বার্তা পরিবেশক:

কক্সবাজার সদরের ঝিলংজা ইউনিয়নের খরুলিয়ায় ভুয়া পাওয়ার অব এ্যাটর্নি দেখিয়ে নবনির্মিত বাড়ি দখলের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। ঘাটপাড়ার জসিম উদ্দীন ও আবছার কামালের বিরুদ্ধে এই দখলবাজির অভিযোগ করেছেন একই এলাকার মাওলানা মোহাম্মদ এমদাদুল্লাহ। দুই মাস আগে রাতের আঁধারে তালা ভেঙে ওই বাড়িতে ঢুকে পড়ে জসিম উদ্দীন ও আবছার কামাল এবং তাদের ভাড়াটে লোকজন। অস্ত্র ও পেশি শক্তির জোরে দখলদাররা এখনো বাড়িটি দখল করে রেখেছে। এই ঘটনায় এলাকায় বেশ সমালোচনা চলছে। এর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, খরুলিয়ার মৌজার আওতাধীন আর.এস ৫৬৪ নং খতিয়ানের আর.এস ৩৯৪৬, ৩৯৪৭ নং দাগাদির .৪৫ একর জমির তুলনামূলক বি.এস ২৪৪ নং খতিয়ানের বি.এস ৫১৩৬ ও ৫১৩৭ দাগাদির .৪০ একর জমির আন্দর .২০৭৫ একর জমির নিজস্ব কেনা ও পৈত্রিকভাকে মালিক হলেন মাওলানা মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ। তবে এখন পর্যন্ত ওই জমির পৈত্রিক অংশের ভাগবাটোয়ারা হয়নি। অন্যদিকে মাওলানা মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহর স্ত্রী-সন্তানহীন ভাই মোহাম্মদ ছানা উল্লাহ প্রায় ১৫ বছর আগে নিখোঁজ হন। এর মধ্যে মাওলানা মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ ওই জমির তার কেনা অংশে পাকা বাড়ি নির্মাণ করেন। বাড়ি নির্মাণ শেষ হওয়ার পর পরই আকস্মিক গত ১৬ অক্টোবর গভীর রাতে ভাড়াতে লোকজন নিয়ে অস্ত্রসহকারে মাওলানা মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহর নবনির্মিত বাড়িটি দখল করে ফেলে জসিম উদ্দীন ও আবছার কামাল এবং তাদের। এসময় জবরদখলকারীরা ওই বাড়িতে থাকা মহিলাসহ সব সদস্যদের অস্ত্রের মুখে হুমকি দিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দেয়।

ভুক্তভোগী মাওলানা মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ বলেন, আমার ভাই মোহাম্মদ ছানা উল্লাহ দীর্ঘ ১৫ বছরের বেশি সময় ধরে নিখোঁজ রয়েছেন। তার স্ত্রী-সন্তানও নেই। অন্যদিকে এখনো আমাদের পৈত্রিক ভিটাসহ অন্যান্য সম্পত্তির ভাগবাটোয়ারা হয়নি। এই নিয়ে আদালতে একটি বন্টননামার মামলা চলমান রয়েছে। তবে ওই ভিটার সাথে লাগোয়া আমার কেনা অংশে আমি সম্প্রতি পাকা বাড়ি নির্মাণ করি। এই জন্য অন্যভাইদের সাথে আমার সমাঝোতা হয়। আমার বাড়ির নির্মাণ করতে আমার এক বছরের বেশি সময় লেগেছে। ওই সময়ের মধ্যে কেউ কোনো ঝামেলা বা আপত্তি করেনি। কিন্তু নির্মাণ শেষ হয়ে বাড়িতে ঢুকার কয়েক দিনের মধ্যে আমার নিখোঁজ ভাই মোহাম্মদ ছানা উল্লাহর কর্তৃক একটি এ্যাটর্নি পাওয়ার দেখিয়ে জসিম উদ্দীন ও আবছার কামাল ভাড়াটে লোকজন দিয়ে আমার বাড়িটি দখল করে ফেলেছে। থানা থেকে নোটিশ দিয়ে ডাকা হলেও তারা থানায় যায়নি। পরে পুলিশ তদন্তে যায়, দখল ছেড়ে বলে তা গ্রাহ্য করেনি তারা। উল্টো আরো লোকজন এনে বাড়িতে রাখে।

মাওলানা মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ আরো বলেন, জসিম উদ্দীন ও আবছার কামাল যে এ্যাটর্নি পাওয়ার দেখাচ্ছে তা সম্পূর্ণ ভুয়া। কেননা আমার ভাই ১৫ বছরের বেশি সময় ধরে নিখোঁজ রয়েছে এবং এই সময়ের মধ্যে সে আমাদের সাথে কোনো রকম যোগাযোগ করেনি। কিন্তু আকস্মিক ১৫/১০/২০১৯ ইং তারিখের এ্যাটর্নি পাওয়ার দেখিয়ে জমি দাবি করছে জসিম উদ্দীন ও আবছার কামাল। ওই এ্যাটর্নি পাওয়ারে আমাদের রক্তের সম্পর্কের কোনো স্বজন সনাক্তকারী নেই। তাতে এটি শতভাগ ভুয়া বলে প্রতীয়মান। যদিও জবরদখলকারীরা আমার ভাইয়ের পৈত্রিক অংশ দাবি করছে। কিন্তু বাড়িটি নির্মাণ করেছি তা সম্পূর্ণআমার কেনা জমির অংশ। আমার স্পষ্ট ধারণা যে, আমার নিখোঁজ ভাই নয়; ঘরের অন্য কেউ ষড়যন্ত্র করে জসিম উদ্দীন ও আবছার কামালকে ভাড়া করে আমার নবনির্মিত বাড়িটি দখল করিয়েছে। বাড়িটি দখল ছেড়ে দিতে বললে তারা ৩৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করছে।

মোহাম্মদ ছানা উল্লাহ নিরীহ হওয়ায় জবরদখলকারীরা অস্ত্রসহ নানাভাবে হুমকি দিয়ে বাড়িটি জবর দখল করে রেখেছে।