এম.জিয়াবুল হক,চকরিয়া :

কক্সবাজারের রামু সেনা নিবাসে বর্ণাঢ্য আয়োজনে পালিত হয়েছে সশস্ত্র বাহিনী দিবস। বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) ভোর থেকে রামু সেনানিবাসে সেনাবাহিনী, নৌ-ফরোয়ার্ড বেইস ও কক্সবাজার বিমান ঘাঁটির সমন্বয়ে অনুষ্ঠানের কর্মসূচী শুরু হয়। শুরুতে দোয়া, মোনাজাত, ইউনিটের পতাকা উত্তোলন, বিশেষ দরবার ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের স্বরণে শহীদ স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পন করা হয়।

একইদিন বিকালে কেক কেটে সংবর্ধনা অনুষ্ঠান শুরু হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জিওসি ১০ পদাতিক ডিভিশনের কক্সবাজার এরিয়া কমান্ডার মেজর জেনারেল মোঃ মাঈন উল্লাহ চৌধুরী।

সশস্ত্র বাহিনী দিবসের অনুষ্ঠানে এসময় উপস্থিত ছিলেন এয়ার কমান্ডার মোঃ শাফকাত আলী, মেজর জেনারেল জোবায়ের, চকরিয়া-পেকুয়া আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ জাফর আলম, কক্সবাজার সদর-রামু আসনের এমপি সাইমুম সরওয়ার কমল, মহেশখালী-কুতুবদিয়া আসনের এমপি আশেক উল্লাহ রফিক, কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান লেঃ কর্ণেল (অবঃ) ফোরকান আহমদ, ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক আশরাফুল আফসার, কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সিরাজুল মোস্তাফা, সাধারণ সম্পাদক কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র মুজিবুর রহমান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক সালাহউদ্দিন আহমদ সিআইপি, চকরিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ ফজলুল করিম সাঈদী, মুক্তিযোদ্ধা নেতৃবৃন্দ, রাজনীতিক, সাংবাদিক ও তিন বাহিনীর পদস্থ কর্মকর্তাবৃন্দ। পরে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন অসামান্য অবদান রাখার জন্য কক্সবাজার অঞ্চলের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বিশেষ সম্মাননা উপহার তুলে দেয়া হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ১০ পদাতিক ডিভিশনের মেজর জেনারেল মোঃ মাঈন উল্লাহ চৌধুরী বলেন, আপনারা আপনাদের সন্তান, নাতি-পুতিদের কাছে মুক্তিযুদ্ধের গল্প বলবেন। তারা যেন মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে জানতে পারে। দেশকে ভালোবাসতে পারে। যুদ্ধ করে আমরা এ দেশ স্বাধীন করেছি। বাঙালি বীরের জাতি, এ কথা যেন নতুন প্রজন্মের সন্তানরা জানতে পারে।

তিনি বলেন, ভবিষৎ প্রজন্ম বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে চলবে। কারণ, আমরা বীরের জাতি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু তার ৭ মার্চের ভাষণে বলেছেন, ‘বাঙালি জাতিকে কেউ দাবায়ে রাখতে পারবে না।’ এখন তা প্রমাণিত হচ্ছে। ‘বাঙালি জাতি এগিয়ে যাচ্ছে।

অনুষ্ঠান শেষে স্থানীয় সংসদ সদস্যবৃন্দ সাংবাদিকদের বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণে, প্রতিটি মানুষের মৌলিক অধিকার পূরণে কাজ করে যাচ্ছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফল নেতৃত্বে বর্তমান সরকার। দেশের মানুষ যেন ভালো থাকে, সে লক্ষ্যে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। যাদের ঘর নেই, তাদের ঘর দেয়া হচ্ছে। যাদের জমি নেই, তাদের জমি দিচ্ছে সরকার। গুচ্ছগ্রাম, আদর্শ গ্রাম ও আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে অনেককে পুনর্বাসন করা হয়েছে।

তাঁরা আরও বলেন, গরিবের সন্তানরা যেন লেখাপড়া করতে পারে, সেজন্য বৃত্তি-উপবৃত্তি দেয়া হচ্ছে। বিনা পয়সায় ছেলে-মেয়েদের বই দেয়া হচ্ছে। আজকের শিক্ষার্থীরা যাতে লেখাপড়া শিখে মানুষ হতে পারে, তারা যেন এ দেশকে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলতে পারে, সেজন্যই আওয়ামী লীগ সরকার এ কাজগুলো করছি।

অনুষ্ঠান শেষে চকরিয়া-পেকুয়া আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ জাফর আলম গণমাধ্যম কর্মীদেরকে বলেছেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা থেকে শুরু করে আজকের অগ্রগতি উন্নয়নে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ভুমিকা অনন্য। দেশ ও জাতির ক্রান্তিলগ্নে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বরাবরেই ত্রাণকর্তার ভুমিকা পালন করেছেন। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দেশের সম্পদ। সেনাবাহিনীর দায়িত্বশীল কর্মকা-ে আজ দেশ ও জাতি গর্বিত। আশাকরি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রতিটি সদস্য সততা নিষ্ঠার সঙ্গে অর্পিত দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে দেশ ও জাতির সুরক্ষা নিশ্চিতে কাজের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখবে।

প্রসঙ্গতঃ ১৯৭১ সালের এই দিনে সেনা, নৌ এবং বিমানবাহিনীর সমন্বয়ে গঠিত বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী দখলদার পাকিস্তানি সেনাদের বিরুদ্ধে সম্মিলিত আক্রমণ শুরু করে। ফলে মুক্তিযুদ্ধের বিজয় ত্বরান্বিত হয়। বাংলাদেশ স্বাধীনের পর থেকে এই দিনটি প্রতিবছর সশস্ত্র বাহিনী দিবস হিসেবে পালিত হচ্ছে।##