প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ জানিয়ে নিজেকে আওয়ামী লীগে দাবি করে কুতুবদিয়ার উত্তর ধূরংয়ের সিরাজদৌল্লাহ যে গত ৩১ অক্টোবর দৈনিক বাঁকখালী পত্রিকায় যে প্রতিবাদ লিপি প্রকাশ করেছে তা আমার দৃষ্টিগোচর হয়েছে। উক্ত প্রতিবাদ লিপিতে সিরাজদৌল্লাহ যে কথা ও তথ্য উল্লেখ করেছেন তার সবটিই সম্পূর্ণ মিথ্যাা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন, গভীর উদ্দেশ্যমূলক। তিনি চতুরতা ও শঠতার আশ্রয় নিজের মনগড়াভাবে নিজের স্বাথ্য হাসিলের জন্য উদ্দেশ্যমূলকভাবে প্রতিবাদ লিপিটি প্রকাশ করেছেন।

আমি সোহেল সরওয়ারসিরাজদৌল্লাহর আপন জেঠাতো ভাই। সে সুবাদের তার অতীত ও বর্তমান সব কর্মকান্ড আমাদের নখদর্পণে। সিরাজদৌল্লাহর প্রকাশিত এই প্রতিবাদ লিপির প্রতিবাদ জানিয়ে তার অতীত ও বর্তমান রাজনৈতিক অবস্থান, কর্ম এবং সমস্ত জীবনচিত্র তুলে ধরার চেষ্টা করছি। সিরাজ নিজেকে এখন আওয়ামী লীগ দাবি করেন। তিনি স্বঘোষিত ভাবে নিজেকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য বলে দাবি করেন। তবে তিনি আদৌ আওয়ামী লীগের কোনো পদে নেই। আওয়ামী লীগের কিছু স্বার্থবাদী নেতা টাকার লোভে সিরাজদৌল্লাহকে আশ্রয় ও প্রশ্রয় দিয়ে যাচ্ছেন। সে সুবাদে তিনি সব জায়গায় নিজেকে আওয়ামী লীগ বলে জাহির করে যাচ্ছে। প্রকৃত তিনি সারাজীবনের জন্য আওয়ামী লীগ বিরোধী লোক। তার পুরো পরিবারও জামায়াতের রাজনীতির সাথে জড়িত। তার বড়ভাই শামসুল আলম বাহাদুর বর্তমানে কক্সবাজার জেলা জামায়াতের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং আরেকভাই সৈয়দ মুহাম্মদ বশির উত্তর ধূরং ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা বিএনপির নেতা ।

সিরাজদৌল্লাহর রাজনৈতিক জীবন শুরু হয় শিবিরের মাধ্যমে। তিনি ছাত্রজীবনে শিবিরের কট্টর কর্মী ছিলেন। অথচ তিনি প্রকাশিত সংবাদের দাবি করেছেন তিনি হাটহাজারি কোয়াইশ কলেজে পড়েছেন এবং সেখানে ছাত্রলীগের রাজনীতি। আমি চ্যালেঞ্জ করে চলছি, তিনি কোনো দিন কোয়াইশ কলেজে পড়েননি। তিনি পড়েছেন কুতুবদিয়ার ছমিদিয়া আলিম মাদ্রাসায় এবং সেখানে তিনি শিবিরের সক্রিয় রাজনীতি করেছেন। নিকট সময়ে তিনি শিবির নিয়ন্ত্রিত তৎকালীন সংগঠন ‘ইসলামী বিপ্লব’র সভাপতি ছিলেন। এমনটি ২০১৫ সালের আগ পর্যন্ত তিনি জামায়াতের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে জড়ির ছিলেন। তার প্রমাণ ২০১৩ সালের শেষের দিকে জামায়াতের কেন্দ্রীয় ও জামাায়াত দলীয় সাবেক এমপি হামিদ আযাদ আদালত অবমাননার মামলায় জেল কেটে বের হলে তাকে কুতুবদিয়ায় সংবর্ধণা দেয় জামায়াত। সেই সংবর্ধণায় অগ্রভাগে থেকে হামিদ আযাদকে সংবর্ধনা জানিয়েছিলেন সিরাজদৌল্লাহ। এই সংবর্ধণার ছবি এখন সবখানে ঘুরছে। কিন্তু এই সংবর্ধনার ছবিকে দাবি করছেন, এটি হামিদ আযাদের বেড়িবাঁধ পরিদর্শনের ছবি- যা একেবারে হাস্যকর। একই প্রতিবাদ লিপিতে তিনি দাবি করেছেন স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় রাজাকাররা তাদের বাড়িঘরসহ সবকিছু পুড়িয়ে দিয়েছেন। এটাও একটি জ্বলন্ত মিথ্যাচার। স্বাধীনতা যুদ্ধে তাদের নয়, পাশের আমাদের ঘরবাড়িসহ সবকিছু পুড়িয়ে দিয়েছিলো রাজাকাররা। কেননা তাদের পরিবার ছিলো স্বাধীনতা বিরোধী।

সিরাজদৌল্লাহ যে কখনো আওয়ামী লীগ ছিলন না, তার আরো প্রমাণ হলো- তিনি ৯৬, ২০০১ ও ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে নৌকার বিরদ্ধে কাজ করেছেন। একইভাবে বিভিন্ন নির্বাচনেও সব সময়  আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীদের বিরুদ্ধে কাজ করেছেন। আমার বাবা মরহুম শাহাদাত কবিির

উপজেলা ও ইউনিয়নে তিনবার নির্বাচন করেছেন। আমাদের বাবা ছিলেন একজন উপজেলা শীর্ষ সারির আওয়ামী লীগ নেতা। তাই প্রতিটি নির্বাচনে প্রকাশ্যে আমার বিরুদ্ধে এবং আওয়ামী লীগ বিরোধী প্রার্থীর পক্ষে কাজ তিনবারই আমার বাবাকে হারিয়ে দিয়েছিলেন তারা।

প্রকৃত কথা হচ্ছে, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ পুনরায় ক্ষমতা গ্রহণ করলে ভোল পাল্টাতে উদ্যোগ নেয় সিরাজদৌল্লাহ। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান থাকা এবং নানা সরকারি সুযোগ-সুবিধা ও নিরাপদে থাকার জন্য আওয়ামী লীগ হতে মরিয়া হয়ে উঠেন তিনি। তার অংশ হিসেবে জেলা আওয়ামী লীগ ও উপজেলা আওয়ামী লীগের দু’য়েকজন নেতাকে মোটা অংকের মাধ্যমে ম্যানেজ করে দলে ভিড়তে চেষ্টা শুরু করে। এর অংশ হিসেবে ক্রন্বায়য়ে আওয়ামী লীগের কাছে চলে এসেছে এবং দলের নামে খবরদারি শুরু করে। এভাবে তিনি বর্তমানে এক মস্ত বড় আওয়ামী লীগ ধারণ করেছে। এখন আওয়ামী লীগ নামে তিনি বেশ দাফট দেখাচ্ছেন। দদড়ান ইতিমধ্যে তার হারে মার খেয়েছেন উত্তর ধূরং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আবু বকর ছিদ্দিক, ৪ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রবীণ নেতা ছৈয়দ নূরকে মেরে দাঁত ফেলে দেয় এবং পা ভেঙ্গে দেয়। ২০১৬ সালের ইউপি নির্বাচনে নৌকার প্রার্থীর বিরুদ্ধে নির্বাচন করেছে। ওই সময় বঙ্গবন্ধু, প্রধানমন্ত্রীর ছবি এবং আওয়ামী লীগ অফিস ভাংচুর ও নেতাকর্মীদের মারধর করে। এসব অভিযোগে তার বিরুদ্ধে নাশকতাসহ তিনটি মামলা হয়েছে।
পরিশেষে আমি সিরাজদৌল্লাহর প্রকাশিত প্রতিবাদ লিপির তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং বিষয়টি জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

প্রতিবাদকারী
সোহেল সরওয়ার

পিতা মরহুম শাহাদাত কবির

সাবেক উপজেলা ছাত্রলীগ নেতা, উত্তর ধূরং, কুতুবদিয়া।