নিজস্ব প্রতিবেদক

কক্সবাজার সদরের ইসলামাবাদ-ইসলামপুর ইউনিয়নের মধ্যবর্তী এলাকায় জোয়ার-ভাটার খাল দখল করে মৎস্য চাষ ও চিংড়ি ঘের নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় একদল ভূমিদস্যুর বিরুদ্ধে। দীর্ঘদিন ধরে এই চক্রটি খালের উপর অবৈধ ভাবে বাঁধ দিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড পাউবো’র ১৬ একর সরকারি খাস জমি দখল করে মাছ চাষ ও ঘের নির্মাণ করার পরিকল্পনা চালিয়ে আসলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিরবতায় জনমনে বিরূপ মন্তব্য দেখা দিয়েছে।

ঐতিহ্যবাহী এ খাল দখল করে মৎস্য চাষ ও ঘের নির্মাণের ফলে সেখানকার হাজার হজার কৃষক কৃষানীর চাষাবাদ ও সবজি চাষে পানি প্রবেশ করে হাজার হাজার টাকার লোকসান হচ্ছে এবং অদূর ভবিষ্যতেও হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। তাছাড়া উক্ত বাঁধ ও দখলের কারণে শত শত দিনমজুর মৎস্য আহরণকারীর জীবকার পথরুদ্ধ হয়ে পড়েছে। পাশাপাশি খালে বাঁধ দেওয়ায় পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে খালটি মৃত খালে পরিণত হয়েছে এছাড়া পরিবেশের ভারসাম্য বিনষ্ট হচ্ছে। এসব বিবেচনা করে সঙ্গবদ্ধ দখলবাজদের বিরুদ্ধে ৫ জন সচেতন কৃষক লিখিত ভাবে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক ও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে অভিযোগ দায়ের করেছে। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ইসলামপুর দক্ষিণ খান ঘোনা এলাকার মৃত ফরিদ মেম্বারের ছেলে গিয়াস উদ্দীন বাবুল, আবদুল মজিদের ছেলে মোজাম্মেল হক, ফরিদুল আলমের ছেলে আনোয়ার সাদেক, ধর্মের ছড়া এলাকার মৃত বশরের ছেলে বাচ্চু মিয়া, বৈদ্য পাড়া এলাকার জহির আহমদের ছেলে মোঃ মিজান প্রকাশ বার্মাইয়া, ধর্মের ছড়ার মৃত আহমদ হোসনের ছেলে জসিম উদ্দিন, বৈদ্যপাড়া মৃত বাহাদুরের ছেলে দেলোয়ার হোসেন আপ্পিসহ অজ্ঞাতনামা আরো ৪/৫ জন ভূমিদস্যু চক্র দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে ইসলামাবাদ ইউনিয়নের বোয়াল খালী জোয়ার-ভাটা খালের উপর মাটির বাঁধ দিয়ে আশপাশের ফসলী জমির চাষাবাদের ক্ষতিসাধন করে আসছে। বিষয়টি স্থানীয় সচেতন জনগণ ইসলামাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে অবগত করলে তিনি বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। তাই বাধ্য হয়ে জনস্বার্থে বোয়ালখালী এলাকার জাফর আলম, মোজাম্মেল হক, মোহাম্মদ করিম, হেলাল উদ্দীন, শামসুদ্দিনরা বাদী হয়ে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক (ডিসি), উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ( ইউএনও) পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের বিষয়টি আমলে নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এইচ এম মাহফুজুর রহমান একজন অফিসারকে সরেজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানান ইউএনও। ভূমিদস্যু চক্রের নেতৃত্ব দেয়া গিয়াস উদ্দীন বাবুলের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে বলে জানা গেছে। এলাকাবাসী জানান দীর্ঘদিন জেল খেটে কয়েকমাস আগে বের হয়েই আবারো রকমারী অপকর্মে জড়িয়ে পড়েছে বাবুল। অভিযোগের ব্যাপারে জানতে অভিযুুক্তদের সাথে বিভিন্ন মাধ্যমে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়, কিন্তু কয়েকজন বলছে
তারা পানি উন্নয়ন বোর্ড পাউবো থেকে লীজ নিয়েছে। লীজের কোন কাগজ পত্র আছে কি না জানতে চাইলে কেন মন্তব্য করেননি। স্থানীয় কৃষকরা দ্রুত সময়ের মধ্যে অবৈধভাবে খালের উপর করা বাঁধ অপসারণ ও সরকারি জায়গা দখলমুক্ত করতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।