সিবিএন ডেস্কঃ

দুর্নীতির মাধ্যমে সরকারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে কক্সবাজার বিমানবন্দর উন্নয়ন প্রকল্পের (প্রথম পর্যায়) প্রকল্প পরিচালক মো. আমিনুল হাসিবকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। বেবিচকের চাকরি প্রবিধানমালা ১৯৮৮-এর ৪৫(১) ধারার বিধান অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থা নেয়া হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মহিবুল হক বণিক বার্তাকে জানান, প্রধানমন্ত্রী দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছেন। এর অংশ হিসেবে কক্সবাজার বিমানবন্দর উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালকের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ তদন্ত করেন মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিব। তদন্তে তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। পরবর্তী সময়ে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে বেবিচককে নির্দেশ দেয়া হয়, যার প্রেক্ষিতে  বেবিচক বিভাগীয় মামলা করে। পরে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের তদন্ত প্রতিবেদন সূত্রে জানা গেছে, কক্সবাজার বিমানবন্দর উন্নয়ন প্রকল্পের (প্রথম পর্যায়) প্রকল্প পরিচালক হিসেবে মো. আমিনুল হাসিব নিয়োগ পান ২০১২ সালে ৪ অক্টোবর। প্রকল্পের ভূমি অধিগ্রহণের জন্য কক্সবাজার জেলায় ০৪/২০১৫-২০১৬ নং ভূমি অধিগ্রহণ কেসে ৬৯ কোটি ২৮ লাখ ৭২ হাজার টাকা গত ২৩ মের মধ্যে জমা দিতে চিঠি পাঠান কক্সবাজার জেলা প্রশাসক। প্রকল্প পরিচালক হিসেবে মো. আমিনুল হাসিবের দায়িত্ব ছিল নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এ অর্থ জেলা প্রশাসকের তহবিলে জমা দেয়া। কিন্তু তিনি নির্ধারিত সময়ে অর্থ জমা দিতে ব্যর্থ হন, যার পরিপ্রেক্ষিতে আইন অনুযায়ী ভূমি অধিগ্রহণ কেসটি বাতিল হয়ে যায়। প্রকল্পটি পুরনো ভূমি অধিগ্রহণ আইনের আওতায় হওয়ায় ক্ষতিপূরণ বাবদ জমির দেড় গুণ অর্থ পরিশোধের জন্য নির্ধারিত ছিল। কিন্তু অধিগ্রহণ কেসটি বাতিল হওয়ায় এখন সেটি ২০১৭ সালের আইনের আওতায় সম্পন্ন করতে হবে। এ কারণে জমির মূল্য তিন গুণ এবং এ সময়ে ওই এলাকায় জমির বর্ধিত মূল্যের হারে পরিশোধ করতে হবে। এজন্য সরকারের কমপক্ষে ১০০ কোটি টাকা অতিরিক্ত ব্যয় করতে হবে। তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে, মো আমিনুল হাসিব স্থানীয় ভূমি মালিক ও কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের কিছু কর্মচারীর সঙ্গে মিলে প্রকল্পের ব্যয় বৃদ্ধি করে অতিরিক্ত অর্থ দুর্নীতির মাধ্যমে আত্মসাৎ করার ষড়যন্ত্র করেছেন। প্রকল্প পরিচালকের ব্যক্তিগত ব্যর্থতায় ভূমি অধিগ্রহণ কেসটি বাতিল হলেও দীর্ঘ চার মাসেও ভূমি অধিগ্রহণের জন্য জেলা প্রশাসক বরাবর নতুন করে আবেদন করা হয়নি।

তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কক্সবাজার বিমানবন্দর উন্নয়ন প্রকল্পের (প্রথম পর্যায়) একটি কম্পোন্যান্ট হিসেবে বিমানবন্দরের ৩৭ কোটি টাকা ব্যয়ে সীমানাপ্রাচীর নির্মাণে স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী নির্মাণ করা হয়নি। প্রকল্প পরিচালকের ব্যক্তিগত ব্যর্থতা, অদক্ষতা ও দুর্নীতির কারণে এ প্রকল্পের কাজে মারাত্মক ত্রুটি হয়েছে।

-বণিক বার্তা