এই রোগ সম্পর্কে নিজেও জানুন, অন্যকেও জানান। একটি সচেতনতায় পারে একটি জীবন বাঁচাতে।

তথ্য সংগ্রাহক : রাজা সূর্য খাঁ

সোরিয়াসিস ত্বকের একটি প্রদাহজনিত রোগ। এটি একটি জটিল রোগ। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে যে কোনো বয়সীরা এ রোগে আক্তান্ত হতে পারে। তবে ত্রিশোর্ধ্বরা বেশি আক্রান্ত হয়। এটি সংক্রামক রোগ নয়, কাজেই সংস্পর্শের মাধ্যমে ছড়ায় না। মানুষের ত্বকের কোষস্তর প্রতিনিয়ত মারা যায় এবং নতুন করে তৈরি হয়। সোরিয়াসিসে এই কোষ বৃদ্ধির হার অস্বাভাবিক হয়ে ওঠে। যেমন ত্বকের সবচেয়ে গভীরের স্তর থেকে নতুন কেরাটিনোসাইট কোষ ওপরের স্তরে আসতে স্বাভাবিকভাবে সময় নেয় ২৮ দিন, আর এ ক্ষেত্রে তা পাঁচ থেকে সাত দিন। কয়েক মিলিমিটার থেকে কয়েক সেন্টিমিটার জায়গাজুড়ে এই সমস্যা দেখা দেয়। পৃথিবীতে ১ থেকে ২ শতাংশ মানুষ এই রোগে আক্রান্ত।

খ্রিস্টীয় দ্বিতীয় শতকে গ্রিক দার্শনিক সেলসাস প্রথম এই রোগের বর্ণনা দেন। এর আগে সোরিয়াসিস ও কুষ্ঠরোগকে একই রোগ বলে ধারণা করা হতো।

সরাসরি সূর্যালোক ও শুষ্ক ত্বক সোরিয়াসিস রোগীর জন্য ক্ষতিকর। তাই সরাসরি রোদে অনেকক্ষণ থাকা যাবে না। ত্বক আর্দ্র রাখতে নিয়মিত অলিভ ওয়েল, নারকেল তেল বা পেট্রোলিয়াম জেলি ব্যবহার করা যায়।

রোগের ধরন অনুযায়ী চিকিৎসা দেওয়া হয়ে থাকে, অল্প অংশ আক্রান্ত হলে বিভিন্ন ধরনের ওষুধ ক্রিম, লোশান, জেল ইত্যাদি ব্যবহারের জন্য দেওয়া হয়ে থাকে। বেশি অংশে ছড়িয়ে পড়লে মুখে খাবার ওষুধ, আলট্রাভায়োলেট থেরাপি, বায়োলজিক্যাল থেরাপির মাধ্যমে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এ রোগ কখনোই পুরোপুরি ভালো হয় না এবং কখনোই জীবনহানির কারণ হয় না। নিয়মিত চিকিৎসা গ্রহণের মাধ্যমে এটিকে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। রোগ যত পুরোনো হয়, ততই জটিল হতে থাকে। তাই দ্রুত শনাক্তকরণ ও চিকিৎসার আওতায় আসা জরুরি। আক্রান্ত ব্যক্তিকে আজীবন চিকিৎসা নিতে হয়। তাই নির্দিষ্ট সময় নিয়মিত চেকআপ এবং ওষুধের মাত্রা নির্ধারণ করা প্রয়োজন।

সোরিয়াসিস রোগের ক্ষেত্রে খাদ্য ও খাদ্যাভ্যাসের কোনো সরাসরি প্রভাব নেই। ডায়াবেটিসের মতো এই রোগে দীর্ঘমেয়াদে শরীরের অন্যান্য অঙ্গের ওপর প্রভাব আছে; যেমন আর্থ্রাইটিস, হৃদরোগ, লিভারের রোগ, রক্তে স্নেহজাতীয় পদার্থের ভারসাম্যহীনতা ইত্যাদি। রোগীর মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর এই রোগের মারাত্মক প্রভাব রয়েছে।

প্রচারে – Social Awareness & Development (SAD)

ছবি :সংগৃহিত