নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

কেন্দ্রের নির্দেশ অমান্য করে স্বারাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত শীর্ষ ইয়াবা ব্যবসায়ী হামজালালকে সভাপতি করায় টেকনাফ সদর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনের কাউন্সিল অধিবেশনের সকল কার্যক্রম বাতিল করা হয়েছে।
এই বিষয়ে রবিবার (১৭ নভেম্বর) জরুরী সভা ডেকেছে কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগ।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র মুজিবুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, হামজালালের বিরুদ্ধে ইয়াবা ব্যবসার সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকার বিষয়টি টেকনাফ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদককে একাধিকবার জানানো হয়েছিলে। বারবার নিষেধ করার পরও দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে তাকে টেকনাফ সদর ইউনিয়নের সভাপতি ঘোষনা করার বিষয়টি দুঃখ জনক।
তিনি আরো বলেন, কাউন্সিলে ইয়াবা ব্যবসায়ী হামজালালকে প্রার্থী না করার নির্দেশ দেয় কাউন্সিলের উপস্থিত জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি শাহ আলম চৌধুরী ও এডঃ ফরিদুল আলম। সে কারনে জেলার নেতাদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করা হয়।
স্থানীয়রা জানিয়েছে, কেন্দ্র ও জেলার নির্দেশনা অমান্য করে দলের গঠনতন্ত্রের বিরোধীভাবে তালিকাভুক্ত শীর্ষ ইয়াবা ব্যবসায়ী হামজালালকে সভাপতি ঘোষণা করা হয়।
হামজালালের বিরুদ্ধে মাদক ও অস্ত্র আইনের অন্তত ৯ মামলার রয়েছে। তিনি টেকনাফের নাজির পাড়ার আজিজুল হক মার্কিন হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি।
স্বারাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের মাদক ব্যবসায়ীর তালিকায় শীর্ষে থাকা টেকনাফ সদর ইউনিয়নের ছোট হাবিবপাড়ার হাজী খলিলুর রহমানের ছেলে হামজালাল গত জানুয়ারীতে ৩০০০ ইয়াবাসহ টেকনাফে পুলিশের হাতে আটক হয়েছিলেন।
এর আগে টেকনাফ থেকে চট্টগ্রামে ইয়াবা নেয়ার সময় চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় ইয়াবা নিয়ে পুলিশের হাতে ধরা পড়েন।
কিছুদিন আগে মিয়ানমার থেকে ইয়াবা পাচারের সময় পুলিশির সাথে বন্দুকযুদ্ধে তার ছোট ভাই ইয়াবা ব্যবসায়ী বাহাদুর নিহত হয়েছে।
শীর্ষ এই ইয়াবা ব্যবসায়ী কিছুদিন আগে জেল থেকে জামিনে বের হয়। ইয়াবাসহ জামিনে এসে আওয়ামী লীগের সভাপতি বনে যায় এই ইয়াবা ব্যবসায়ী। অথচ কোন ইয়াবা ব্যবসায়ী বা বিতর্কিত ব্যাক্তিকে আওয়ামী লীগের কোন পদে না আনার নির্দেশনা দিয়েছিলো কেন্দ্রিয় আওয়ামী লীগ।
টেকনাফের আওয়ামী লীগ নেতারা জানিয়েছে, হামজালালকে কাউন্সিলে প্রার্থী হতে না দিতে জেলা আওয়ামী লীগের নির্দেশনা ছিলো। কিন্তু দলের নির্দেশনা অমান্য করে সভাপতি ঘোষনা করে।
টেকনাফ থানার ওসি প্রদিপ কুমার দাশ জানিয়েছেন, হামজালাল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত ইয়াবা ব্যবসায়ী। তার বিরুদ্ধে ৯টি মামলা রয়েছে। গত ২৬ জানুয়ারী ৩ হাজার ইয়াবাসহ টেকনাফ থানায় গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। তার পুরো পরিবার ইয়াবায় জড়িত। কিছুদিন আগে জামিনে এসে হাম জালাল আবারও ইয়াবা ব্যবসা শুরু করেছে বলে পুলিশের কাছে তথ্য আছে। তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
টেকনাফকে মাদকমুক্ত করার জন্য পুলিশ দিন রাত কাজ করে যাচ্ছে। সেখানে হামজালালের মতো একজন চিহ্নিত ও তালিকাভুক্ত ইয়াবা ব্যবসায়ী আওয়ামী লীগের সভাপতি পদে ঘোষনা করা খুবই দুঃখজনক বলে দলের তৃণমূল নেতাকর্মীরা মন্তব্য করেন।