নদীর চলে নির্গত গ্যাস দেখতে উৎসুক জনতার ভিড়।

মো. নুরুল করিম আরমান, লামা প্রতিনিধি :

বান্দরবানের লামা উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ইয়াংছা এলাকার পর এবার মাতামুহুরী নদীর চরে অনবরত প্রাকৃতিক জ্বালানি গ্যাস সদৃশ খনিজ পদার্থ নির্গতের সন্ধান পাওয়া গেছে। উপজেলার রুপসীপাড়া ইউনিয়নের বালুর চর পাড়া সংলগ্ন ঝিরির মুখে এ গ্যাস নির্গত হচ্ছে। উপজেলা সদর থেকে মাত্র ৪ কিলোমিটার দূরে এর অবস্থান। গ্যাস নির্গমনের খবর ছড়িয়ে পড়লে প্রতিদিন দিয়াশলাই নিয়ে উৎসুক জনতা ওই স্থানে ভিড় জমাচ্ছে। তবে গত দু’ দিনেও সেখানে যায়নি সংশ্লিষ্ট কোন বিশেষজ্ঞদল। ফলে জানা যাচ্ছেনা আসলেই গ্যাসের কোন মজুদ আছে কিনা সেখানে। গ্যাস পাওয়া গেছে, এটি আনন্দের খবর হলেও এ গ্যাস আবার কোন বিপদ ডেকে আনে কিনা সে ব্যাপারেও চিন্তিত এলাকার মানুষগুলো। গ্যাস নির্গমনের লক্ষণগুলোর প্রেক্ষিতে আপাতত সম্ভাবনা উজ্জল বলা চলে বলে দাবী করে স্থানীয়া।

স্থানীয় বালুর চর পাড়ার ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠি বাসিন্দা খেজারি মার্মা (৫৮) জানায়, গত সোমবার সকালে তিনি জমিতে পানি সেচ দেওয়ার জন্য মাতামুহুরী নদীর চরে পাম্প মেশিন বসাতে গিয়ে বালুর চরে অনবরত বুদ বুদ শব্দ শুনতে পান। এক পর্যায়ে ওই স্থানের বালু সরিয়ে গর্ত খুঁড়ে গ্যাসের গন্ধও পান তিনি। পরে গ্যাসের বিষয়টি নিশ্চিতের জন্য তিনি দিয়াশলাইয়ের কাঠি দিয়ে আগুন ধরিয়ে দিলে দাউ দাউ করে জ্বলতে থাকে গ্যাস। তিনি আরো বলেন, ওই স্থানে গত দুই তিন বছর ধরে গ্যাস বের হওয়ার বুদ বুদ শব্দ শুনে আসছি। তবে বড় কোন গাছ কিংবা ময়লা আবর্জনা পঁচে বালুর নিচে চাপা পড়ে বায়ু গ্যাসের সৃষ্টি হতে পারে বলে প্রাথমিক ধারণা করছেন, আরেক বাসিন্দা উথুইচামং মার্মা।

ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য মোহাম্মদ শফি বলেন, আমরা দিয়াশলায়ের কাঠি দিয়ে আগুন লাগিয়ে দেখি চরের বালুর উপরে গ্যাসের আগুন জ্বলছে। এতে বুঝা যায় সেখানে গ্যাস উঠছে। এদিকে স্থানীয় দিদার, আবুল হোসেন, প্রবীণ ব্যক্তি মুহিবুল্লাহ মিয়াজী ও এনজিও কর্মী মামুন সিকদার জানান, গ্যাস নির্গত হওয়ার দৃশ্যটি দেখে ধারণা হচ্ছে, ওই স্থানে বিপুল পরিমাণ গ্যাস মাটির নিচে মজুদ রয়েছে।

গ্যাস নির্গত হওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে রুপসীপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ছাচিংপ্রু মার্মা জানান, গ্যাসের যে পকেট মুখ পাওয়া গেছে তার ভিত্তিতে পর্যাপ্ত অনুসন্ধান হলেই এখানে প্রাকৃতিক খনি রয়েছে কিনা সঠিক বলা যাবে। এটি প্রাকৃতিক নাকি বায়ু গ্যাস এ বিষয়ে এখনো নিশ্চিত বলা যাচ্ছেনা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার নূর-এ-জান্নাত রুমি বলেন, নদীর চরে থেকে গ্যাস বের হওয়ার খবর কেউ জানায়নি। বিষয়টি প্রাথমিক পর্যবেক্ষণ শেষে পেট্রো বাংলা এবং খনিজ সম্পদ মন্ত্রনালয়কে জানানো হবে। এ লক্ষণ প্রেক্ষিতে আপাতত সম্ভাবনা উজ্জল বলা চলে বলেও জানান তিনি।