ডেস্ক নিউজ:

ভবিষ্যতে আর এমন ভুল না করার শর্তে ক্ষমা পাচ্ছেন উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীরা। এ সংক্রান্ত চিঠি প্রস্তুত করা হচ্ছে। বিদ্রোহীদের কারণ দর্শানো চিঠির জবাবের পরিপ্রেক্ষিতে তাদের ক্ষমা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলের হাই কমান্ড।

এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত আওয়ামী লীগের তিন জন নেতা বাংলা ট্রিবিউনকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, ‘কারণ দর্শানোর পর অভিযুক্তরা আত্মপক্ষ সমর্থন করে জবাব দিয়েছেন। এখন সেসব চিঠি দলীয় ফোরামে তুলে আলোচনা সাপেক্ষে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।’

এর আগে, দেশব্যাপী অনুষ্ঠিত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অনেক আওয়ামী লীগ নেতা দলের মনোনীত প্রার্থীর বিপক্ষে চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এতে ক্ষুব্ধ হন দলের নীতি-নির্ধারকরা। পরে দলের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে পদধারী বিদ্রোহীদের সাময়িক বহিষ্কার করে কেন স্থায়ীভাবে বহিস্কার করা হবে না মর্মে কারণ দর্শানোর সিদ্ধান্ত হয়। বিদ্রোহীরা কারণ দর্শানোর নোটিশ পেয়ে তার উত্তর দেন।

এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একজন নেতা বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, ‘প্রায় সবাই কারণ দর্শানোর জবাবের চিঠিতে ক্ষমা চেয়েছেন। দলে তাদের অতীত অবদানের কথা মাথায় রেখে সবাইকে ক্ষমা করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে সবাইকে কঠিনভাবে সতর্ক করা হবে।

উল্লেখ্য, সারাদেশের ৪৭৩টি উপজেলার মধ্যে নির্বাচন হওয়া (প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জেতা) ৩৫৮টি উপজেলায় আওয়ামী লীগের ১৩৬ জন বিদ্রোহী প্রার্থী বিজয়ী হয়। এছাড়া আরও শতাধিক উপজেলায় দল মনোনীত প্রার্থীর বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে হেরে যান আওয়ামী লীগের আরও অনেক নেতাকর্মী। বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে প্রায় দুইশ’ পঞ্চাশ জন এবং তাদের মদদদাতা হিসেবে প্রায় ৭০ জন মন্ত্রী-এমপি এবং দলের নানা পদে থাকা প্রায় ৬০০ জনের বিরুদ্ধে কেন্দ্রে অভিযোগ করা হয়।

এর পরিপ্রেক্ষিতে ৫ এপ্রিল দলের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, যারা উপজেলা নির্বাচনে দল মনোনীত প্রার্থীর বিরোধিতা করেছেন, বিদ্রোহীদের পক্ষ নিয়েছেন, তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সিদ্ধান্ত হয় যে, যেসব এমপি-মন্ত্রী নৌকার বিরোধিতা করেছেন বা করবেন, তাদের আগামীতে আর নৌকার মনোনয়ন দেওয়া হবে না।

১২ জুলাই অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে ‘বিদ্রোহী’ ও তাদের মদদদাতাদের বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত হয়। দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিদ্রোহীদের প্রথমে বহিষ্কার ও পরে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়ার নির্দেশ দেন।