এম.জিয়াবুল হক, চকরিয়া
চকরিয়ায় রাতের অন্ধকারে বিদ্যালয় থেকে পাচারকালে পাঠ্য বইসহ একটি পিকআপ ট্রাক জদ্ধ করা হয়েছে। এসময় আটক করা হয়েছে ট্রাক চালক, হেলপার ও ফেরিওয়ালাসহ ৪ জনকে। তারা সাতকানিয়া কেরানিহাটের বাসিন্দা বলে জানা গেছে। প্রাথমিক জিঙ্গাসাবাদ শেষে তাদেরকে স্কুলের জিম্মায় চকরিয়া থানা পুলিশের কাছে সৌর্পদ্দ করা হয়েছে। সোমবার রাত দশটার দিকে চকরিয়া উপজেলার খুটাখালী কিশলয় আদর্শ শিক্ষা নিকেতন স্কুলে ঘটে এ ঘটনা। এ ঘটনায় এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে বিদ্যালয় এলাকা পরিদর্শন করেছেন চকরিয়া উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভুমি) মো.তানভীর হোসেন। ওইসময় তিনি বিদ্যালয় কমিটি প্রধান শিক্ষক এবং সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বই চুরির ঘটনা প্রসঙ্গে কথা বলেন।

বইসহ ট্রাক জব্দের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও খুটাখালী ইউনিয়ন আ’লীগ সভাপতি আলহাজ্ব জয়নাল আবেদীন। তিনি ঘটনার সুষ্ট তদন্ত পূর্বক দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন।

স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, সোমবার রাতে কয়েকজন লোক নিয়ে একটি ট্রাক বিদ্যালয়ের মাঠে অবস্থান নেয়। এসময় তারা বিদ্যালয়ের ভেতর থেকে বিভিন্ন সালের পুরাতন পাঠ্য বই বস্তা বন্দি করে ট্রাকে উত্তোলন করেন। বিষয়টি স্থানীয়দের নজরে আসলে রাতেই চকরিয়া ইউএনওকে মোবাইল ফোনে বিষয়টি অবহিত করা হয়।

চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নুরুদ্দীন মুহাম্মদ শিবলী নোমান তাৎক্ষনিক স্কুল কমিটির সভাপতিকে বইসহ গাড়ি জদ্ধের নির্দেশ দেন। তারই নির্দেশে সভাপতি আলহাজ্ব জয়নাল আবেদীন রাত সাড়ে দশটার সময় বিদ্যালয়ে পৌঁছে বই ভর্তি ট্রাক জদ্ধ করে। এসময় পাচার কাজে জড়িত ট্রাক ড্রাইভার, হেলপার ও ফেরিওয়ালাসহ ৪ জনকে আটক করেন। পরবর্তীতে তাদের চকরিয়া থানায় সৌর্পদ্দ করা হয়।

প্রাথমিক জিঙ্গাসাবাদে আটক ট্রাক চালক হেলপার ও ফেরিওয়ালা স্কুলের প্রধান শিক্ষক,সহকারী শিক্ষক ও কমিটির বেশ একজন সদস্য এ কাজে জড়িত বলে স্বীকারোক্তি দিয়েছে। তবে ওইসময় তাদের কাউকে পাওয়া যায়নি। ঘটনার খবর পেয়ে ছুটে আসেন কমিটির সদস্য মুজিবুর রহমান ও আবুল কালাম আজাদ।

মুজিবুর রহমান ও আবুল কালাম আজাদ জানান, প্রধান শিক্ষককের যোগসাজশে বই পাচার কাজে কিছু শিক্ষক ও কমিটির সদস্য জড়িত রয়েছে। তবে বই বিক্রির ব্যাপারে তারা কিছুই জানেন না। এমনকি সভাপতি,প্রধান শিক্ষক কেউ আমাদেরকে জানাইনি।

বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি আলহাজ্ব জয়নাল আবেদীন বলেন, ইউএনও স্যারের ফোন পেয়ে রাতেই বিদ্যালয়ে গিয়ে পুরাতন পাঠ্যবই ভর্তি ট্রাক জদ্ধ করি এবং তাৎক্ষনিক প্রধান শিক্ষককে ফোন দিয়ে বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি কোন সদুত্তোর দিতে পারেন নি। আপাতত বইসহ ট্রাক জদ্ধ করা হয়েছে। এ বিষয়ে বিস্তারিত জেনে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক মো. তাজুল ইসলাম বলেন, কমিটির সদস্যদের সম্মতি নিয়ে পুরাতন ছিড়া বই বিক্রির জন্য কমিটির একজন সদস্যকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। রাতে কেন পাচার করা হচ্ছে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান।

স্থানীয় লোকজন অভিযোগ তুলেছেন, বিগত ৬ মাস পূর্বেও প্রধান শিক্ষকের যোগসাজশে প্রায় অর্ধ লক্ষাধিক টাকার বই খাতা বিক্রি করা হয়েছে। এসব অপকর্মে জড়িতদের আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানান এলাকার সচেতন মহল।

চকরিয়া থানার ওসি (তদন্ত) একেএম শফিকুল আলম চৌধুরী বলেন, বিদ্যালয়ের পুরাতন পাঠ্যবই পাচার চেষ্ঠার ঘটনায় আটক চারজনকে প্রধান শিক্ষকের আবেদনের প্রেক্ষিতে ছেঁেড় দেওয়া হয়েছে। আবেদনে প্রধান শিক্ষক বলেছেন, আটককৃতরা ঘটনার সঙ্গে জড়িত নন।