বিশেষ সংবাদদাতা:
পীর সাহেব বায়তুশ শরফ বাহারুল উলুম আল্লামা কুতুবউদ্দিন ( ম. জি. আ) বলেছেন, বিশ্বনবী ও শ্রেষ্ট নবীর উম্মাত হিসেবে আমরা বড় ভাগ্যবান। তিনি বলেন, বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ সঃ এর নুর আল্লাহর সৃষ্টির সবকিছুর আগে সৃষ্টি করে সকল নবী রসুলের শেষে পাঠিয়েছেন। বিশ্বনবী, শেষ নবী ও শ্রেষ্ট নবী হিসেবে তাঁকে দুনিয়াতে পাঠিয়েছেন। তাই শেষ নবী ও শ্রেষ্ট নবীর উম্মাত হিসেবে আমরা যারপর নাই ভাগ্যবান। কিয়ামতের দিন সকল আম্বিয়া আওলিয়ারা তাকবেন শেষ নবী, আমাদের নবী সঃ এর পতাকার নীচে।

ফাতেহায়ে ইয়াজ দাহুম হযরত বড়পীর সাহেব এর স্মরন সভা। গাউছে পাক বড়পীর হযতর আব্দুল কাদের জিলানী রহ. ছিলেন বিশ্বনীর সবচেয়ে বড় আশেক ও নবীজীর অনুসারী। এই ইছালে ছওয়াব মাহফিল ঈমানী, রূহানী মাহফিল। এই দিনকে গিয়ারবী শরীফ বলা হয়ে থাকে। এই দিনের স্মরণে কক্সবাজার বায়তুশ শরফে প্রতিবছর আয়োজন করা হয় ইছালে ছওয়াব মাহফিল।

এ উপলক্ষে গতকাল থেকে বায়তুশ শরফ কমপ্লেক্সে লাখো দ্বীনদার ঈমানদার মুসলমানদের সমাগম হয়েছে। গতকাল থেকে খতমে কোরআন, খতমে বোখারী ও জিকর মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। এই রুহানী নুরানী মাহফিলে যারা উপস্থিত হওয়ার সুযোগ পেয়েছেন তারা অবশ্যই ভাগ্যবান। হযরতের দ্বীনি খেদমত ও মানব সেবার পথ অনুসরণ করে বায়তুশ শরফ তাজকিয়া, দ্বীনি খেদমত ও মানব সেবার বহুমুখী কার্যক্রম নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। শিরক বেদায়ত মুক্ত এই অঙ্গনে আল্লাহর হাজার হাজার বান্দা ও আশেকে রসুলেরা তাজকিয়ায়ে নফসের পাশাপাশি বিভিন্ন দ্বীনি সেবা গ্রহণের সুযোগ পাচ্ছেন।

রবিবার (৮ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় কক্সবাজার বায়তুশ শরফ কমপ্লেক্স ময়দানে দুই দিন ব্যাপী মাহফিলে ইছালে ছওয়াব এর প্রথম দিনে পীর সাহেব বায়তু শরফ আল্লামা কুতুবউদ্দিন একথা বলেন।

উল্লেখ্য প্রতিবছরের ন্যায় বায়তুশ শরফ আঞ্জুমানে ইত্তেহাদ বাংলাদেশের অধীনে কক্সবাজার বায়তুশ শরফ কমপ্লেক্সে অনুষ্ঠিত হয় ফাতেহায়ে ইয়াজদাহুম উলক্ষ্যে ‘পবিত্র মাহফিলে ইছালে ছওয়াব’। বড়পীর হযরত আব্দুল কাদের জিলানী রহ. এর ইছালে ছওয়াব উপলক্ষে এই ফাতেহায়ে ইয়াজদাহুম ও ইছালে ছওয়াব মাহফিলের আয়োজন করা হয়। এই মাহফিল উপলক্ষে গত এক সপ্তাহ ধরে লাখো ভক্তদের মেহমানদারীর জন্য কক্সবাজার বায়তুশ শরফ কমপ্লেক্সে সাজ সাজ রব পড়ে গেছে।

মাহফিল প্রস্তুতি কমিটি আহবায়ক ও কক্সবাজার বায়তুশ শরফ কমপ্লেক্সের মহাপরিচালক শিক্ষাবিদ এম এম সিরাজুল ইসলাম তাঁর বক্তব্যে বলেন, বায়তুশ শরফ পীর আওলিয়াদের রূহানী ফয়াজের ফসল। প্রায় ৪৬ বছর ধরে এখানে ফাতেহায়ে ইয়াজ দাহুম উপলক্ষে মাহফিলে ইছালে ছওয়াব অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। এই মাহফিলে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লাখো দ্বীনদার ঈমানদার মুসলমানরা অংশ গ্রহন করে থাকেন। এই মাহফিল শুরু হওয়ার সময় মরহুম হুজুর শাহ আব্দুল জব্বার রহ. এর প্রচেস্টা ও রূহানী বরকত ছিল।
এই মাহফিল এখন কক্সবাজারবাসীর জন্য শিক্ষা, চিকিৎসা ও মানব সেবার বড় ওসিলায় পরিণত হয়েছে এবং এটি কক্সবাজার অঞ্চলের এখন বৃহত্তম ধর্মীয় ও রূহানী মাহফিলে পরিণত হয়েছে।

মাহফিলে ইছালে ছওয়াব আরো বক্তব্য রাখেন, প্রিন্সিপ্যাল মাওলানা হাফিজুল হক নিজামী, মাওনালা নুরুল ইসলাম, মাওলানা আব্দুল হাই নদবী, মাওলানা মামুনুর রশীদ নুরী, প্রিন্সিপ্যাল মাওলানা মাহমুদুল হক, মাওলানা নুরুল আলম ফারুকী, মাওলানা কাজী নাছির উদ্দিন, ভাইস চেয়াম্যান মাওলানা ফেরদাউস আহমদ জমিরী, মাওলানা আব্দুর রশীদ আলকাদরী, মাওলানা ক্বারী নুরুল কবির ও মাওলানা শফিক আহমদ নঈমী প্রমুখ ওলামায়ে কেরাম।

এছাড়াও মেহমান হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, আন্জুমান ইত্তেহাদ বাংলাদেশের সহ সভাপতি আলহাজ্ব ইদ্রীস মিয়া ও মাহফিলের সম্বনয়কারী শাহ জাদা মাওলানা ছালাহ উদ্দিন বেলাল।

অনুষ্ঠানটি সার্বিকভাবে পরিচালনা করেন কাজী মুহাম্মদ শেহাব উদ্দিন ও মাওলানা ওমর ফারুক।

এই মাহফিল ৮ ডিসেম্বর সকাল দশটা থেকে শুরু হয়ে ৯ ডিসেম্বর সোমবার সকাল ৮ টায় শেষ হবে। মাহফিলের কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে পীর সাহেব বায়তুশ শরফ আল্লামা কুতুবউদ্দিন (ম. জি. আ) এর মূল্যবান বয়ান, বিশিষ্ট ওলামায়ে কেরামের বয়ান, সালাতে তাহাজ্জুদ ও জিকির মাহফিল। এছাড়াও কর্মসূচীর মধ্যে রয়েছে, খতমে কোরআন, খতমে বোখারী, খতমে সুরা আন আম, খতমে খাজেগান, খতমে তাহলিল, দস্তার বন্দী, মিলাদ, তওবা ইসতিগফার, বায়াত ও আখেরী মোনাজাত।

রবিবার বাদ মাগরিব দুই দিন ব্যাপী এই মাহফিল কক্সবাজার বায়তুশ শরফ কমপ্লেক্সে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে। সোমবার আখেরী মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হবে।