শাহেদ মিজান, সিবিএন:
বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন বাফুফের নির্দেশনা অমান্য করে অনেকটা চুপিসারে কথিত দ্বিতীয় বিভাগ ফুটবল লীগ আয়োজন করতে গিয়ে ধরা খেল কক্সবাজার ফুটবল এসোসিয়েশন ডিএফএ।ম্যাচ শুরুর মাত্র একদিন আগেই কক্সবাজার ডিএফএ সভাপতি ফজলুল করিম সাঈদীর কাছে পত্র প্রেরণের মাধ্যমে বাফুফে সাফ জানিয়ে দেয় তাদের কঠিন সিদ্ধান্তটি। ১০ ডিসেম্বর বিকেলে রামু খিজারী হাই স্কুল মাঠে ডিএফএ’র মনগড়া এই ফুটবল লীগ শুরুর কথা ছিল।

বাফুফে প্রেরিত চিঠির সূত্র থেকে জানা যায়- কক্সবাজার জেলা ফুটবল এসোসিয়েশন কতর্ৃক কোনরুপ বিজ্ঞপ্তি প্রদান ব্যতিরেকে এবং বাফুফেকে অবহিতকরণ ব্যতীত ২য় বিভাগ ফুটবল লীগ আয়োজন করার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে যা প্রকৃত পক্ষে কক্সবাজার ফুটবল লীগ-২০১৯ এর পরে আয়োজন করা ব্যঞ্চনীয়।
উল্লেখিত আলোকে কক্সবাজার জেলা ফুটবল এসোসিয়েশন কতর্ৃক কক্সবাজার জেলা ফুটবল লীগ-২০১৯ আয়োজন কওে নিয়মানুযায়ী বিজ্ঞপ্তি প্রদানের মাধ্যমে দ্বিতীয় বিভাগ ফুটবল লীগ আয়োজনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য অনুরোধ জানান বাফুফে সাধারন সম্পাদক মোঃ আবু নাঈম সোহাগ। এ কক্সবাজার জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও কক্সবাজার জেলা ফুটবল লীগ কমিটির আহবায়ক নাছির উদ্দিনের কাছে অনুলিপি পাঠানো হয়েছে।
সূত্র জানায়-কক্সবাজার জেলা ফুটবল এসোসিয়েশনের মেয়াদ আছে আর মাত্র তিন মাস। চার বছর মেয়াদের তিন বছর ৯ মাস অতিবাহিত হলেও নিবন্ধিত প্রথম বিভাগের ১৬ টি দল নিয়ে একটি ফুটবল লীগও আয়োজন করতে পারেনি ব্যর্থ ডিএফএ। অথচ মেয়াদের শেষ সময়ে এসে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের নির্দেশনা ও বাইলজ অমান্য করে কক্সবাজার ডিএফএ অতি গোপনে আয়োজনে মাঠে নামে কথিত দ্বিতীয় বিভাগ ফুটবল লীগ। আগামী তিন মাস পর অনুষ্ঠিতব্য ডিএফএ নির্বাচনকে সামনে রেখে শুধু মাত্র ভোটের হিসেবে বিশেষ সুবিধা নিতে ভাগ- ভাটোয়ারার ছয়টি টিমকে নিয়ে অতি গোপনে এই ফুটবল নাটক আয়োজন করে। আজ ১০ ডিসেম্বর ব্যস্ততম রামু খিজারী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে মাত্র একদিনের অনুমতি নিয়ে কক্সবাজার ডিএফএ ভোটবাজির এই নাটক মঞ্চস্থ করতে চেয়েছিল। এটি স্বীকার করেছেন খোদ ডিএফএ সভাপতি ফজলুল করিম সাঈদী। অভিযোগ রয়েছে-কক্সবাজারের মিডিয়াকে পাশ কাটাতে আয়াজকরা কক্সবাজার বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন স্টেডিয়ামের পরিবর্তে ভেন্যু হিসেবে বেছে নেয় রামু খিজারী মাঠকে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান মর্যাদাবান করতে আয়োজক ডিএফএ অতিথিদের তালিকায় নিয়ে আসে জনপ্রিয় রাজনৈতিক নেতা, ক্রীড়া সংগঠক, প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ।

সূত্র আরো জানায়-নাম গোপন রাখা এই ছয়টি টিমের মধ্যে রামুর অংশগ্রহনকারী কোন টিম নেই। আবেদন করেও কক্সবাজার ডিএফএ’র অনুমোদন পায়নি ঐতিহ্যবাহি রামু ব্রাদর্স ইউনিয়ন, কক্সবাজার আবাহনী, রামু শতদলের মতো জেলার নাম করা ফুটবল ক্লাব গুলো। ডিএফএ এর অভ্যন্তরের গোপন আঁতাতের কক্সবাজার শহর ও চকরিয়ার এই ছয়টি টিমের এক দিনের গোপন আতিথেয়তায় রামু সচেতন ফুটবলামোদিদের মাঝে তীব্র ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছিল। তাছাড়া এসব ক্লাবের মালিক ডিএফএ’র কর্মকর্তারা হওয়ায় দ্বিতীয় বিভাগের দলবদলের রেজিষ্ট্রেশন/ টোকেন কিছুরই ধার ধারেনি।

অভিযোগ রয়েছে- কক্সবাজার ডিএফএ বিগত তিন বছরে প্রথম বিভাগে নিবন্ধিত ১৬ টি টিমকে নিয়ে এনেকটা ছেলে খেলা করে। বার বার প্রথম বিভাগ ফুটবল লীগের সূচি প্রকাশ করে টিম গুলোকে আর্থিক ভাবে ক্ষতি গ্রস্থ করে। কর্মকর্তাদের নামে নতুন করে জন্ম দেয়া এসব টিমকে প্রথম বিভাগের নামে চালিয়ে দেয়ার ব্যর্থ অপচেষ্ঠা করে। সর্বশেষ বাফুফে এক নির্দেশনায় পুরনো ষোলটি দলকে নিয়ে প্রথমে প্রথম বিভাগ ফুটবল লীগ আয়োজনের নির্দেশনা দেয়। কিন্তু তা না মেনে কক্সবাজার ডিএফএ আগামীর ভোটের হিসেব কষে বাফুফের নির্দেশনা আমান্য করে দ্বিতীয় বিভাগ ফুটবল লীগের নামে একটি ম্যাচ দিয়ে রামু নাটকের অবতারনা করতে চেয়েছিল। এরপর এই ফুটবল নাটকের সর্বশেষ দৃশ্য কোথায় হবে তাও কক্সবাজারবাসি জানেই না। ইতোমধ্যে ডিএফএ’র নিবন্ধিত ১৩ টি ফুটবল দলের কর্মকর্তারা প্রতিকার চেয়ে গত ৩ ডিসেম্বর বাফুফের সভাপতি/ সাধারন সম্পাদক বরাবর যৌথ আবেদন করে। এই আবেদনের প্রেক্ষিতেই বাফুফের এ সিদ্ধান্ত।