রামুতে বিজয় মেলার বর্ণাঢ্য উদ্বোধন

সোয়েব সাঈদ, রামু

কক্সবাজারের রামুতে ৭দিন ব্যাপী মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলার বর্ণাঢ্য শুভ উদ্বোধন হয়েছে। “মুক্তিযুদ্ধের বিজয় বীর বাঙ্গালির হাজার বছরের পরাধীনতার প্রতিশোধ’ এ প্রতিপাদ্যে মেলার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন, কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা।

রবিবার (১৫ ডিসেম্বর) বিকাল চারটায় রামু স্টেডিয়ামে বিজয় মেলার শুভ উদ্বোধন করেন রামু উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল হক চেয়ারম্যান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিজয়মেলা উদযাপন পরিষদের চেয়ারম্যান, কক্সবাজার-৩ (সদর-রামু) আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব সাইমুম সরওয়ার কমল।

বিকালে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন এবং বেলুন ও শান্তির প্রতীক পায়রা উড়িয়ে মেলার শুভ উদ্বোধন করেন অতিথিবৃন্দ। এসময় রামু উপজেলার বীর মুক্তিযোদ্ধা, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সংস্কৃতিকর্মী, সাংবাদিক সহ সর্বস্তুরের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

পরে বিজয় মঞ্চে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা বলেন, যারা মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতা করেছিলো, তারা আজ পরাজিত। কিন্তু তারা স্বাধীনতার সুফল যাতে মানুষ ভোগ করতে না পারে, সেজন্য উঠে-পড়ে লেগেছে। স্বাধীনতা বিরোধীরা এখনো সর্বত্র ওৎপেঁতে রয়েছে। যখন এদেশে নির্বাচন আসে তখন স্বাধীনতা বিরোধী সব দল একত্র হয়ে যায়। ধানেরশীষ, দাঁড়ি পাল্লা যে মার্কাই হোক, তাদের লক্ষ্যে থাকে আওয়ামীলীগের বিরোধীতা করা। মুক্তিযোদ্ধারা এদের বিরুদ্ধেই যুদ্ধ করেছিলেন। একটি সুন্দর, উন্নয়নমুখি, সম্প্রীতির দেশ গড়ার জন্যই মুক্তিযোদ্ধারা জীবন বাজি রেখে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। মুক্তিযোদ্ধাদের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করে এদেশে উন্নয়ন-অগ্রগতির পথে এগিয়ে নিচ্ছেন, জননেত্রী প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশের প্রতিটি কল্যাণকামী মানুষকে তাই আওয়ামীলীগের পতাকাতলে সমবেত হয়ে জননত্রেী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করে মুক্তিযুদ্ধে চেতনা সমুন্নত রাখতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে সাংসদ সাইমুম সরওয়ার কমল বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে রামুতে এবারও ব্যাপক আয়োজনে ৭দিন ব্যাপী মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বিগত বছরের ধারাবাহিকতায় রামুর বিজয় মেলাকে দেশের বৃহত্তম বিজয় মেলায় রূপদান করতে ব্যাপক প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ইতোমধ্যে রামু স্টেডিয়ামের সীমানা দেয়ালে মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক মোরাল অংকন, মেলার মাঠে বিজয় টাওয়ার, বিজয় মঞ্চ, ষ্টল নির্মাণ, প্রধান সড়কে তোরণ নির্মাণসহ করা হয়েছে। ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসের পরদিন ১৭ ডিসেম্বর থেকে ২৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত এ বিজয়মেলা উদযাপন করা হবে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন, মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা উদযাপন পরিষদের মহাসচিব ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান রিয়াজ উল আলম জানান। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে স্মৃতিচারণ করেন, বীর মুক্তিযোদ্বা নুরুল ইসলাম বাঙ্গালী ও মমতাজ আহমদ।

উল্লেখ্য মেলায় প্রতিদিনের অনুষ্ঠানে থাকবে, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংর্বধনা, জাতীয়, আঞ্চলিক ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দের স্মৃতিচারণ, আবৃত্তি, নৃত্য, গান, নাটক। দেশী-বিদেশী পন্যের শতাধিক ষ্টল নিয়ে বসছে এ বিজয় মেলা। মেলার নিরাপত্তায় পুলিশ ও আনসার বাহিনীর পাশাপাশি বিজয়মেলা উদযাপন পরিষদের পক্ষ থেকে তিন শতাধিক নেতা-কর্মী সার্বক্ষণিক নিয়োজিত থাকবেন। এছাড়া মেলার পুরো এলাকা সিসি ক্যামরা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত থাকবে।

মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা উদযাপন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব সাইমুম সরওয়ার কমল এমপি ও মহাসচিব রিয়াজ উল আলম বিজয় মেলা সফল ও সার্থক করতে সকলের অংশ গ্রহন ও সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেছেন।