুর্তে দ্রুত সেবা পাওয়ার জন্য। কিন্তু কোন ব্যক্তি যদি এই নাম্বারে ফোন করে মিসগাইড করে তাহলে সেটা মানা যায় না।