মোঃ নিজাম উদ্দিন, চকরিয়া:
চকরিয়া কেন্দ্রীয় উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক দিদারুল ইসলামকে বরখাস্ত ‘এখতিয়ার বহির্ভূত’ উল্লেখ করে তাকে স্বপদে বহাল রেখে সমুদয় বকেয়া বেতন-ভাতা প্রদানের জন্য নির্দেশ দিয়েছে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ড। গত ১৮ জুন ২০১৯ ইং তারিখে বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক এবিএম দিদারুল ইসলামকে অর্ধ-বেতনে সাময়িক বহিষ্কার করেন পরিচালনা কমিটি।
চূড়ান্ত বহিষ্কারের জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড চট্টগ্রাম বরাবর আবেদন করা হলে গত ১৫ অক্টোবর ২০১৯ ইং বোর্ডের আপিল অ্যান্ড আর্বিট্রেশন কমিটির ৪২ তম সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পুনর্বহালের এ নির্দেশ দেন।
সম্প্রতি অভিযোগ উঠেছে, চকরিয়া কেন্দ্রীয় উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি বোর্ডের নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষককে স্বপদে পুনর্বহাল করছেন না। এদিকে শিক্ষক এবিএম দিদারুল ইসলাম বোর্ডের নির্দেশনার পর কমিটির সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকের সাথে বেশ কয়েকবার যোগাযোগ করেন। এমনকি গত ৬ নভেম্বর তাকে স্বপদে পুনর্বহাল ও বকেয়া বেতন-ভাতা প্রদানে লিখিত আবেদনও করেন। কিন্তু তাতে কোন প্রকার সুফল পাননি তিনি। বর্তমনে ভুক্তভোগী এ শিক্ষক বোর্ডের নির্দেশনা অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রশাসনিক দপ্তরে আবেদন করেছেন।
সহকারী প্রধান শিক্ষক এবিএম দিদারুল ইসলাম জানান- প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদুল হক আর্থিক দুর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে লাখ-লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন। এসব লুটপাটে ভাগিদার করতে চেয়েছিলেন তাকে। কিন্তু তাতে রাজি না হওয়ায় মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অভিযোগ সাজিয়ে বিদ্যালয় কমিটির সভাপতিসহ ষড়যন্ত্র শুরু করেছে।
শিক্ষার্থীদের কয়েকজন অভিভাবক বলেন, এবিএম দিদারুল ইসলাম অত্যন্ত নিষ্ঠার সাথে দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে সহকারী শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন। সততা ও সুনামে ঈর্ষান্বিত হয়ে সর্বজনপ্রিয় এ শিক্ষকের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে স্কুল থেকে বের করে দেওয়ার অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে। শিক্ষা জগতে এটি কখনো কাম্য হতে পারে না।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদুল হক জানান, বৈঠকের দিন ধার্য হওয়ার পর আমারা সময়ের আবেদন করেছিলাম। পরে আমাদের অনুপস্থিতিতে বোর্ড থেকে এ ঘোষণা দিয়েছে। বিষয়টি আমরা আপিল করব বা তাতেও যদি নাহয় আমরা কোর্টে যাব।
এ ব্যাপারে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মাষ্টার সিরাজ আহমেদ একই বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, বোর্ড কর্তৃক প্রাদান করা রায়টি একতরফা হয়েছে। আমরা ওই বৈঠকে যায়নি। এ নির্দেশনার বিরুদ্ধে আমরা আপিল করতে যাচ্ছি।
কক্সবাজার জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ ছালেহ উদ্দিন চৌধুরী জানান, বিষয়টি আমি শুনেছি। শিক্ষা বোর্ড থেকে অনুলিপি আমার কাছেও দিয়েছে। বোর্ডের নির্দেশনা মতে সহকারী প্রধান শিক্ষককে বহাল রাখা উচিত। তবে কমিটি থেকে যদি আপিল করে সে ক্ষেত্রে আমাদের করার কিছু থাকবেনা।