তোফায়েল আহমদঃ
কাবাগারে আটক এক ইয়াবা কারবারির স্ত্রী মোবাইলে আকুতি জানিয়ে বলছিলেন, তার দুই সন্তানের দিকে তাকিয়ে হলেও যাতে আমি তার স্বামীর কারবারের সংবাদ লেখা থেকে বিরত থাকি। তার স্বামী এখন জামিনে বের হবেন না। কারবারি স্বামী ও স্ত্রীর আশংকা, কারাগার থেকে বের হলেই আবারও লেখালেখি শুরু হবে। কেন জানি এজন্য তারা কেবল আমাকেই দুষছেন। লেখা হলেই অগত্যা তাকে আবারো ঢুকতে হবে কারাগারে। কারবারির স্ত্রী বলেন, আমি আপনার পায়ে পড়ি।আমার দুই শিশুর দিকে একবার তাকান। আপনার লেখায় আমার স্বামী আজ কারাগারে। আমি বহু কস্টে আপনার মোবাইল নম্বরটা নিয়েছি। স্বামী সম্পর্কেও তার অভিযোগের শেষ নেই। বলেন, সংসারও করতাম না। কিন্তু সন্তান দু’ টির মুখ দেখেই উপায়হীন-বলেন তিনি। স্বামীর কারবারের এতদিনের টাকা কোথায় জানতে চাইলে তার জবাব, বদমায়েশের টাকা বদমাশিতেই যায়। আবারও ঘুরেফিরে আগের কথায় ফিরে তিনি বলেন- আপনি আমাকে কথা দেন, আমার স্বামীর বিরুদ্ধে আর লিখবেন না। একজন মা যখন তার সন্তানদের জন্য আকুতি জানান- তখন বিব্রত না হয়ে পারা যায় না। আমি তার কাছে জানতে চাইলাম, তার স্বামী কতদিন ধরে কারবারে জড়িত রয়েছেন ? এমন প্রশ্নে বেশ বিব্রত বোধ করেন মহিলা। কেবল তার দুইটি শিশুর অজুহাতেই আমার নিকট থেকে লেখালেখি না করার নিশ্চয়তা আদায় করে নিতে চান তিনি। আমি এবার তাকে বললাম, দেখুন আপনার দুই শিশুর লালন পালনের জন্য আপনার স্বামীকে কারামুক্ত করতে চান। অথচ আপনার স্বামীর পাচার করা কোটি কোটি ইয়াবায় আপনার সন্তানের মত অগনিত সন্তান ইয়াবা আসক্ত হয়ে পড়েছে। কে দায়ী এমন কাজের জন্য ? এমন কথায় এবার তিনিও বিব্রত হলেন। তারপরও নিষ্ঠুরতম পেশার কারনে এই নারী কে সন্তোষজনক জবাব দিতে পারলাম না। সত্যিই মনে কস্ট পাচ্ছি।

তোফায়েল আহমদ
বিশেষ প্রতিনিধি, দৈনিক কালের কন্ঠ, কক্সবাজার।