মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী :

বাংলাদেশের মাত্র ১৩ শতাংশ মানুষ ফরমাল আদালতে বিচার পেতে ইচ্ছুক। বাকী ৮৭ শতাংশ মানুষ ফরমাল আদালতের শরণাপন্ন না হয়ে স্থানীয়ভাবে আপোষ মিমাংসা করে বিরোধ নিষ্পত্তি করতে চায়। জিআইজেড নামক একটা আন্তর্জাতিক সংস্থার এই জরীপের তথ্য আমাদের জন্য খুবই দুঃখজনক।আওয়ামীলীগ, বিএনপি, জামায়াত, জাতীয় পার্টি কিংবা কোন দল ক্ষমতায় আছে, কোন দল ক্ষমতায় নাই, সেটা বড় কথা নয়, স্বল্প সময়ে, সানন্দে, বিনামূল্যে সুবিচার পেতেই লিগ্যাল এইডের সেবা নিন। যে কোন আইনী বিষয়ে সহযোগিতা নিন। কারণ কোন রাজনৈতিক দল কখন ক্ষমতায় আছে, কিংবা সেই রাজনৈতিক দলের আমলে আদৌ বিচার পাবো না, এই মানসিকতা সম্পূর্ণ পরিহার করতে হবে। যে কোন অবস্থাতেই বিচার বিভাগ বিচার প্রার্থীদের ন্যায় বিচার নিশ্চিত করতে সবসময়ই বদ্ধ পরিকর।

আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ন্যাশনাল লিগ্যাল এইড সার্ভিসেস অর্গানাইজেশন (এনএলএসএও) এবং কক্সবাজার জেলা লিগ্যাল এইড কমিটির (ডিএলএসি) যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত “শেয়ারিং সেশনস অন ইফেক্টিভ কেস রেফারেন্স মেকানিজম” শীর্ষক এক ওয়ার্কশপে প্রধান অতিথির বক্তব্যে লিগ্যাল এইড প্রকল্পের পরিচালক ও সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মো. আমিনুল ইসলাম একথা বলেন।

কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজ খোন্দকার হাসান মোঃ ফিরোজের সভাপতিত্বে শনিবার ২ নভেম্বর হোটেল ওশেন প্যারাডাইজের শাহ সুজা সম্মেলন কক্ষে জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার ও সিনিয়র সহকারী জজ মৈত্রী ভট্টাচার্যের সঞ্চালনায় ইউএনডিপি’র কমিউনিটি রিকভারি এন্ড রেজিলেন্স প্রজেক্টের সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত এ সভায় অন্যান্যের মধ্যে আইন মন্ত্রণালয়ের বিচার বিভাগের উপ সচিব এস. মোহাম্মদ আলী, কক্সবাজারের চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ তৌফিক আজিজ, যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ-১ ছৈয়দ মুহাম্মদ ফখরুল আবেদীন, যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ-২ মাহমুদুল হাসান, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মোহাঃ শাজাহান আলি, প্রকল্পের উপ পরিচালক ও যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ আবিদা সুলতানা, অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রাজীব কুমার বিশ্বাস, সাবেক অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও ইউএনডিপি’র কর্মকর্তা এডভোকেট মাহবুব মোর্শেদ, সিনিয়র সহকারী জজ আলাউল আকবর, সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ দেলোয়ার হোসেন শামীম, সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাং হেলাল উদ্দিন, সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জেরিন সুলতানা, চকরিয়া চৌকি আদালতের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রাজিব কুমার দেব, সিনিয়র সহকারী জজ খাইরুন্নেচ্ছা, ফাহমিদা সাত্তার, সহকারী জজ রেজাউল হক, জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াউল হক, পিপি এডভোকেট ফরিদুল আলম, লিগ্যাল এইডের প্যানেল আইনজীবী এডভোকেট ইয়াসমিন শওকত জাহান রোজী, এডভোকেট আবদুর রহিম, এডভোকেট মফিজুল আলম, এডভোকেট আবদুল শুক্কুর, এডভোকেট মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী, এডভোকেট এ.বি.এম মহিউদ্দিন, জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা সুব্রত বিশ্বাস, জেল সুপার মোকাম্মেল হোসেন, ভারপ্রাপ্ত জেলা তথ্য অফিসার আবদুস সোবহান, প্রকল্পের কর্মকর্তা ও সিনিয়র সহকারী জজ কাজী ইয়াসিন হাবিব, প্রকল্পের ইন্টারন্যাশনাল কনসালটেন্ট নাসরিন খান, কনসালটেন্ট মানিক বিশ্বাস, ইউএনডিপি’র ডিস্ট্রিক্ট ফ্যাসিলেটর মোঃ দেওয়ান জিন্নাহ, ইউএনডিপি’র আখ্যং মারমা এ মং, বেসরকারি সংস্থা ইপসার আস্থা প্রকল্পের  প্রতিনিধি গুলশান আরা বেগম উপস্থিত ছিলেন। জেলা লিগ্যাল এইড কমিটির প্রধান সহকারী খোকন মাহমুদ ও অফিস সহকারী শফিক সরদার সার্বিক ব্যবস্থানায় আয়োজনের শুরুতে জেলা ও জাতীয় লিগ্যাল এইড কার্যক্রমের উপর ডকুমেন্টারী প্রদর্শন করা হয়। অনুষ্ঠানে সিনিয়র সহকারী জজ কাজী ইয়াসিন হাবিব, জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার মৈত্রী ভট্টাচার্য, ও ইউএনডিপি’র ডিস্ট্রিক্ট ফ্যাসিলেটর মোঃ দেওয়ান জিন্নাহ অনুষ্ঠানে বিষয় ভিত্তিক পৃথকভাবে প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন । দ্বিতীয় পর্বে মুক্ত আলোচনায় মিডিয়েটর ছিলেন-প্রকল্পের উপ পরিচালক ও যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ আবিদা সুলতানা। মুক্ত আলোচনায় যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজদ্বয় ছৈয়দ মুহাম্মদ ফখরুল আবেদীন, মাহমুদুল হাসান, সহকারী জজ জিয়াউল হক, রেজাউল হক, পিপি এডভোকেট ফরিদুল আলম, প্যানেল আইনজীবী এডভোকেট আবদুল শুক্কুর, আখ্যং মারমা অংশ নেন। বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ ও প্রকল্প পরিচালক মোঃ আমিনুল ইসলাম।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, কক্সবাজার জেলা লিগ্যাল কমিটি এখন ৮ টি উপজেলা কমিটি গঠন ও ৩১ টি ইউনিয়ন কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগে ইউনিয়ন কমিটি সমুহের কার্যক্রম শূন্য হলেও গত জুন মাস থেকে ইউনিয়ন কমিটি সমুহের কার্যক্রম বেশ সক্রিয় হয়েছে। ফলে গত জুন মাস থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত বিভিন্ন বিষয়ে বিরোধ সংক্রান্ত ৫৪ টি আবেদন জেলা লিগ্যাল এইড অফিসে এসেছে। জনবল সংকট সহ অনেক সীমাবদ্ধতা সত্বেও যা জেলা লিগ্যাল এইড কমিটির অন্যতম সাফল্য ও বিচারপ্রার্থীদের সেবা প্রদানের অন্যতম পদক্ষেপ।