বাসস

মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিমসহ সংখ্যালঘুদের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে তৃতীয়বারের মতো জাতিসংঘে একটি প্রস্তাব পাস হয়েছে। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৪তম অধিবেশনের সামাজিক, মানবিক ও সাংস্কৃতিক বিষয়ক কমিটিতে (তৃতীয় কমিটি) নিউইয়র্ক সময় বৃহস্পতিবার বিপুল ভোটে প্রস্তাবটি পাস হয়।

জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন জানান, এবারের প্রস্তাবে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে বিভিন্ন উপায়ের সঙ্গে মিয়ানমারকে কী কী পদক্ষেপ নিতে হবে তা স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।

এই প্রস্তাব জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদকে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে সুস্পষ্ট পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছে, যা নিরাপত্তা পরিষদের ওপর সরাসরি চাপ সৃষ্টি করবে।

রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের ব্যর্থতার জন্য মিয়ানমারকে দায়ী করে সুস্পষ্ট রাজনৈতিক সদিচ্ছা প্রদর্শন ও প্রত্যাবর্তনের উপযোগী পরিবেশ তৈরিসহ সুনির্দিষ্ট ১০টি বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে।

প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছে ১৪০টি দেশ। বিপক্ষে ভোট দিয়েছে চীন, রাশিয়াসহ নয়টি দেশ। ভোট দেয়া থেকে বিরত ছিল ৩২টি দেশ। প্রস্তাবটি ভোটে যাওয়ার আগে এর পক্ষে যৌক্তিকতা তুলে ধরে বক্তব্য দেন ফিনল্যান্ড, কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র, তুরস্ক, সৌদি আরব ও সুইজারল্যান্ডের প্রতিনিধিরা।

তৃতীয় কমিটিতে গৃহীত এই প্রস্তাব আগামী মাসে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের প্লেনারিতে উপস্থাপিত হবে। ওআইসি ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) পক্ষে প্রস্তাবটি উপস্থাপন করে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ফিনল্যান্ড।

জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের পক্ষ থেকে দেয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, শুরু থেকেই এই প্রস্তাব প্রক্রিয়াকরণ, উপস্থাপন ও গ্রহণের ক্ষেত্রে নিবিড়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে মিশন। প্রস্তাবটি পাস হওয়ায় জাতিসংঘ ও এর সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে ধন্যবাদ জানানো হয়েছে। মিয়ানমারে সেনা নিপীড়নের মুখে ২০১৭ সালের আগস্টে লাখ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়ার পর ওই বছরই এই কমিটিতে প্রথম প্রস্তাব পাস হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই প্রস্তাব মিয়ানমারকে বিচারের আওতায় আনা ও অবরোধ আরোপের ক্ষেত্রে চাপ সৃষ্টি করবে। সম্প্রতি জাতিসংঘের বিচারিক আদালতে (আইসিজে) রোহিঙ্গা গণহত্যার দায়ে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গাম্বিয়ার মামলা ও আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) রোহিঙ্গা নিপীড়নের পূর্ণ তদন্ত শুরুর সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানানো হয়।