ছাত্রী ধর্ষকের শাস্তি চাই আমরা তাকে ভয় পাই, এই স্লোগান কে ধারণ করে ছাত্রী ধর্ষনের অভিযোগে অভিযুক্ত শিক্ষক ছৈয়দ করিমকে পুনঃ বহালের বিরুদ্ধে রামু বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী, শিক্ষক, অভিভাবক ও এলাকাবাসী রামু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্য়ালয় ঘেরাও ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে। ১৯ নভেম্বর দুপুর ১২টায় রামু উপজেলা প্রাঙ্গনে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা “ধর্ষক শিক্ষকের শাস্তি চাই” আমরা তাকে ভয় পাই, লিখা প্লেকার্ড হাতে নিয়ে মানববন্ধন করেন। এসময় শিক্ষার্থীরা ‘আমরা নুশরাত হতে চাই না ধর্ষিতও হব না, তাই বিদ্যালয়ে ধর্ষক শিক্ষক ছৈয়দ করিমকে আর চাইনা’ বলে শ্লোগান দিতে থাকে। এতে রামুর সুশীল সমাজ ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দসহ সর্বস্থরের জনতা একাত্মতা প্রকাশ করে।
মানববন্ধনে জেলা আওয়ামলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নাজনীন সরওয়ার কাবেরী বলেন, বার বার ধর্ষনের অভিযোগে অভিযুক্ত ধর্ষক শিক্ষক ছৈয়দ করিমকে একটি কুচক্রী মহল বিদ্যালয়ে পুনরায় নিয়োগের পায়তারা চালিয়ে যাচ্ছে।রামুতে আর একটি নুশরাত ঘটনার পুনরাবৃত্তি হতে দেওয়া যাবে না।জেনেশুনে আমরা আমাদের কোমলমতি মেয়েদেরকে শিক্ষক নামী ধর্ষকের হাতে তুলে দিতে পারি না।
নুশরাতের মত আর কোন মেয়ে যাতে অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতির শিকার না হয় এবং প্রতিষ্ঠানও যেন এমনভাবে কলঙ্খিত না হয় সেদিকে আমাদের সকলকে দায়িত্ববান হতে হবে। তিনি বলেন, নারী প্রতিষ্ঠানে ধর্কক শিক্ষক যেন ঢুকতে না পারে আমাদের সরকার সেদিকে দৃঢ় অবস্থানে। ধর্ষকদের বিরুদ্ধে আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিবাদ অবস্থান গড়ে তুলতে হবে।
চিত্র শিল্পী তানবীর সরওয়ার রানা বলেন,রামু বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা মরহুম আলহাজ্ব ওসমান সরওয়ার আলম চৌধুরী ওচিয়ত করে গিয়েছিলেন ধর্ষক ছৈয়দ করিম যেন এ বিদ্যালয়ে প্রবেশ করতে না পারে। তিনি বলেন ধর্ষকের হাত থেকে এ পবিত্র প্রতিষ্ঠানকে রক্ষা করতে প্রয়োজনে প্রধানমন্ত্রীর শরণাপন্ন হবেন। ধর্ষকের বিরুদ্ধে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর অবস্থানে। প্রধানমন্ত্রী যদি সত্য হয়ে থাকে অন্তত আমি বেচেঁ থাকতে ধর্ষক ছৈয়দ করিম এই বিদ্যালয়ে প্রবেশ করতে পারবেনা।প্রয়োজনে তিনি শহীদ হবেন বলেও হুশিয়ারী উচ্চারন করেন।

ছাত্রী অভিভাবক আবুল কালাম বলেন, একজন চিহ্নিত ধর্ষক ছৈয়দ করিমের যোগদানের বিষষটি নিয়ে আমরা আজ সত্যিই শংকিত। কিছু কুচক্রী মহলের স্বার্থের খেসারত আমরা অভিভাবকগণের পাশাপাশি কোমলমতী মেয়েদের নিরাপত্তা চরমভাবে বিঘ্নিত হবে।
রামু উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সোহেল সরওয়ার কাজল বলেন, ছৈয়দ করিম শুধু ধর্ষক নয় সে শিক্ষকের সুযোগ নিয়ে ব্যাপক দূর্নীতি করেছে। আর্তিকভাবেও সে স্কুলকে বির্পযস্ত করেছে। একজন স্কুল শিক্ষক হয়ে সে কিভাবে চারতলা ভবন নির্মাণ করতে পারে তাও খতিয়ে দেখা দরকার।একজন বির্তকিত ধর্ষন মামলার আসামী যাতে রামু বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ঢুকতে না পারে সে ব্যবস্থা স্কুল কর্তৃপক্ষকে নিশ্চিত করতে হবে। তিনি বলেন, কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ফেসটুন ও মনের অনুভুতিকে আমাদের মূল্যায়ন করতে হবে।তার হাতে রামু রামু বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের অনেক মেয়ে ধর্ষিত হয়েছে, অনেক মেয়ে কনসিভ করেছে। সুতরাং এরকম একজন ধর্ষকের কোনভাবে নারী বিদ্যালয়ে প্রবেশের যোগ্যতা নাই। যদি সেখানে তাকে নিয়োগ দেওয়া হয় রামুকে অচল করে দেওয়া হবে বলে হুশিয়ারী উচ্চারণ করেন।
এসময় রামু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শিক্ষার্থীদের শান্ত হওয়ার নির্দেশ দিয়ে বিদ্যালয়ে ফিরে যাওয়ার অনুরোধ করেন এবং উক্ত বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচন পূর্বক পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহনের কথা উল্লেখ করেন। মানববন্ধনে রামু থানার অফিসার ইনচার্জ আবুল খায়ের বক্তব্য রাখেন।
উল্লেখ্য যে শিক্ষক ছৈয়দ করিম বিগত১১/৩/১৮ তারিখ বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদ কর্তৃক স্থায়ী বহিস্কার হয়। তিনি ২০০৬সালে জৈনিক হোস্টেল ছাত্রীকে ধর্ষনে অভিযোগে মামলা নং ১৪২-০৬ আটক হয়ে প্রায় ১ বছর কারাভোগ করেন। পরবর্তীতে আবারো কতিপয় ছাত্রী ও হোস্টেল সুপারের সাথে অনৈতিক সম্পর্কে লিপ্ত, প্রশ্ন পত্র ফাসঁ, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকদের স্বাক্ষর জাতিয়াতি,বিদ্যালয়ের সিনিয়ন শিক্ষক শিক্ষিকাদের সাথে অসৌন্যমূলক আচরণসহ নানা অভিযোগ রয়েছে।