এম,জুবাইর হোছাইন, সেন্টমাটিন:

প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলালচল শুরু হয়েছে। বৈরি আবহাওয়ার কারনে দ্বীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর এ প্রথম ১ হাজার ৫০ জন যাত্রী নিয়ে ৩ টি পর্যটকবাহী জাহাজ সেন্টমার্টিনে যাতায়াত শুরু করেন। এতে মুখরিত হয়ে উঠেছে দ্বীপের বিভিন্ন দর্শনীয় পর্যটন কেন্দ্র।

জানা যায়, ১ লা নভেম্বর শুক্রবার সকাল ৯ টা ৩০ মিনিটে দমদমিয়া ঘাট  থেকে   অফ বেঙ্গল ট্যুরিজম পরিচালনায় এমবি ফারহান ক্রুজে ৩ শত ৮০ জন , চৌধুরী গ্রুফ অব ইন্ডাস্ট্রি পরিচালনায় দী আটলান্টিকে৩ শত৫০ জন, (কুতুবদিয়া), কেয়ারী ট্যুরস এন্ড ট্রাভেলস পরিচলনায় কেয়ারী ক্রুজএন্ড ডাইনে ৩ শত১০ জন সেন্টমার্টিনে আগমন করে।   নির্দিষ্ট সময় বিকাল ৩ টায় পযটক নিয়ে ৩ টি পর্যটকবাহী জাহাজ সেন্টমার্টিন ত্যাগ করেন। টেকনাফ সেন্টমার্টিন নৌ রুটে পহেলা নভেম্বর পর্যটক বাহী জাহাজ চলাচলের অনুমতি পাওয়ায় পর্যটক ব্যাবসায়ী ও দ্বীপবাসী অত্যন্ত আনন্দিত। তবে  জরাজীর্ণ জেটিতে ঝুকি নিয়ে উঠানামা করেছে পর্যটক।

যশোর জেলা থেকে আগত মোহাম্মদ আবির (৪৬) পেশায় শিক্ষক। তিনি বলেন, আমি প্রত্যেক বছর কক্সবাজার, টেকনাফ, সেন্টমার্টিনে ঘুরতে আসি। সব জেলায় ঘুরলেও সেন্টমার্টিন না আসলে ভ্রমন অসমাপ্ত থেকে যায়। সে জন্য সেন্টমার্টিনে ভ্রমন। কিন্তু সেন্টমার্টিন জেটি দেখে আমি ভয় পেলাম। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে অন্য জনের সাহায্যে জেটিতে উঠানামা করি।পর্যটক এলাকায় ঝুকিপূর্ণ জেটিতে দূর্ঘটনা ঘটলে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন দায় এড়াতে পারে না।

পর্যটকের গন্তব্য একমাত্র প্রবাল বেষ্টিত সেন্টমার্টিনদ্বীপ। অতীতে জাহাজ চলাচলের অনুমতি পাওয়ার পরের দিন এত ভ্রমন পিপাসু পর্যটক সেন্টমার্টিনে দেখা মিলেনি। কিন্তু চলতি বছর অনুমতির পাওয়ার পরই হাজার পর্যটকের দেখা মিলে সেন্টমার্টিনে। তাই দ্বীপ বাসী ওবিভিন্ন ট্যুর অপারেটর গুলো আনন্দিত। পর্যটক আসায় দেখা মিলায় স্বস্তির নিশ্বাঃস ফেলেছে ব্যাবসায়ীরা। দ্বীর্ঘদিন পর পর্ষটক দের সাক্ষাত পাওয়ায় আনন্দিত এলাকাবাসী। এবং সরগরম হয়ে উঠেছে হোটেল-মোটেল, রেস্তুরা, চা দোকান সহ দ্বীপের দর্শনীয় স্থানগুলো।

নৈসর্গিক সৌন্দর্য্যের লীলা ভুমি সেন্টমাটিন দ্বীপে প্রত্যেক বছর সেপ্টোম্বর মাসের শুরু হয়ে পর্ষটকদের আগমন শুরু হয়। আবহাওয়া অনুকুল থাকা পর্যন্ত পর্ষটক বাহী ৮ টি জাহাজ যাতায়াত করেন।

কক্সবাজারের ট্যুর অপারেটর সমুদ্র বিলাসের গাইড মাহফুজ বলেন, আমি ২৫ জন পর্যটক নিয়ে সেন্টমার্টিনে চুক্তি ভিত্তিক ঘুরাতে আসি।আমার সহ পাঠি মোহাম্মদ আলম, ফারুক সহ১৫ জন ট্যুর অপারেটর পর্যটকের গ্রুপ নিয়ে সেন্টমার্টিনে সফর করেন।

এমভি ফারহান ক্রুজ জাহাজের মাষ্টার মোর্শদ আবু বক্কর বলেন, ৩শত৮২ জন যাত্রী নিয়ে সেন্টমাটিন দ্বীপে আগমন করি। তবে দ্বীপের জেটিতে ভাঙ্গনে যাত্রী উঠানামায় আমরা শংকিত। জাহাজ ভিড়তে সময়ের প্রয়োজন হয়। নষ্ট হচ্ছে জাহাজওজেটি। জেটিতে সংস্কার অপরিহার্য্য।

সেন্টমার্টিন পশ্চিম পাড়ায় অবস্থিত রেষ্টুরেন্ট হোটেল আসমার পরিচালক আবুবকর ছিদ্দিক বলেন, পর্যটকবাহী জাহাজ আসায় আমরা খুশি। প্রথম দিনে ১৫ হাজার টাকা বিক্রি করি। আরো আগে জাহাজ চললে আমরাই বেশি উপকৃত হতাম।

সেন্টমার্টিন হোটেল মালিক সাধারণ সম্পাদক এমএ রহিম জিহাদী বলেন, পর্যটককে আমরা স্বাগতম জানাই। তবে দ্বীপে রাত যাপন করার পর্যটক কম। তেমন বুকিং নেই। আশা করি পরবর্তী ছুটির দিনে পর্যটকের ঢল নামবে।

সেন্টমার্টি ইউনিয়ন পরিযদের চেয়ারম্যন আলহাজ্ব নুর আহমদ বলেন, সেন্টমার্টিনে হাজারের বেশি পর্যটকের আগমন হয়েছে। জেটির জরাজীর্ন অবস্থা উপরের মহলকে বলা হয়েছে। নতুন জেটি নির্মান না হওয়া পর্যন্ত আমি মনে করি প্রচুর পরিমান টায়ার বেধে দিলে এবং নারিকেল গাছসহ নিম্নমান কাঠ ব্যাবহার না করে ভাল কাঠ দিয়ে জেটিতে শাঘ্রই সংস্কার দরকার। পর্যটকদের সুবিধারন জন্য যা প্রয়োজন সব কিছু করা হবে। একই সাথে পর্যটেকর নিরাপত্তার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপরতা অব্যাহত আছে।