শাহেদ মিজান, সিবিএন:
বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুমের ওপারে ‘স্থলমাইন’ বিস্ফোরণে এক রোহিঙ্গা যুবক নিহত হয়েছেন।

স্থানীয়রা বলছেন, রোহিঙ্গা পারাপার ঠেকাতে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী সীমান্তে তাদের এলাকায় গোপনে ‘স্থলমাইন’ পুতে রেখেছে এবং সেটার একটি বিস্ফোরণে এ মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এসময় আরও দুইজন আহত হয়েছেন বলেও সূত্র জানিয়েছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ঘুমধুম এলাকার ৩৯ নম্বর পিলারের মধ্যবর্তী সীমান্তে এ ঘটনা ঘটে। নিহত হামিদ হোসেন (৩১) উখিয়ার কুতুপালং ক্যাম্প-১ এর ব্লক- জি-৪ এর আব্দুল করিমের ছেলে। আহতরা হলেন, একই ক্যাম্পে হাবিব উল্লাহ ও জুয়েল হক।

তবে, হতাহতরা সেখানে কেন গিয়েছিলেন বা কোথা থেকে আসছিলেন তা নিশ্চিত করতে পারেননি কেউ।

রোহিঙ্গারা জানায়, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঘুমধুমের ৩৯ নম্বর পিলারের মধ্যবর্তী সীমান্ত এলাকায় বিস্ফোরণের একটি বিকট শব্দ হয়। শব্দ শুনে ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই রোহিঙ্গা যুবকের ক্ষতবিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এসময় অপর দুইজনকে আহতাবস্থায় উদ্ধার করে উখিয়ার কুতুপালং এমএসএফ হাসপাতালে নিয়ে যান স্থানীয়রা। তাদের সেখানে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ (পরির্দশক) ইমন চৌধুরী বলেন, বিষয়টি শুনেছি, ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

উখিয়া কুতুপালং ক্যাম্প ওয়েস্ট-১ এর মাঝি মোহাম্মদ রফিক বলেন, কোন কারণে জানিনা মিয়ানমারে সীমান্তে বিজিপি স্থলমাইন পুঁতে রেখেছে। অতীতেও বেশ কয়েকজন রোহিঙ্গা স্থলমাইন বিস্ফোরণে হতাহত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার সন্ধার পর স্থলমাইন বিস্ফোরণে আমার শিবিরের যুবক হামিদ নিহত হয়েছে। লাশ উদ্ধার করে ক্যাম্পে নিয়ে আসা হয়েছে। এ ঘটনা পুলিশকে অবহিত করা হয়েছে। তবে নিহত হামিদ সীমান্তে কেন গিয়েছিল আমি জানতে পারিনি। অনেকসময় ওপারের ভিটে বা এলাকার অবস্থা দেখতে গোপনে রোহিঙ্গারা সেখানে যান বলে উল্লেখ করেন তিনি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কক্সবাজার ৩৪ বিজিবির এক কর্মকর্তা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, সীমান্তে মিয়ানমার সাইডের প্রায় ২-৩শ গজ ভেতর এলাকায় এ স্থলমাইন বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে বলে খবর পেয়েছি। এতে রোহিঙ্গা এক যুবক নিহত ও দুজন আহত হয়। ধারণা করা হচ্ছে, হয়তো তারা মিয়ানমার থেকে এপারে আসার চেষ্টা করছিল বা তারা মাদক ব্যবসায়ীও হতে পারে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) বিকেল ৩টা পর্যন্ত হামিদের মরদেহ উখিয়া কুতুপালং ক্যাম্প ওয়েস্ট-১ এ ছিল। প্রশাসনিক অনুমতি পেলে দাফন করা হবে বলে জানান ক্যাম্প মাঝি মুহাম্মদ রফিক।