সিবিএন ডেস্ক:
আগামী সপ্তাহ থেকে অনলাইন সংবাদমাধ্যমগুলোর (নিউজ পোর্টালগুলোর) নিবন্ধন শুরু হবে বলে জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘দেশে যে অনলাইন নিউজ পোর্টালগুলো আছে, সেগুলোকে নিবন্ধনের আওতায় আনতে আমরা দরখাস্ত আহ্বান করেছিলাম। এখন পর্যন্ত ৩ হাজার ৫৯৭টি আবেদনপত্র জমা পড়েছে। সেগুলো তদন্ত করার জন্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।’

সোমবার (২ ডিসেম্বর) দুপুরে সচিবালয়ে নিজ দফতরে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এই তথ্য জানান।

ড. হাছান বলেন, ‘যাতে আমরা নিবন্ধনের কাজটি দ্রুত শুরু করতে পারি, এজন্য শিগগিরই তদন্ত শেষ করে তথ্য মন্ত্রণালয়কে জানানোর জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সঙ্গে আলোচনা করে আমরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানিয়েছি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা ইতোমধ্যে কয়েকশ’ অনলাইনের তদন্ত শেষ করেছে, সেই প্রতিবেদন আজ বা কালকের মধ্যে আমাদের কাছে পাঠাবে। আমরা আগামী সপ্তাহ থেকে অনলাইনগুলোর নিবন্ধন দেওয়া শুরু করবো। এই প্রক্রিয়া শেষ করতে সময় লাগবে। কারণ সাড়ে তিন হাজারেরও বেশি অনলাইনের তদন্ত শেষ করা সহজ কাজ নয় এবং কয়েকটি সংস্থাও এই তদন্ত করছে। যে কটির প্রতিবেদন আমরা পাবো, সেগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে নিবন্ধন দেওয়া শুরু করবো।’

ভবিষ্যতেও এই প্রক্রিয়া অব্যাহত জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ভবিষ্যতেও যেন কেউ অনলাইন নিউজ পোর্টাল করতে পারে, সেজন্য আমরা পরবর্তীতে আবারও দরখাস্ত আহ্বান করবো।’

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘পত্রিকা বের করতে চাইলে যেমন নামের ছাড়পত্র নিতে হয়, অনলাইনের ক্ষেত্রেও একটি প্রক্রিয়া অবলম্বন করতে হবে। প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে পত্রিকা যেমন যে কেউ যে কোনও সময় বের করতে পারে, ভবিষ্যতে তেমনি অনলাইনও বের করতে পারবে। আইপি টিভি, আইপি রেডিওর জন্যও আমরা দরখাস্ত আহ্বান করেছিলাম। এ ব্যাপারে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে সবাইকেই রেজিস্ট্রেশন করতে হবে।’

অনলাইন পত্রিকার ভিডিও কনটেন্ট এবং টিভি চ্যানেলগুলোর অনলাইন চালাতেও অনুমতি লাগবে বলে জানিয়েছেন ড. হাছান। তিনি বলেন, ‘এগুলো নিয়েও আমরা আলোচনা করেছি। সব একটি শৃঙ্খলার মধ্যে আনা হবে। কারণ যিনি যেটার লাইসেন্স পেয়েছেন, সেটার বাইরে যেতে পারবেন না। শুধু পত্রিকাগুলো যে অনলাইনে ভিডিও কন্টেন্ট করছে তাই নয়, টেলিভিশনগুলোও অনলাইন চালু করেছে। এখন পর্যন্ত সেটিরও অনুমতি নেই। সুতরাং সবকিছুকে একটি শৃঙ্খলার মধ্যে আনার জন্যেই আমরা প্রক্রিয়া শুরু করেছি।’

এছাড়াও টেলিভিশনে ডাবিং করা বিদেশি সিরিয়াল প্রচারে পূর্বানুমতির জন্য প্রিভিউ কমিটি করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

এদিকে মোবাইল কোম্পানিগুলোর ভিডিও কনটেন্ট আপলোডের বিষয়টিও শৃঙ্খলায় আনা হবে বলে জানিয়েছেন ড. হাছান। তিনি বলেন, ‘মোবাইল কোম্পানি নানা ধরনের ভিডিও কনটেন্ট আপলোড করে ইউটিউব বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছাড়ছে, সেখানে বিজ্ঞাপন দিচ্ছে, তারা ব্যবসা করছে, এটির লাইসেন্স তাদের দেওয়া হয়নি। তাদের মোবাইল নেটওয়ার্ক পরিচালনা করার লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে। এটি বন্ধ করার জন্যে ইতোমধ্যে আমরা টেলিযোগাযোগ বিভাগকে চিঠি দিয়েছি, দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য আমরা আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় বিষয়গুলো আলোচনা করেছি। এ ধরনের চলমান বিষয়গুলোর ব্যাপারে বিটিআরসি সিদ্ধান্ত নেবে। এটিকে একটি শৃঙ্খলার মধ্যে আনতে আমরা বদ্ধপরিকর। কারণ যে কেউ চাইলেই লাইসেন্স ছাড়া ব্যবসা করতে পারে না।’

ব্যক্তিগত ইউটিউব চ্যানেল প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ইউটিউব, ফেসবুকসহ সবার সঙ্গে আলোচনা করেছি। তাদের মাধ্যম ব্যবহার করে যে ব্যবসা হচ্ছে বা বিজ্ঞাপন যাচ্ছে সেগুলোর ওপর শুল্ক ধার্যের বিষয়টা আসবে, আমরা এনবিআরের সঙ্গেও কথা বলেছি। কেউ যদি বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে করে, সেক্ষেত্রে অবশ্যই দেশের আইন মেনেই করতে হবে।’ তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।