এ কে এম ইকবাল ফারুক, চকরিয়া:
চকরিয়া উপজেলা পরিষদের নতুন ভবন নির্মানের ৩০ শতাংশ কাজ শেষ না করেও ১ কোটি ১২ লাখ টাকার বিল উত্তোলন করে হাতিয়ে অভিযোগ উঠেছে নির্মান কাজের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নূর সিন্ডিকেট বিরুদ্ধে। কাজ না করেও চার দফায় এ টাকা হাতিয়ে নেন ওই ঠিকাদরী প্রতিষ্ঠান। ৬ কোটি ৩৯ লাখ ৯১ হাজার ১৩৮ টাকা ব্যয়ে ২০১৮ সালের ১০ সেপ্টেম্বর ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান উপজেলা পরিষদের নতুন ভবনের নির্মান কাজ শুরু করলেও কার্যাদেশ মতে তার সময়সীমা শেষ হচ্ছে চলতি বছরের ১২ নভেম্বর। নির্মান কাজের মেয়াদকাল প্রায় এক বছর শেষ হতে চললেও ৩০ শতাংশ কাজও শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নূর সিন্ডিকেট। এছাড়া ভবনের নির্মাণ কাজে ব্যবহৃত ইট, বালি, রড ও সিমেন্ট অত্যান্ত নিন্মমানের বলেও অভিযোগ উঠেছে।

জানা যায়, গত এক বছর পূর্বে ৪ তলা বিশিষ্ট আধুনিকমানের উপজেলা পরিষদ ভবন নির্মাণের জন্য সরকারীভাবে বরাদ্ধ দেয়া হয় ৬ কোটি ৩৯ লাখ ৯১ হাজার ১৩৮ টাকা। যথারীতি টেন্ডার বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নূর সিন্ডিকেট নামক একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এ কাজের কার্যাদেশ পায়। কার্যাদেশে ভবন নির্মান কাজের সময়সীমা বেঁধে দেয়া হয় এক বছর। পরবর্তীতে ২০১৮ সালের ১১ জুলাই কার্যাদেশ পাওয়ার পর একই বছরের ১০ সেপ্টেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু করে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নুর সিন্ডিকেট। কিন্তু নির্মান কাজের মেয়াদকাল প্রায় এক বছর শেষ হতে চললেও এখনো ৩০ শতাংশ কাজও শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। কবে নাগাদ এ নির্মান কাজ শেষ হবে তাও নিশ্চিতভাবে কেউ বলতে পারছেনা। নতুন এ ভবনটিতে উপজেলার ১৮টি দপ্তরের কার্যক্রম চলার কথা রয়েছে।

শনিবার দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, এক বছর পূর্বে নতুন উপজেলা পরিষদ ভবন নির্মাণ কাজটি শুরু করা হলেও এখনো ৭০ শতাংশ কাজ অসম্পূর্ণ রয়েছে। কাজ চলছে অত্যন্ত ধীর গতিতে। ভবন নির্মাণ কাজের তদারকি করছেন চকরিয়া এলজিইডি অফিসের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মিরাজুল ইসলাম।

কাজের ধীরগতি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে এলজিইডির উপ-সহকারী প্রকৌশলী মিরাজুল ইসলাম বলেন, নির্মাণ কাজের শুরুতে বর্ষার কারণে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নির্দিষ্ট সময়ে কাঙ্খিত কাজে এগুতে পারেননি। তবে ঠিকাদার এ পর্যন্ত ৪ দফায় ১ কোটি ১২ লাখ টাকার বিল উত্তোলন করে নিয়ে গেছে। বাকি কাজ গুলো দ্রুত সম্পন্নের জন্য বারবার তাগদা দেয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

এলজিইডির চকরিয়া উপজেলা প্রকৌশলী কমল কান্তি পাল বলেন, নতুন উপজেলা পরিষদ ভবন নির্মাণ কাজটি আমি চকরিয়ায় পোষ্টিং হওয়ার আগে টেন্ডার হয়েছে। নানা জটিলতার কারণে সঠিক সময়ে ঠিকাদারকে আমরা কাজের কার্যাদেশ দিতে পারিনি। সেই কারণে নির্মান কাজের একটু ধীরগতি হয়েছে। নির্মানকাজে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের গাফেলতিকে দায়ী করেন তিনি। উপজেলা প্রকৌশলী আরও বলেন, নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ না হলেও বর্তমানে ভবন নির্মাণ কাজের অগ্রগতি বেশ সন্তোষজনক। অবশ্য কাজটি স্বচ্ছতার মাধ্যমে সমাপ্ত করার জন্য আমাদের পক্ষ থেকে নিয়মিত মনিটরিং করা হচ্ছে। কাজটি সমাপ্ত করার জন্য ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে নতুন করে সময় বেঁধে দেয়া হবে বলেও জানান তিনি।