পেকুয়া প্রতিনিধি:
কক্সবাজারের মাতামহুরী নদীর পেকুয়া পয়েন্ট থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে হুমকির মুখে পড়েছে বাঘগুজারা সেতু। গত কয়েক মাস ধরে প্রকাশ্যে নদীর মধ্যখানে নৌকায় ড্রেজার মেশিন বসিয়ে তলদেশ থেকে বালু উত্তোলন করলেও প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে কোন ধরনের আইনি ব্যবস্থা নিচ্ছে না সংশ্লিষ্ট প্রশাসন। এ নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, চকরিয়া ও পেকুয়া উপজেলার উপর দিয়ে প্রবাহমান মাতামুহুরী নদীর মেহেরনামা বাগুজারা ব্রীজ পয়েন্টের গুরা মিয়া বাজারের পূর্ব পার্শ্বে অবৈধ ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করছে প্রভাবশালী এক ব্যক্তি। গত কয়েক মাস ধরে চলা এই বালু উত্তোলনের পর তা ট্রাকে বিভিন্ন জায়গায় বিক্রির জন্য নিয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে বাঘগুজারা সেতুর পাশে ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন করায় হুমকির মুখে পড়েছে জনগুরুত্বপূর্ণ সওজের সেতুটি। ভেঙ্গে যাচ্ছে নদীর তীর। এছাড়া প্রতিদিন বালু বোঝাই বড় বড় ট্রাক চলাচলের কারণে ভেঙ্গে ক্ষত-বিক্ষত হয়ে যাচ্ছে নদীর তীর সংলগ্ন বেড়িবাঁধ। এতে করে আগামী বর্ষায় বন্যায় ব্যাপক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হবে এলাকাবাসী।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলো জানা যায়, স্থানীয় প্রভাবশালী পূর্ব বিলহাচুরার মৃত সামসুল আলমের পুত্র মোঃ সালাউদ্দিনের নেতৃত্বে স্থানীয় একটি চক্র অবৈধ বালু ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। তারা অবৈধ উপায়ে বালু উত্তোলন ও বিক্রি করে হাতিয়ে নিচ্ছেন লাখ লাখ টাকা। এর ফলে রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। হুমকির মুখে পড়েছে স্থানীয় জনপদ।

স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, প্রভাবশালীরা স্থানীয় প্রশাসনকে কোন ধরনের তোয়াক্কা না করেই অনুমতি ছাড়া প্রকাশ্যে মাতামুহুরী নদী থেকে বালু উত্তোলন করছেন। প্রতিবাদ করতে গেলে মিথ্যা মামলা জড়িয়ে হয়রানি ও গুম করার হুমকি পর্যন্ত দিয়ে থাকেন প্রভাবশালী ওই সালাউদ্দিন। এমনকি একটি সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসী বাহিনী গঠন করে তার উত্তোলনকৃত বালু ছাড়া অন্য কারো কাছ থেকে বালু ক্রয় না করার জন্য হুমকি দিয়ে থাকেন। যার কারণে স্থানীয়রা অসহায় হয়ে বালু না লাগলেও তার কাছ থেকে বালু ক্রয় করতে বাধ্য হচ্ছেনা।

জানা গেছে, বালু উত্তোলন করার পয়েন্টের কাছাকাছি প্রাথমিক বিদ্যালয়, উচ্চ বিদ্যালয়, মাদ্রাসা ও একটি মসজিদ রয়েছে। রাতদিন ড্রেজার মেশিনের শব্দে শিক্ষার্থী ও মুসল্লীদের ব্যাপক অসুবিধা হলেও প্রতিবাদ করার সাহস পায়না। কারণ তার বাহিনীর সদস্যরা সব সময় অস্ত্র সজ্জিত অবস্থায় থাকে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য আক্ষেপ করে বলেন, প্রশাসনের চোখের সামনে বালু উত্তোলন করলেও তারা কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় আমাদের করার কিছুই নাই।

উপজেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, বেশ কয়েকবার অবৈধ বালু উত্তোলনস্থানে অভিযান চালানো হয়েছে। অভিযানের পরপরই তারা আবারো ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন শুরু করে। এবার শুধু অভিযান নয় আইনগত ব্যবস্থাও নেওয়া হবে।