নিজস্ব প্রতিবেদক:
মানবপাচারসহ বহু মামলার পলাতক আসামী কক্সবাজার শহরের কলাতলী হোটেল-মোটেল জোনের ব্যবসায়ীদের আতঙ্ক নোমান-উল-হক সাজিম (২৭)। মাদক, ডাকাতি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, দখলবাজিসহ এমন কোন অপরাধ নেই যা সে করেনা। যেন অঘোষিত রাজা। সাজিম বাহিনীর কারণে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী। রহস্যজনক কারণে প্রশাসনকেও পাত্তা দেয় না। হাবভাব অনেকটা ডেমকেয়ার।
সোমবার (৪ নভেম্বর) দিবাগত রাত ৯ টার দিকে ‘আলোচিত ত্রাস’ সাজিমকে গোয়েন্দা পুলিশের হাতে সোপর্দ করেছে স্থানীয়রা। সে কলাতলী সৈকতপাড়ার জমিরুল কাদেরের ছেলে। তার মা জুবাইদা ইয়াসমিন এলাকায় ‘মক্ষীরানী’ হিসেবে চিহ্নিত। যিনি মাদকসহ অনেকবার গ্রেফতার হয়েছিল। সম্প্রতি মাদকের মামলায় কারামুক্ত হন পিতা জমির। সাজিমের পিতা ও মাতা দুজনের বিরুদ্ধে মাদক, পতিতাবৃত্তিসহ বিভিন্ন অজুহাতে অসংখ্য মামলা রয়েছে। তার পুরো পরিবারই অপরাধে জড়িত।
এ বিষয়ে কক্সবাজার গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ইন্সপেক্টর মানস বডুয়া জানান, সাজিমের বিরুদ্ধে মানবপাচার, অস্ত্র, ডাকাতির প্রস্তুতি, মারামারিসহ অন্তত ১০টি মামলা রয়েছে। তার কারণে স্থানীয়রা জিম্মি বলে বিভিন্নজনের অভিযোগ আছে। মানবপাচার মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
সাজিমের নামে কক্সবাজার সদর মডেল থানা ও চট্টগ্রামে জোরালগঞ্জ থানায় মানবপাচারসহ বিভিন্ন অভিযোগে ১০টির মতো মামলা রয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। যার মধ্যে বেশীর ভাগই গুরুতর অভিযোগের মামলা।
স্থানীয়রা জানিয়েছে, সাজিমের বিরুদ্ধে পতিতা ব্যবসা, মানবপাচার, চাঁদাবাজি, মদগাঁজা-ফেন্সিডিল ব্যবসাসহ নানা অপরাধের খ্যাতি আছে। এতে প্রতিবাদ করতে চাইলে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে চুপ করিয়ে দেয় বলেও অভিযোগ তার বিরুদ্ধে।
তাদের মালিকানাধীন রাজ বীর রিসোর্ট (মায়া কানন) ভাড়া দিয়ে এ পর্যন্ত অন্তত ১০ জনের সাথে প্রতারণা করেছে। চুক্তি ভঙ্গ করে মিথ্যা অজুহাতে প্রত্যেক ভাড়াটিয়াকে তাড়িয়ে দিয়েছে। প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে সাধারণ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছে লক্ষ লক্ষ টাকা। সাজিমের ফাঁদে পড়ে অনেকের সর্বস্বান্ত হয়ে গেছে।
মাদক, অস্ত্র, ডাকাতির প্রস্তুতি, মানবপাচার, বিদ্যুৎ বিল খেলাপি ও বন মামলাসহ ডজন কাছাকাছি মামলার আসামি সাজিমের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থার দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী।
ভুক্তভোগী শাহনেওয়াজ আসিফ জানান, পর্যটন জোনের ব্যবসায়ীদের কাছ হতে জোরপূর্বক চাঁদা নেয় সাজিম। হোটেলগুলোতে পতিতা ব্যবসা চালাতে বাধ্য করে। শুধু তাই নয়, এমন কোনো মাদক নেই যা সাজিম পর্যটকদের সাপ্লাই দেয়না। এমনকি পর্যটন জোনের ইয়াবা সম্রাট হিসেবে চিহ্নিত তিনি।