তাওহীদুল ইসলাম নূরী

১২ রবিউল আউয়াল ১৪৪১ হিজরী বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (স.) এর ১৪৪৯ তম জন্ম ও ১৩৮৬ তম ওফাত (মৃত্যু) দিবস৷
হযরত মুহাম্মদ (স.) আল্লাহর প্রেরিত বান্দা ও রাসূল। সমগ্র বিশ্বের মুক্তির ধারক,বাহক। যাকে সৃষ্টির ফসল আজ আমরা এবং গোটা পৃথিবী। মহান আল্লাহ তাঁর জীবনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আমাদের জন্য করেছেন আদর্শ।পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেছেন “আমি রাসূল (স.) এর জীবনে তোমাদের জন্য দিয়ে দিয়েছি সর্বশ্রেষ্ঠ আদর্শ”। এ থেকে আমরা রাসূল (স.) কে আদর্শ হিসেবে গ্রহনের প্রেরণা পাই। এখন কথা হল আদর্শ কী? আদর্শ হচ্ছে এমন একটা বিষয় যেটি অনুসরণীয় এবং অনুকরণীয়। তাহলে বিশ্বনবীর জীবনের শুরু থেকে শেষ-ই আমাদের প্রথমে অনুসরণ এবং পরবর্তীতে অনুকরণ করতে হবে। সমস্থ পৌত্তলিকতার পূজা,অন্যায়,অত্যাচার,হত্যা,লুণ্ঠনের অপসময়ে “এক আল্লাহর উপর বিশ্বাস স্থাপনেই মানবতার মুক্তি” এই নিরেট সত্য যিনি প্রচার করেছিলেন,সেই মানবতার মুক্তির দিশারী হযরত মুহাম্মদ (স.) কে অনুসরণ বৈ আল্লাহকে পাওয়া অসম্ভব। কোরআনের ভাষায় ” হে রাসূল (স.) বলুন,তোমরা যদি আল্লাহকে ভালবাসাতে চাও,তবে নবীকে অনুসরণ কর। তাহলে আল্লাহ নিজেই তোমাদের ভালবাসবেন”।
উপরের আয়াতদ্বয় থেকে আমরা এই সিদ্বান্তে উপনীত হতে পরি যে,সমগ্র বিশ্বের সকল বয়সের,সকল শ্রেণি পেশার মানুৃষের নিকট রাসূল (স.) এর জীবন ছাড়া কারও জীবন অনুসরণীয়,অনুকরণীয় হতে পারে না। তাই জীবনের শুরু থেকে শেষ অবধি তার আদর্শই আমাদের গ্রহণের প্রাণান্তকর চেষ্টায়রত থাকতে হবে। কেনই বা হবে না? তাঁর সেই ৬৩ বছরের জীবনে সংগঠিত প্রায় ৪৫ হাজার ঘটনার প্রত্যেকটিতেই তো মানবতার জন্য সর্বশ্রেষ্ঠ শিক্ষা,কল্যাণ এবং আদর্শ বিদ্যমান। এজন্যই একদা হযরত আয়েশা ছিদ্দিকা (র.) কে সাহাবায়ে কেরাম “কেমন ছিল বিশ্বনবীর জীবন? ” প্রশ্ন করলে তিনি পাল্টা “তোমরা কী কোরআন পড় নি? ” প্রশ্ন করে নিজেই বলেছিলেন “একটা জীবন্ত কোরআন যদি দেখতে চাও,তাহলে বিশ্বনবীর দিকে তোমরা তাকিয়ে দেখ”। আসলেই বিশ্বনবীর সম্পূর্ন জীবনটাই ছিল কোরআনের বাস্তব প্রতিফলন। আমরা সুখে কীভাবে আল্লাহর শোকরিয়া আদায় করব, বিপদে কঠিন সময়ে কেমনে ধৈর্য্য ধারণ করব বিশ্বনবী তার সমগ্র জীবনজুড়ে এই সবকিছুই দেখিয়ে গেছেন। তাই হযরত আবু বকর,হযরত উমর ফারুক,হযরত উচমান,হযরত আলী (র.) প্রমুখ ব্যক্তি যেমন বিশ্বনবীকে অনুসরণ,অনুকরণ করে দুনিয়া,আখিরাত উভয়টি সফল করেছেন আমাদেরও তাই করতে হবে। আসলে বিশ্বনবীর মান, মর্যাদা কতটা বেশী তা লিখে কিংবা ভাষায় প্রকাশ পৃথিবীর কারও পক্ষেই সম্ভব নয়। সেদিন উমর ফারুক (র.) যথার্থই উচ্চারণ করেছিলেন
“মানুৃষ না হতেন যদি আল্লাহর এ প্রিয়জন,
চর্তুদশীর রাত করতেন তব তিনি রৌশন”।

আল্লাহ বিশ্বনবীর জীবনী অনুসরণ,অনুকরণের মাধ্যমে আমাদের দুনিয়া,আখিরাত উপযোগি মানুৃষ হিসেবে কবুল করুন…

লেখকঃ
তাওহীদুল ইসলাম নূরী
আইন বিভাগ(অধ্যয়নরত)
আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্রগ্রাম।
শাহারবিল সদর, চকরিয়া, কক্সবাজার।