মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক জনাব মোস্তাক আহমদ ১৯৪৮ সালে মাতারবাড়ির এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন।ছোটবেলা থেকেই ভদ্র,বিনয়ী, নির্লোভ,সুদর্শন ও প্রচারবিমুখ রাজনীতিবিদ ছিলেন।
তিনি পৈতৃক সম্পত্তি বিক্রি করে রাজনৈতিক ব্যয় নির্বাহ করতেন।জনশ্রুতি আছে যে, মাতারবাড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান থাকাকালীন তাঁর শাসনামল নিয়ে বিভিন্ন গল্প-কথা প্রচলিত আছে। মাতরবাড়ি “দ্বিতীয় টুঙ্গিপাড়া” খেতাব অর্জনের নেপথ্য কারিগর ছিলেন তিনি। ২০১১ সালের এই দিনে এক সড়ক দূর্ঘটনায় এ কীর্তিমানের মৃত্যু হয়। তার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করি।

রাজনৈতিক ও কর্মজীবন

১৯৬৬ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঘোষিত-বাঙালী জাতির মুক্তির সনদ ঐতিহাসিক ৬ দফা আন্দোলেনের সময় দোলহাজারা উচ্চ বিদ্যালয়ে( চকরিয়া উপজেলা) ছাত্রলীগের কর্মী হিসেবে রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন।
১৯৭০ সালে মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ি ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষে জনমত সৃষ্টি করেন।
৭১ সালের ১৭ই ডিসেম্বর রাজনৈতিক সহকর্মীদের নিয়ে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন।
১৯৭২ সালে মাতারবাড়ি- ধলঘাটা রেডক্রসের সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৭৫ এর পরে আওয়ামী রাজনীতির বৈরী পরিবেশে ১৫ই অগাস্ট তাঁর রাজনৈতিক সহযোদ্ধাদের নিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শোক দিবস পালন করেন।
উক্ত শোক দিবসে প্রয়াত জননেতা, দুঃসময়ের কান্ডারী জনাব মোজাম্মেল হক, মরহুম আলহাজ্ব ওসমান সরওয়ার ( সাবেক রাষ্ট্রদূত) , মরহুম ইসহাক মিয়া( সাবেক সাংসদ) ও জেলা আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
১৯৮৩ সালে সে সময়ে জনপ্রিয়তার শীর্ষে থাকা এই নেতা মাতারবাড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।
১৯৮৬ সালে মহেশখালী-কুতুবদিয়া আসনে নৌকা প্রতীক নিয়ে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেন। এরশাদ সরকারের প্রহসনমূলক ভোট ডাকাতির ঐ নির্বাচনে তিনি পরাজিত হন।
এছাড়া কর্মজীবনে তিনি কক্সবাজার কো-অপারেটিভ ব্যাংকের সভাপতি ,কক্সবাজার লবণ সমিতির পরিচালক, কক্সবাজার সমবায় সমিতির পরিচালক এবং মহেশখালী মৎসজীবি সমবায় সমিতির প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ছিলেন।
চট্টগ্রাম লবণ উৎপাদনকারী সমিতিরও সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি। এছাড়া রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড যেমন বিভিন্ন নাটক, থিয়েটার, বলি খেলা থেকে শুরু করে চলচিত্র নির্মাণেও হাত দিয়েছিলেন। প্রতিবছর এ দিনে মাতারবাড়ির বিভিন্ন সংগঠন তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে থাকেন।