ফেসবুক কর্ণারঃ
১৩ বছরের রিয়াদ। পেকুয়া উপজেলার বাসিন্দা। গত ৫/১২/১৯ তারিখ বিকাল ৩ঃ৩০ এর দিকে মাঠে যায় ছাগল আনতে। কিন্তু হঠাৎ তার পায়ে সাপে কাটে। গ্রামের দুরন্ত কিশোর প্রথম দিকে পাত্তা দেয়নি ডোরা সাপ মনে করে। যথারীতি ওঝার কাছে গেল এবং ব্লেড দিয়ে কাটল। সেখানে সর্বনাশ টা করল। ৬/৭ বার বমি করার পর প্রথমে পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে ডাক্তার কক্সবাজার জেলাসদর হাসপাতাল পাঠায়। রাত ৯ টার দিকে EMO ডাঃ তানিম এর ফোন পাওয়ার পর গিয়ে দেখলাম রিয়াদের নিথর দেহটা পড়ে আছে জিসিএস ৩ অক্সিজেন সাসুরেশন ৪০% এর কাছাকাছি।
ডাঃ তানিম তার Stuff Nurse, Intern মিলে যুদ্ধ করে সাসুরেসন ৮০% এর কাছাকাছি আনল। এনেস্থিসিয়া ডাঃ তমালকে ডেকে ইন্টিউবেট করিয়ে বেগ একজনকে ধরিয়ে দেওয়া হল, চলল ম্যানুয়ালি।
প্রথম আন্টি ভেনম ৯ঃ৫০ এ শুরু করে ১০ঃ৫০ শেষ করা হল। বাকি চিকিৎসা যথাযথ চলল। কিন্তু রিয়াদের কোন উন্নতি নাই, তাই ১২ঃ০০ আবার শুরু করা হল আন্টি ভেনম, যা শেষ হয় রাত ১ঃ০০টা। এবার রিয়াদ নিজে নিজ এ শ্বাস নেয়া শুরু করল, ইন্টার্ন, ডাঃ সাজ্জাদ, ই এম ও ডাঃ পুলক, নার্স রুবি ও ইমারজেন্সী এর অন্যান্যরা আশায় বুক বাধল। সাথে এনেস্থিসিয়া প্রফেসর ডাঃ বিধান দাড়িয়েছিলেন। আর ও কিছু উন্নতি হলে বিধান দা সহ সিদ্ধান্ত নিলাম এক্সটিউবেট করতে। রাত ৪ঃ০০ টার দিকে আরেক ডোজ আন্টি ভেনম দেওয়ার পর আল্লাহ রিয়াদ পুরোপুরি ফিরিয়ে দিল। গত মাসে ফিরে আসল ৭ বছরের মাহিন।এটা এ প্রতিষ্ঠানের ১০ ক্রেইট বাইট চিকিৎসা। সবুজ সাপ কাটা ৩৫ টা সহ গত ২ বছরে মোট ৪৫ টি বিষধর সাপে কাটা রোগীর চিকিৎসা দেওয়া হয় কক্সবাজার জেলাসদর হাসপাতালে, সরকারি খরচে।
তাই সাপে কাটলে ওঝা নয় হাসপাতালে চিকিৎসা হয়। আপনার সাপে কাটা বাচ্ছাটাকে ব্লেড দিয়ে কেটে বিষ টা তাড়াতাড়ি শরীরে প্রবেশ না করিয়ে, তাড়াতাড়ি হাসপাতালে আসুন।

ডাক্তার মোঃ শাহজাহান
সহকারী অধ্যাপক
ক্লিনিক্যাল ট্রপিক্যাল মেডিসিন বিভাগ
কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল।