শাহেদ মিজান, সিবিএন:

কক্সবাজার পুলিশ লাইনের পিছনের বাদশাঘোনা এলাকায় বেপরোয়াভাবে পাহাড় কাটছে একটি চক্র। শহরের সিকদার পাড়া বিজিবি ক্যাম্প এলাকার আকতার আহমদের পুত্র সাইফুলের নেতৃত্বে এই পাহাড় কাটা হচ্ছে। ইতিমধ্যে বিরাট পাহাড় কেটে সাবাড় করা হয়েছে। নির্বিচারে পাহাড় কাটায় পার্শ্ববর্তী বসত বাড়ি বিলীন হতে বসেছে। এতে প্রতিবাদ করায় উল্টো ভুক্তভোগীদের মারধরসহ নানাভাবে নির্যাতন ও হয়রানির অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভুক্তভোগীরা প্রতিকার চেয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের কাছে লিখিত অভিযোগ দিলেও কোনো কাজ হয়নি। উল্টো সমাধানের ভুক্তভোগী হয়রানি করছে পরিবেশ অধিদপ্তরের লোকজন- এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে।

অভিযোগে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে পুলিশ লাইনের পিছনে বাদশাঘোনায় বসবাস করছেন হোসনা বানু পটো। তাদের পাশের অংশ কিনে দখল করে সিকদার পাড়া বিজিবি ক্যাম্প এলাকার আকতার আহমদের পুত্র সাইফুল। বছর খানেক সময় ধরে সাইফুল ও তার লোকজন ওই পাহাড় কেটে সমতল বানাচ্ছে। প্রতিদিন শ্রমিক লাগিয়ে মাটি কাটার দেশীয় সরঞ্জাম দিয়ে নির্বিচারে পাহাড় হচ্ছে। এভাবে পাহাড় কাটতে কাটতে তার লাগোয়া হোসনা বানু পটোর বসতভিটার সীমা পর্যন্ত ঘেঁষে পাহাড় কেটে ফেলেছে। এতে ভূমি ধস হয়ে হোসনা বানু পটোর বসতবাড়ি যেকোনো সময় বিলীন হয়ে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে কয়েক গাছ বিলীন হয়ে গেছে। গাছগুলোও লুট করে নিয়ে গেছে সাইফুল। একইভাবে বিলীন হয়ে গেছে সীমানায় দেয়া কাঁটাতারের বেড়াও। শুধু তাই নয়; এভাবে বেপরোয়াভাবে পাহাড় কাটায় আশেপাশের পরিবেশ মারাত্মক হূমকির মুখে পড়েছে।

হোসনা বানু পটো জানান, সাইফুল দীর্ঘদিন ধরে বেপরোয়াভাবে পাহাড় কেটে পরিবেশ বিপর্যয় করছে। একই সাথে আমার বসতভিটা ঘেঁষে পাহাড় কাটায় আমার বসতবাড়িও যেকোনো সময় ধরে পড়ার মুখে রয়েছে। এর প্রতিবাদ করায় সাইফুল ও তার লোকজন অনেক দিন ধরে আমি ও স্বামীকে মারধরসহ নানাভাবে নির্যাতন ও হয়রানি করেছে। এর অংশ হিসেবে গত ১৮ নভেম্বর রাতে সাইফুল ও তার কয়েকজন লোক দা’ নিয়ে বাড়িতে ঢুকে আমাদের প্রাণনাশের হমুকি এবং ভাংচুর করে। এই ঘটনায় জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় সাধারণ ডায়রি করেছেন হোসনা বানু পটো।

স্থানীয়রা জানান, সাইফুল ক্রসফায়ারে নিহত নূরুল আলমের ডাকাতের সহযোগি। শুধু পাহাড় কাটা নয়; বিভিন্ন জনের সৃজিত বাগান থেকে গাছ লুটসহ নানা অপরাধের জড়িত রয়েছে সাথে জড়িত রয়েছেএলাকায় লোকজনকেও নানাভাবে ভয়ভীতি দেখায়। । বিভিন্ন অভিযোগের মামলাও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। তাই সাধারণ মানুষ সে ও তার লোকজনের ভয়ে মুখ খুলতে চায় না।

হোসনা বানু পটো অভিযোগ করে বলেন, সাইফুল ও তার লোকজন কর্তৃক নির্বিচারে পাহাড় কাটা ও বসতবাড়ি হুমকির বিষয়টি জানিয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের কাছে লিখিত অভিযোগ করি। কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেয়নি পরিবেশ অধিদপ্তর। উল্টো রহস্যজনক কারণে সমাঝোতার প্রস্তাব দেয়া হয়।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কক্সবাজার পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক নূরুল আমিন বলেন, তারা যে অভিযোগ করেছে তা মিথ্যা।আসল কথা হলো, অভিযোগ করেছিলেন বিকে আজম। কিন্তু তিনি শুনানীতে আসেননি। তিনি তার প্রতিনিধি পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু তারা কোনো তথ্য দিতে পারেননি। তাই শুনানীটা সম্পন্ন করা যায়নি। তবে পাহাড় কাটার বিষয়ে আমরা অনুসন্ধান করেছি। অভিযোগ প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।