ইমরান বিন আলী: মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে ১৭৫ জন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে লাল গালিচা সংবর্ধনা প্রদান করেছেন চট্টগ্রাম সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন।

মঙ্গলবার চট্টগ্রাম মহানগরীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউট মিলনায়তনে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন পঞ্চম বারের মত মুক্তিযোদ্ধা সংবর্ধনা ও সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠান আয়োজন করে।

মেয়র নাছির উদ্দিন দায়িত্ব গ্রহণের পর গত ২০১৫ সালে প্রথম সংবর্ধনা ও সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। ২০১৫ সালে ১২০ জন মুক্তিযোদ্ধা, ২০১৬ সালে ১৫০ জন, ২০১৭ সালে ১৫০ জন, ২০১৮ সালে ১৭০ জন এবং ২০১৯ সালে ১৭৫ জন মুক্তিযোদ্ধার প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে সম্মানি প্রদান করা হয়।

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব‌্যে সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন বলেন, “মহান মুক্তিযুদ্ধের গৌরব গাঁথা প্রজন্মের কাছ থেকে মুছে ফেলার জন্য স্বাধীনতা বিরোধী চক্র নানামুখী অপতৎপরতা চালিয়েছে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা এই পরিকল্পনারই অংশ। এই হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধ্বংস করার পরিকল্পনা হয়।

‘মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে বিকৃতভাবে প্রজন্মের মাঝে উপস্থাপন করা হয়। দেশের প্রধানমন্ত্রী হয়ে শাহ আজিজুর রহমান জাতিসংঘে মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী ভাষণ দেন। শিক্ষা ব্যবস্থা সংস্কৃতিতে মুক্তিযুদ্ধের বিকৃত ইতিহাস উপস্থাপন করা হয়। প্রজন্ম যাতে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সম্পর্কে বিভ্রান্ত হয় সেজন্য স্বাধীনতা বিরোধীরা সকল অপকর্ম করেছে।”

মেয়র বলেন, ‘জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদেরকে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দেয়ার দায়িত্ব নিতে হবে। আপনাদের দায়িত্ব এখনো শেষ হয়ে যায়নি। প্রজন্মের মাঝে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সঞ্চারণের এই যুদ্ধেও আপনাদেরকে নামতে হবে। তাদের মাঝে যুদ্ধের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরতে হবে। আমাদের অকৃত্রিম বন্ধু ভারত, রাশিয়ার অকুণ্ঠ সমর্থন সহযোগিতার কথা বলতে হবে। একমাত্র বন্ধুত্বের সম্মান মর্যাদা স্থাপন করতে গিয়ে তারা যে অনন্য নজির সৃষ্টি করেছে তা প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে হবে।’

ভারপ্রাপ্ত ভারতীয় সহকারী হাই কমিশনার শুভাশীষ সিনহা বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ভারত সরকার পাঁচ বছরের ভিসা চালু করেছে। প্রতি বছর ১০০ জন মুক্তিযোদ্ধাকে ভারতে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদানের ব্যবস্থা করা হয়েছে।’

সংবর্ধনা সভায় চট্টগ্রামে নিযুক্ত ভারতীয় হাই কমিশনের ভারপ্রাপ্ত সহকারী হাই কমিশন শুভাশীষ সিনহা, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, রাশিয়ান কনসাল জেনারেল স্থপতি আশিক ইমরান, প্যানেল মেয়র ড. নিছার উদ্দিন আহমদ মঞ্জু, চসিক সমাজ কল্যাণ স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতি সলিমুল্লাহ বাচ্চু, জাতির জনকের পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষক এম এ হান্নানের সন্তান এস এম মাহফুজ, প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা সুমন বড়ুয়া, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মুফিদুল আলম, মহানগর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোজাফফর আহমেদ, মুক্তিযোদ্ধা সংগঠক মহিউদ্দিন রাশেদ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।