ইমাম খাইর, সিবিএনঃ
ঢাকার মিরপুর থেকে কক্সবাজারে বেড়াতে এসেছিলেন মোহাম্মদ সিয়াম। শুক্রবার সন্ধ্যায় অসতর্ক ঘোরাফেরায় সমুদ্র সৈকতের বালিয়াড়ীতে হারিয়ে ফেলেন নিজের ব্যবহারের মোবাইল। অনেক খোঁজাখুঁজির পরও পাননি নিজের শখের ‘শাউমী এ-টু’ মডেলের মোবাইলটি। টেনশনে পড়ে গেলেন মোবাইলে থাকা প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস নিয়ে। ঠিক ওই সময় হারিয়ে ফেলা ফোনটি বুঝে নেওয়ার জন্য ওপার থেকে ফোন।
জানালেন, ‘স্যার, আমি আপনার মোবাইলটি সাহরপাড়ে কুড়িয়ে পেয়েছি। নিয়ে যান।’
আর দামি মোবাইলটি কুড়িয়ে পেয়েছিলেন একজন সাধারণ মানুষ। যার নাম মোঃ কামাল প্রকাশ কামাল কোম্পানি। যিনি সংবাদপত্রের হকার। ষাটোর্ধ বয়সী হকার কামাল মোবাইল ফোনটি পাওয়ার পর থেকে অস্থির হয়ে যান মালিকের সন্ধানে। ছুটে যান সংবাদপত্রের অফিসে।
একজন সাধারণ মানুষের এই অসাধারণ মানসিকতা দেখে হতবাক বনে যান মোবাইলের মালিক।
পত্রিকা বিক্রি শেষে বাড়ি ফেরার পথে শুক্রবার সন্ধ্যায় কলাতলী পয়েন্টের বালিয়াড়ীতে মোবাইলটি পড়ে থাকতে দেখতে পান পর্যটন নগরীর প্রবীণ হকার কামাল। মোবাইলটি কুড়িয়ে নিলেন বটে, কিন্তু অস্থির হয়ে যান প্রকৃত মালিকের হাতে মোবাইলটি কিভাবে পৌঁছে দেয়া যায়? সোজাসোজি চলে যান ‘দৈনিক কক্সবাজার’ পত্রিকা অফিসে। ওই মোবাইল থেকে নাম্বার বের করে প্রকৃত মালিক খোঁজতে বিভিন্ন জনকে ফোন করা হয়। কিছুক্ষণ পর ওপার থেকে একটি ফোন আসে।
যিনি বলেন, ‘ভাই মোবাইলটি কি পাওয়া যাবে? এটির মালিক আমি। আমার নাম মোহাম্মদ সিয়াম। ঢাকার মিরপুর থেকে কক্সবাজার বেড়াতে এসেছিলাম। সমুদ্র পাড়ে ঘুরতে গিয়ে মোবাইলটি হারিয়ে ফেলি।’
জবাবে কামাল কোম্পানি বলেন, ‘আপনি আসেন। দৈনিক কক্সবাজার পত্রিকা অফিস থেকে মোবাইলটি নিয়ে যান। আমি আপনার অপেক্ষায় আছি।’ আর মোবাইলের কললিস্টের সূত্র ধরে মালিকের সঠিক তথ্য বের করতে সার্বিক সহায়তা করেন সাংবাদিক ওমর ফারুক হিরু।
কিছুক্ষণ পরে পত্রিকা অফিসে সশরীরে হাজির মোবাইলের মালিক মোহাম্মদ সিয়াম। বুঝে নেন নিজের হারিয়ে ফেলা মোবাইলটি। কৃতজ্ঞতা জানালেন কক্সবাজারের এই প্রবীণ হকারের প্রতি।
প্রতিক্রিয়ায় পর্যটক মোহাম্মদ সিয়াম বলেন, ‘যেখানে প্রতিনিয়ত মোবাইল ছিনতাই হয়। সেখানে কুড়িয়ে পেলে তো কথাই নাই। নিজ থেকে ফোন করে মোবাইল ফেরত দেওয়া- সত্যিই অবাক করা বিষয়।
এই মানুষটার মন অনেক বড়। নির্লোভ মানুষগুলো থেকেই আমাদের শিক্ষা নেওয়া উচিত।’