বিশেষ সংবাদদাতা :
ভারতের অযোধ্যায় ঐতিহাসিক বাবরী মসজিদের জায়গায় রাম মন্দির নির্মাণে ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টের সাম্প্রদায়িক রায়ের প্রতিবাদে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ চট্টগ্রাম মহানগরের উদ্যোগে (১৫ নভেম্বর) শুক্রবার বাদজুমা চটগ্রাম আন্দরকিল্লা শাহী মসজিদ চত্বরে অনুষ্ঠিত হয়।

সমাবেশে প্রধান অতিথির ভাষণে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব আল্লামা জুনাইদ বাবুনগরী বলেছেন, বাবরি মসজিদ নিয়ে ভারতীয় সুপ্রিম কোর্ট যে রায় দিয়েছে তা চরম পক্ষপাতমূলক। মূলত এটি ক্ষমতাসীন উগ্রহিন্দুত্ববাদী মোদী সরকারের ফরমায়েশি রায়। এই রায়ে মুসলমানরা ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছে। এটা সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টিকারী রায়। মুসলমানদের নির্মূল করে হিন্দুত্ববাদী ভারতে রামরাজ্য প্রতিষ্ঠার রাষ্ট্রীয় ষড়যন্ত্র। মুসলিম বিশ্ব এই রায় ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে।
তিনি বলেন, ভারতের প্রত্নতাত্বিক জরিপের তথ্য অনুযায়ী সেখানে কোন হিন্দু মন্দিরের অস্থিত্ব প্রমাণিত হয়নি। অথচ রাম জন্মভূমির কল্পিত দাবীকে কেন্দ্র করে মসজিদের জায়গাটি মন্দির নির্মাণের জন্যে দিয়ে দেয়া হলো। ১৫২৯ সালে নির্মিত প্রায় পাঁচশত বছরের পুরোনো ঐতিহাসিক বাবরী মসজিদটি ব্রিটিশ বেনিয়া এবং ভারত স্বাধীনতার পর গান্ধী সহ অনেক হিন্দু সরকার ক্ষমতায় ছিল কিন্তু তারা বাবরী মসজিদ নিয়ে কোন ষড়যন্ত্র করেননি। আজকে মুসলিম বিদ্বেষী জালেম মোদী সরকার ভারতীয় সুপ্রীম কোর্টের মাধ্যমে বাবরী মসজিদের জায়গায় রাম মন্দির নির্মাণের রায় দিয়ে মুসলিম উম্মাহর সাথে হিন্দুস্তানের যুদ্ধ (গজওয়ায়ে হিন্দ) বাঁধানোর আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়ে দিয়েছে।

আল্লামা জুনাইদ বাবুনগরী বলেন, মসজিদ বায়তুল্লাহর অংশ, বায়তুল্লাহর সম্মান রক্ষায় আমরা জীবন দিতে প্রস্তুত। আমাদের আর ঘরে বসে থাকার সময় নেই। লড়াইয়ের মাধমে বাবরী মসজিদের জায়গা রক্ষা করতে হবে। মুসলমানদের শরীর থেকে রক্ত থাকতে শহীদ বাবরী মসজিদের জায়গায় রাম মন্দীর মসলিম উম্মাহ মেনে নেবে না। তিনি বলেন, প্রযোজনে আমীরে হেফাজতসহ ওলামায়ে কেরামের পরামর্শ নিয়ে ভারত অভিমূখে লংমার্চ ঘোষণা করা হবে।

জুমাবার (১৫ নভেম্বর) বাদজুমা চট্টগ্রাম আন্দরকিল্লা শাহী মসজিদের চত্বরে আয়োজিত বিশাল বিক্ষোভ সমাবেশ নগর সভাপতি মাওলানা তাজুল ইসলাম (পীরসাহেব ফিরোজশাহ) এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। এতে বক্তব্য রাখেন, কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা লোকমান হাকীম, মাওলানা মঈনুদ্দিন রুহী, মাওলানা সরোয়ার কামাল আজিজী, মাওলানা আলী ওসমান, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা নাছির উদ্দিন মুনীর, হেফাজত নেতা মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী, মাওলানা হাজী মুজাম্মেল, কারী ফজুলল করিম জিহাদী, মাওলনা মীর ইদরিস, মাওলানা সরোয়র আলম, হাফেজ ফয়সাল, মাওলানা আনম আহমদুল্লাহ, মাওলানা ইকবাল খলিল, মাওলানা জাহাঙ্গীর মেহদী, মাওলানা আনোয়ার রব্বানী, মাওলানা অশরাফ বিন ইয়াকুব, মাওলানা কুতুবুদ্দিন, মাওলানা জুনাইদ জওহার, মাওলানা মোহাম্মদ ইউনুস, মাওলানা ওসমান কাসেমী প্রমূখ।

এদিকে একই সময়ে একই দাবীতে কক্সবাজার হেফাজতের বিক্ষোভ সমাবেশ এর ঘোষণা থাকলেও তা পিছিয়ে আগামী রবিবার বিক্ষোভের তাং পুননির্ধারণ করা হয়।